The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় আন্তর্জাতিক কনফারেন্স শুরু

শাকিল বাবু, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ টেকসই উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে মানাবিক মূল্যবোধসম্পন্ন টেকসই সভ্যতা বির্নিমাণের আহ্বান জানিয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলন: স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট প্রজন্ম গড়তে মানবিক মূল্যবোধ, সৃজনশীলতা, আবিষ্কারমনস্কতা ও প্রগতি শীর্ষক কনফারেন্স শুরু হয়েছে। সম্মেলনে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মধ্য দিয়ে নবসৃষ্ট জ্ঞানকে সমাজ ও দেশের কল্যাণে কাজে লাগানোর তাগিদও দেয়া হয়েছে।

সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের তৃতীয় তলায় কনফান্সের শুভ উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ও সদস্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর। দুইদিনব্যাপী অনুষ্ঠিতব্য এই কনফারেন্সে যুক্তরাষ্ট্র, ইন্দোনেশিয়া, ভারতসহ দেশের নানা জায়গা থেকে দেশবরেণ্য শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও গবেষকরা অংশগ্রহণ করছেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে কনফারেন্সের চিফ প্যাট্রন ও নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে আমি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করার জন্য শিক্ষা, গবেষণা, উন্নয়ন- কে মোটো হিসেবে ঘোষণা করেছিলাম। যখন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব নিই তখন ইউজিসির র‌্যাংকিংয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ছিল ৩৯। দু’বছরে সেই ধাপের উন্নতি হয়েছে এবং সেটি এখন ১৪। এই উন্নয়নে গবেষণার ভূমিকা আছে। গবেষণা শুধুই ঘরে বসে করার বিষয় নয়। এটি অন্যের সঙ্গে ভাগাভাগিও দরকার। ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স গবেষণার মান বৃদ্ধি ও অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে স্কলারদের ভিউজ একচেঞ্জের জন্য দারুণ এক আয়োজন। নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতি বছর কমপক্ষে একটি ইন্টারন্যাশানাল কনফারেন্সের আয়োজন করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে লক্ষ্যে এবার তৃতীয় বারের মতো আন্তর্জাতিক কনফারেন্স আয়োজন করা হলো।

উপাচার্য আরও বলেন, গত বছর বিজ্ঞান, ব্যবসায় প্রশাসন ও আইন নিয়ে ইন্টারন্যাশানাল কনফারেন্স হয়েছিল। এবার মানবিকী, সামাজিক বিজ্ঞান ও চারুকলা নিয়ে হচ্ছে। বিজ্ঞান অনেক উন্নতি সাধন করেছে। সম্প্রতি নাসা মহাকাশে খুঁজে পেয়েছে নতুন ১৯টি ছায়াপথ। নতুন বিজনেস টেকনোলজির জন্য নতুন ব্যবসার দ্বার খুলে গেছে। কিন্তু এই বস্তুগত উন্নতিই একমাত্র উন্নতি নয়। নতুন আবিষ্কারের মাধ্যমে বর্তমান বিশ্বের সঙ্গে মানবিক মূল্যবোধের সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে। তাই এই ক্ষেত্রে নতুন চিন্তা ও গবেষণা অতি প্রয়োজন। চারুকলা, সমাজবিজ্ঞান ও মানবিক শাখায় তাই নতুন নতুন গবেষণা জরুরি। এই কনফারেন্সে এ সবক্ষেত্রে নতুন গবেষণার সূত্র উত্থাপিত হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ডাক দিয়েছেন। এই স্মার্ট বাংলাদেশ অবশ্যই মানবিক বাংলাদেশও। তাই উপযুক্ত গবেষণার মাধ্যমেও মানবিক স্মার্ট বাংলাদেশে আমরা যুক্ত হবে, ঘোষণা দেন উপাচার্য।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, আমরা চতুর্থ শিল্প বিল্পবের দিকে যাচ্ছি। এই শিল্প বিপ্লবের জন্য একদিকে যেমন প্রথাগত বিজ্ঞান চিন্তায় পরিবর্তন এসেছে তেমনি মানিবক মূল্যবোধ, সমাজিক বিজ্ঞান ও চারুকলা নিয়েও আমাদের ভাবতে হবে। উন্নয়নকে টেকসই করার পাশাপাশি মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন সভ্যতা গড়ে তোলার দিকে সবাইকে সচেষ্ট হতে হবে।

সম্মেলনের অন্যতম মূল আকর্ষণ ও রীবন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. পবিত্র সরকার বলেন, কোনো বিশ্ববিদ্যালয় যদি প্রান্তিক পর্যায়ে থাকে তবুও সেটা বিশ্ববিদ্যালয়। কেননা প্রান্তিক পর্যায়ে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবসৃষ্ট জ্ঞান দেশ, জাতি এমনকি বিশ্বের কল্যাণে ব্যবহার করা যেতে পারে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুন নতুন জ্ঞান সৃষ্টির দিকে মনোযোগ দিতে হবে ও সেই জ্ঞানকে সারাবিশ্বের সাথে ভাগ করে নিতে হবে।

অধিবেশনে ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেক্টোরাল সিস্টেম-এর বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর টানইয়েল বি. টাইসি পিএইচ.ডি বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সে যোগদিতে পেরে খুব গর্ব অনুভব করছি। একজন গবেষক হিসেবে কনফারেন্সের বিভিন্ন সেশনগুলোতে অংশ নেওয়ার জন্য আমি মুখিয়ে আছি।

দ্যা ইন্দোনেশিয়ান ইন্সটিটিউট অব দ্যা আর্টসের রেক্টর প্রফেসর ড. আই ওয়ান অ্যাড্রিয়ানা বলেন, আমি প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের এসেছি। প্রথমবারেই নজরুলের স্মৃতিধন্য ক্যাম্পাস নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে খুব আনন্দিত। আমি এই কনফারেন্সের সার্বিক সফলতা কামনা করি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই এত সুন্দর একটি আয়োজনের জন্য। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠানের প্রাতিষ্ঠানিক যোগযোগ তৈরিতে খুব আগ্রহী।

উদ্বোধনী অধিবেশনে আরও বক্তব্য দেন বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ট্রেজারার প্রফেসর ড. আতাউর রহমান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. নজরুল ইসলাম, কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মুশাররাত শবনম, চারুকলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. তপন কুমার সরকার ও রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর। স্বাগত বক্তব্য দেন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ড. জিল্লুর রহমান পল।

উল্লেখ্য, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় আন্তর্জাতিক কনফারেন্স নিয়ে ইতোমধ্যে শিক্ষাবিদ-গবেষকদের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। উদ্বোধনী অধিবেশনের পর ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত প্যারালাল সেশনের মধ্যদিয়ে গবেষকরা তাদের প্রবন্ধ উপস্থাপন শুরু করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালগুলো ও বিদেশ থেকে সর্বমোট ২৫০টি পেপার সম্মেলনে উপস্থাপনের জন্য জমা পড়ে। তারমধ্যে ৯৯টি পেপার গৃহীত হয়েছে। ভারত ও সোমালিয়া থেকেই ১৭ টি পেপার গৃহীত হয়েছে।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.