ইবি প্রতিনিধি : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) উন্নয়ন অধ্যয়ন (ডিএস) বিভাগের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলাকালে শিক্ষককে লাঞ্ছনা ও ক্লাসরুম সংকটের প্রতিবাদে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা। এসময় ‘ক্লাসরুম সংকট কেনো? প্রশাসন জবাব চাই,’ ‘প্রশাসনের প্রহসন, মানি না মানবো না,’ ‘ আমার শিক্ষক লাঞ্ছিত কেনো? প্রশাসন জবাব চাই,’ সহ বিভিন্ন স্লোগান এবং প্ল্যাকার্ড নিয়ে অবস্থান করতে দেখা যায় তাদের।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেগা প্রকল্পের অংশ রবীন্দ্র নজরুল কলা ভবন সম্প্রসারণ কার্যক্রম পরিদর্শনে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোঃ আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন সহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা। এসময় রবীন্দ্র নজরুল কলা ভবনের আংশিক কাজ বাকি থাকায় বিভাগের সবাইকে আগামী ১ ঘন্টার জন্য বের হয়ে যেতে বলা হয়। এসময় অবস্থানরত শিক্ষক লাঞ্ছনার অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
এর প্রতিবাদে দুপুর ২ টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন বিভাগের প্রায় চার শতাধিক শিক্ষার্থী। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে আসলে তোপের মুখে পড়ে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগটি ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করলে ৬ বছর পেরিয়ে গেলেও একটি মাত্র ক্লাসরুমে ক্লাস করে আসছিলো বিভাগটি। ফলে সময়মতো ক্লাস, পরীক্ষা নিতে না পারায় সেশন জটের সম্মুখীন হয় বিভাগটি।
উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগে ২১-২২ বর্ষের শিক্ষার্থী জেসিয়া বলেন ‘এই হাফিজ এইদিকে আসো, এই তালার চাবি কই পেয়েছো? তোমাকে ৭ বছর যাবৎ চিনি। তুমি কি করতে পারো করো। এক ঘন্টার মধ্যেই তালা খোলে দাও এবং রুম ফাঁকা করো এভাবেই কথা বলেন স্যারের সাথে। তখন আমাদের পরীক্ষা শুরুর মাত্র একঘন্টা হয়েছে। আমাদের সামনে স্যারকে কেন এইভাবে অপমান করা হয়েছে? বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট জবাব চাই।’
অন্য শিক্ষার্থী ইয়াশ রোহান বলেন ‘আমরা ৫ম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ইসলামীক স্টাডিজ পরীক্ষা দিচ্ছিলাম। এমন সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে ভিসি স্যার সহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক আমাদের ক্লাস রুমের দরজায় ধাক্কা দিয়ে ঢুকে পড়েন এবং আমাদের সামনেই পরিক্ষার হলে দায়িত্বরত স্যারকে লাঞ্চিত করেন এবং এক ঘন্টার মধ্যেই রুম ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেন।’
উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক হাফিজুর রহমান বলেন, আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। আমি এই বিষয়ে এখন কিছু বলতে চাচ্ছিনা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড মোঃ আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া বলেন, আমাদের মেগা প্রকল্পের কাজ এখনো চলমান আছে। আগামী ৩ মাসের মধ্যেই আমাদের এই ভবনের কাজ পুরোপুরি শেষ হয়ে যাবে। তারপর ক্লাসরুমের কোনো সংকট থাকবে না। ক্লাসরুমের কাজ সম্পন্ন হলে তো তারাই পাবে এই কক্ষগুলো।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন,আমি আগামীকাল দুপুর ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডীন, বিভাগের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের নিয়ে মিটিং কল করেছি। তাদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে এর সমাধান করা হবে। লাঞ্ছনার বিষয়ে উপাচার্য বলেন, আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম। এখানে পরীক্ষা চলমান ছিলো দায়িত্বশীল স্যারের সাথে ক্লাসরুমের বাইরে আলোচনা করা হয়। এখানে শিক্ষকদের কোনোপ্রকার লাঞ্ছনার ঘটনা ঘটেনি।