কালিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নে অবস্থিত ৫৯নং পারুলগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জমিদাতা সদস্য মনোনয়নে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। ব্যক্তিগত পছন্দকে প্রাধান্য দিয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি সাঈদ মেহেদীর নেতৃত্বে শিক্ষা কমিটির সভায় একতরফা ভাবে এই মনোনয়ন চাপিয়ে দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, পারুলগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪২ শতক জামি দান করেন দক্ষিণ৷ শ্রীপুর কুশলিয়া স্কুল এন্ড কলেজের অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষক জিএম কওছার আলী। এছাড়াও জিএম কওছার আলীর পিতা গহর আলী গাজী ও বড় ভাই আতিয়ার রহমান অপর একটি দলিলে ৫০ শতক জামি দান করেন। এককভাবে বেশী জমি দান করার সুবাদে ওই স্কুলের প্রতিষ্ঠার পর থেকে দাতা সদস্যভুক্ত ছিলেন জিএম কওছার আলী।
প্রায় ৫ বছর পূর্বে শারীরিক অসুস্থতার কারণে জিএম কওছার আলী তার স্থলে জ্যেষ্ঠপুত্র কালিগঞ্জ রোকেয়া মনসুর মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক নিয়াজ কওছার তুহিনকে দাতা সদস্যভুক্ত করার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন।
সে অনুযায়ী ৫ বছর যাবত দাতা সদস্য ছিলেন নিয়াজ কওছার তুহিন। কিন্তু চলতি বছর বিদ্যালয়ের নতুন ম্যানেজিং কমিটি গঠনের জন্য তফসিল ঘোষণা করলে দাতা সদস্য হওয়ার জন্য আবেদন করেন মরহুম আতিয়ার রহমানের ছেলে হাসানুর রহমান। আতিয়ার রহমান এক স্ত্রী, ৬ ছেলে ও ৪ মেয়ে রেখে মৃত্যুবরণ করায় উক্ত হাসানুর রহমানের ওয়ারেশসূত্রে প্রাপ্ত জমির পরিমাণ দাড়ায় ৩ শতকেরও কম। জমিদাতা সদস্য হিসেবে ৪২ শতকের মালিকানায় নিয়াজ কওছার তুহিন ও ৩ শতকের মালিকানায় হাসানুর রহমান আবেদন করার পর হাসানুর রহমানকে দাতা সদস্য হিসেবে মনোনীত করার জন্য স্থানীয় ইউপি সদস্য আফছার উদ্দীন তার রাজনৈতিক প্রভাব প্রতিপত্তি খাটিয়ে জোর তৎপরতা শুরু করেন। এর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সোমবার (৪ মার্চ) বেলা ১১ টায় উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি সাঈদ মেহেদীর সভাপতিত্বে এক সভায় স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে নিয়াজ কওছার তুহিনকে বঞ্চিত করে হাসানুর রহমানকে জমিদাতা হিসেবে মনোনয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
এব্যাপারে নিয়াজ কওছার তুহিন বলেন, আমার পিতা স্কুলের স্বার্থে ৪২ শতক জমি দান করেছিলেন।
এছাড়াও আমার দাদা মরহুম গহর আলী ২৫ শতক জমি দান করেন। এর প্রেক্ষিতে আমার পিতা স্কুল প্রতিষ্ঠার পর থেকে জমিদাতা সদস্য ছিলেন এবং সভাপতির দায়িত্বও পালন করে স্কুলের শিক্ষাকার্যক্রম সুন্দরভাবে পরিচালনায় সহায়তা করেন। আমিও বিগত ১ মেয়াদে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। কিন্তু এবার দলীয় বিবেচনায় ব্যক্তিস্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে জমিদাতা সদস্য হিসেবে আমার পরিবর্তে হাসানুর রহমানকে মনোনয়ন দিয়েছেন। জমিদাতা সদস্য মনোনয়নে এই অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি বিষয়টির প্রতিকারের জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন সহকারী অধ্যাপক নিয়াজ কওছার তুহিন।অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি সাঈদ মেহেদীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে সংযোগ পাওয়া যায়নি।