The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪

দূর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিকদের ব্যানার ছিড়লেন জবি কর্মকর্তা

জবি প্রতিনিধি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নতুন ক্যাম্পাসে অবৈধভাবে জমি দখল করে ব্যক্তিগতভাবে জমি ইজারা দেয়া, মাছ চাষ, সবজিসহ বিভিন্ম চাষাবাদ ও দূর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করায় ক্ষোভে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রেসক্লাবে কর্মরত সাংবাদিকদের ব্যানার ছিঁড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির এক কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তার নাম কামাল হোসেন। ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদের এই কর্মকর্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাবশালী বলয়ের এই কর্মকর্তা কামাল হোসেন বিভিন্ন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাৎ, সম্পত্তি আত্মসাৎ, অর্থের বিনিময়ে সম্পত্তি দখলদারদের দিয়ে দেয়া, বিশ্ববিদ্যালয়টির নতুন ক্যাম্পাসে অবৈধভাবে জমি দখল করে ইজারা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করা, নতুন ক্যাম্পাসের অধিগ্রহণকৃত জমি নিয়ে কারসাজি, নতুন ক্যাম্পাসের গাছ বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ, নিজেদের অর্থ-লুটের মহোৎসব ধরে রাখতে নতুন ক্যাম্পাসের কাজ আটকে রাখাসহ নানান অপকর্মে জড়িত। তার এসব অপকর্ম ও দূর্নীতি নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবে কর্মরত সাংবাদিকরা তথ্য-প্রমাণ সহকারে বিভিন্ম জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও জনপ্রিয় অনলাইন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করে আসছেন।

তার বিরুদ্ধে করা এসব সংবাদের ক্ষোভ থেকেই সম্পত্তি কর্মকর্তা কামাল হোসেন দীর্ঘদিন থেকেই সাংবাদিকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে আসছেন। বিভিন্ন মাধ্যমে তিনি সংবাদ প্রকাশ করা সাংবাদিকদের হুমকিও দিয়ে আসছেন। গত ২০ নভেম্বর প্রতিদিনের বাংলাদেশ পত্রিকায় তথ্য প্রমাণসহ তার ও তার সহযোগী কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি আব্দুল কাদের ওরফে কাজী মনিরের বিরুদ্ধে ‘প্রকল্পের কাজ আটকে রেখে চলছে চাষাবাদ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর তিনি ও তার সহযোগীরা সাংবাদিকদের ওপর আরো বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। প্রতিবেদনকারী প্রতিদিনের বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক ইউছুব ওসমানসহ প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের তিনি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।

সংবাদ প্রকাশের পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন মহলে প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে সাংবাদিকদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিতে থাকেন তারা। এরই মধ্যে মঙ্গলবার (৫ মার্চ) সকালে সাংবাদিকদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাশ ভবনে প্রেসক্লাবের অফিসের সামনে টানানো প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন কামাল হোসেন ও তার সহযোগীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে সকলের সামনে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, সাংবাদিকদের সব নিউজেই তার নাম দেয়া হয়।

খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের ব্যানার এবং অবকাশ ভবনের সব ব্যানার সরিয়ে ছিঁড়ে ফেলতে উপাচার্য নির্দেশ দিয়েছেন বলে তিনি গুজব ছড়ান। সাংবাদিকরা তার কাছে ব্যানার ছিঁড়ার কারণ জানতে চাইলেও তিনি একই কথা বলেন। তবে তার এই বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম।

এবিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সম্পত্তি কর্মকর্তা ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার কামাল হোসেন বলেন, ভিসি ম্যাম সব সরানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। তাই সরিয়েছিলাম। অবকাশ ভবনের ব্যানারগুলো সরানো ভুল হয়েছে। আমি তখন ওখানে ছিলাম না। নিরাপত্তাকর্মীরা সরিয়েছে। সাংবাদিকদের ব্যানার সরিয়ে ছিঁড়ে ফেলা ভুল হয়েছে। আমি এটা ঠিক করে দেবো।

এবিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, ‘আমি বাণী অর্চনার নষ্ট হয়ে যাওয়া ব্যানার-পোস্টারগুলো সরাতে বলেছিলাম। কিন্তু সে (সম্পত্তি কর্মকর্তা কামাল হোসেন) অবকাশ ভবনের ব্যানারও সরিয়ে ছিঁড়ে ফেলেছে বলে শুনলাম। আমি তাকে ডেকে নিয়ে কথা বলেছি। তাকে বলেছি, তুমি এটা ঠিক করে দিবা। সে ঠিক করে দিবে বলেছে।’

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.