ইবি প্রতিনিধি : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) প্রতিষ্ঠার চার দশক পর প্রথমবারের মতো স্নাতক (সম্মান) পর্যায়ের ৩৩ শিক্ষার্থীকে ডিনস অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে। ৮ টি অনুষদের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের মোট ৩৩ জন শিক্ষার্থীকে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়। অনুষদের কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জন করায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাঁদের পুরস্কৃত করেছে। এসময় প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ক্রেস্ট,সনদ এবং নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ প্রদান করা হয়।
রবিবার (১০ মার্চ) বেলা ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে শিক্ষার্থীদের এই সম্মাননা প্রদান করা হয়। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোঃ আলমগীর হোসেন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ মাহবুবুর রহমান। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোস্তফা জামাল হ্যাপি।
স্নাতক (সম্মান) পর্যায়ে ডীন’স অ্যাওয়ার্ড পাওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ থেকে অর্থনীতি বিভাগের জুয়েল রানা, সুপ্রিতী দত্ত প্রমা ও শামীম হোসেন এবং উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের নাফিউল মুইদ। ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ইমতিয়াজ আহমেদ, জান্নাতুল ফেরদৌস মিম, ইসমাইল হোসেন ও মোঃ মাহমুদুল হাসান, ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগের তানভীর আহমেদ তন্ময় ও মুজতবা রাফিদ হাসান এবং হিসাববিজ্ঞান বিভাগের মোঃ আলাউদ্দিন। ধর্মতত্ত্ব অনুষদ থেকে আল কুরআন বিভাগের মোঃ রাকিবুল্লাহ ও জামিলুর রহমান এবং আল হাদিস বিভাগের মোঃ কামরুল হাসান ও আনিসুর রহমান। আইন অনুষদ থেকে আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের মোঃ জামাল উদ্দিন, শারমিন আক্তার, মোঃ আরিফুল ইসলাম ও মোঃ আবদুল হালিম। প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ থেকে ফলিত রসায়ন বিভাগের মোঃ খালিদ হোসাইন ও সঙ্গীতা রানী এবং ইইই বিভাগ থেকে সৌরভ শিকদার। জীববিজ্ঞান অনুষদের ফার্মেসি বিভাগের আফিয়া ইবনাত শিমকি ও সজনী খাতুন এবং বায়োটেকনোলজি বিভাগের আবু রেজা এবং ইবনে আসমা কেয়া। বিজ্ঞান অনুষদ থেকে গণিত বিভাগের আফিদা সুলতানা, পরিসংখ্যান বিভাগের জীবন কর্মকার এবং ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের উম্মে হাবিবা তিথি ও মাহমুদা হোসাইন। কলা অনুষদ থেকে অ্যাওয়ার্ড পান আরবী ভাষা সাহিত্য বিভাগ থেকে মোঃ মাহমুদুল হাসান আইসাল, মোঃ আরিফুর রহমান এবং মোঃ শাহিন হাসান।
ডিন’স লিস্ট অ্যাওয়ার্ড কমিটির আহ্বায়ক এবং অনুষ্ঠানের সভাপতি অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া বলেন, আমি আজ অত্যান্ত আনন্দিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর প্রথম আমরা এমন আয়োজন করতে পেরেছি। বর্তমান প্রশাসন শুধু আজকের জন্য নয় ভবিষ্যতেও যেনো এমব প্রোগ্রাম হয় সেই নীতিমালা প্রণয়ন করার ব্যবস্থা করেছে। এই অ্যাওয়ার্ডটি শুধু বিভাগের সেরাদের জন্য নয় অনুষদের একাধিক বিভাগের সবার সেরা। যারা আজকের এই স্বীকৃতি পেলে তারা সবাই এই স্বীকৃতির প্রতিদান দেশব্যাপী রাখবে বলে আমি আশাবাদী।
ডিন’স অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী আফিয়া ইবনাত শিমকী বলেন, প্রতিটি মানুষই তার মেধার স্বীকৃতি চায়। আমি আজ মহান আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ এই স্বীকৃতি পেয়ে। মা-বাবার পর যে আমাকে সবচেয়ে বেশী সাহস যুগিয়েছে তিনি আমার বিভাগের সভাপতি অর্ঘ্য স্যার। আমি চাই আমাদের এই ধারা পরবর্তীতেও আমাদের বিভাগের জুনিয়রদের মাধ্যমে বজায় থাকবে।
সম্মাননা প্রাপ্ত মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ আহমেদ ইমন বলেন, ডিন’স অ্যাওয়ার্ড প্রদানের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো মেধাবী শিক্ষার্থীদের স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে যা অন্য শিক্ষার্থীদের একাডেমিক পড়াশোনার প্রতি আরো উদ্বুদ্ধ করবে এবং ভালো ফলাফল করতে অনুপ্রেরণা যোগাবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ফুল ফুটুক আর না ফুটুক আজ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বসন্ত। যারা অ্যাওয়ার্ড পেলো তাদের অ্যাওয়ার্ড দেই আর নাই দেই তারাই সেরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটো পোগ্রামই গুরুত্বপূর্ণ। একটি কনভোকেশন পোগ্রাম এবং অন্যটি আজকের এই ডিন’স অ্যাওয়ার্ড। আজকের এই দিনে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি তাদের জন্ম দেয়া বাবা মায়েদের অভিনন্দন জানাই। আমরা ভালো মানুষ হবো, মার্জিত মানুষ হবো এই ধরনের অন্তঃপ্রনোদনাগুলো একজন মানুষকে সুনাগরিক করে তুলে।
তিনি আরও বলেন, এই সম্মাননার মধ্য দিয়ে আপনাদের মধ্যে সুন্দর দেশ গড়ার জন্য যে আত্ন তাড়না সেটি তৈরী হলেই আজকের দিন স্বার্থক হবে। মেধার সাথে যদি সভ্যতা যোগ করা না যায় তবে সেই পৃথিবীর সবথেকে বড় অসহায়।