ইবি প্রতিনিধি : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ফলিত বিজ্ঞান ভবন এবং অনুষদ ভবনের মাঝের বটতলা প্রাঙ্গনে ২৪ বছর পুরোনো তিনটি গাছ কেটে বৈশাখী মঞ্চ নামে একটি মুক্তমঞ্চ নির্মানের পক্ষে বিপক্ষে ভিন্নমত তৈরি হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। গতকাল দুপুরে হুট করেই ক্যাম্পাসের তিনটি গাছ কেটে ফেলার পরই তা নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানাতে থাকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন মহল। অনেকেই মুক্তমঞ্চ তৈরির পক্ষে থাকলেও গাছ কাটার বিপক্ষে মত দিয়েছেন বেশীর ভাগ ছাত্র ও শিক্ষক।
এ ঘটনায় বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও পরিবেশবাদী সংগঠন গুলো মানববন্ধন এবং প্ল্যাকার্ড নিয়ে প্রতিবাদ জানায়। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টিকে এতো কঠিন ভাবে বিবেচনা না করে ক্যাম্পাসে প্রগতিশীলতার চর্চা এবং মুক্তমনা বাড়াতে সংস্কৃতি বিষয়ক জিনিস গুলো আরো বড় পরিসরে তুলে ধরতেই এমন সিদ্ধান্ত বলে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। প্রশাসন মনে করে বৃহৎ উন্নয়ন স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাছ কাটলে কোনো ক্ষতি হওয়ার কথা নয়। পরবর্তীতে নতুন গাছ লাগালে পরিবেশ আরও সুন্দর হবে।
এ ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়নের জন্য গাছ কাটা লাগতেই পারে। তিনটি গাছের মধ্যে দুইটিই ছিলো অর্ধমৃত। একটি গাছ কাটার বিপরীতে আমরা ক্যাম্পাসে অনেকগুলো গাছ লাগিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্ত প্রগতিশীলতা চর্চার জন্য মুক্ত মঞ্চ গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া মুক্তমঞ্চের পাশে যদি গাছ থাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সময় মঞ্চের মধ্যে গাছের ডালপালা ভেঙ্গে পড়ার আশঙ্কা থাকে। আমরা মঞ্চের নির্মাণ শেষে আরও ৫০০ গাছ রোপন করবো। আমাদের প্লানিং রয়েছে এবং সে অনুযায়ীই আমরা এগোচ্ছি।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোঃ বাকি বিল্লাহ বলেন, যারা প্রতিবাদ করতেছে তারা শুধু গাছ কাঁটার জন্য করে না, একটা ইস্যু নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক চর্চা নির্মূল করার চেষ্টা করে। এর নেপথ্যে কারা কাজ করতেছে আমাদের ধারণা আছে। যারা ক্ষতি হবে বলে মনে করছে এবং দুই পাশের একাডেমিক ভবনে পড়াশোনার ক্ষতি হবে বলে দাবি করতেছে তাদেরকে বলছি ২৪ ঘণ্টা তো চর্চা হয় না। বিশেষ দিবস বা উৎসব উপলক্ষে হয়ে থাকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌলশী কে এম শরীফ উদ্দীন বলেন, স্থাপত্য তৈরি করতে গেলে গাছ কাটার প্রয়োজন পড়েই। মুক্তমঞ্চের বিষয়ে আমাদের জানালে আমরা গাছ কাটার প্রশাসনকে জানায়। তখন প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন, শিক্ষক সমিতি, এবং সংশ্লিষ্ট সবার সাথে কথা বলেই গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নেয়। কারণ মঞ্চের পাশে গাছ থাকলে শিকড়গুলো কারণে মঞ্চে ফাটল তৈরি হতে পারে।