The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪

হাইকোর্টের রায়ে হতাশ, ক্ষোভ ঝেড়ে যা বললেন জাপানি মা

জাপানি তিন শিশুর মধ্যে দুজন তার মা ও একজন বাবার কাছে থাকবে- হাইকোর্টের দেওয়া এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিমকোর্টে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন জাপানি মা নাকানো এরিকো।

মঙ্গলবার বিচারপতি মামনুন রহমানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চের এ সংক্রান্ত আপিল আবেদন আংশিক মঞ্জুর করে এই রায় ঘোষণার পর তিন মেয়েকে নিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন জাপানি মা।

জাপানি মা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি এতে অত্যন্ত হতাশ। আজকের রায়ের বিরুদ্ধে আমরা সুপ্রিমকোর্টে আপিল করব, শুধু শিশুদের মঙ্গলের জন্য। এটি পেরেন্টাল শিশু অপহরণ, এটি শিশু নির্যাতন। শুধু তাই নয়, এটি পারিবারিক নির্যাতন।’

রায়ে বলা হয়েছে, প্রথম ও তৃতীয় মেয়েকে নিয়ে জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকো বাংলাদেশে বা যেকোনো দেশে বসবাস করতে পারবেন। তবে বাবা সন্তানদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করার সুযোগ পাবেন। একইভাবে দ্বিতীয় মেয়ে লাইলা লিনা ইমরান শরিফের কাছে থাকবেন। তবে জাপানি মা দ্বিতীয় মেয়ের সঙ্গে দেখার সুযোগ পাবেন।

মেয়েদের জন্য গত তিন বছর ধরে জাপানে চাকরি রেখে বাংলাদেশে থাকার বিষয় তুলে ধরে নাকানো এরিকো বলেন, ‘আমি আমার চাকরি হারিয়েছি। আমি জাপানের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কাজ করতাম। কিন্তু আমি আমার চাকরি হারিয়েছি। শুধু আমার মেয়েদের জন্য। এমনকি আমার আয় দিয়ে জীবনযাপন করতাম। ইমরান কখনোই অধিকারের জায়গা থেকে মেয়েদের জন্য কোনো একটি পেনিও (অর্থ) দেয়নি। আমি মেয়েদের পড়াশোনা, আবাসন, খাদ্যসহ সব ব্যয়ভার বহন করতাম, আমার নিজের কথা ভুলে গিয়ে। আমি আমার জীবন নিয়ে চিন্তা করতাম না। কিন্তু, এটা কি বাংলাদেশে স্বাভাবিক? আপনাদেরও (সাংবাদিক) সন্তান আছে। আপনারা কি সন্তানের পড়াশোনার খরচ দেন না? নাকি সন্তানের মা দেন! কিন্তু ইমরান কোনো খরচই দিত না।’

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি এখানে কোনো ধরনের কাজ ছাড়া তিন বছর ধরে রয়েছি। এসব কী! এটা বাংলাদেশ থেকে কী ধরনের ট্রিটমেন্ট (আতিথেয়তা/আচরণ)। আমি কাজকে ভালোবাসি।’

উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ১১ জুলাই জাপানি আইন অনুসারে বিয়ে করেন নাকানো এরিকো ও শরীফ ইমরান। বিয়ের পর তারা টোকিওতে বসবাস শুরু করেন। ১২ বছরের সংসারে তাদের তিনটি মেয়ে সন্তান জন্মগ্রহণ করে।

তারা হলো- জেসমিন মালিকা (১১), লাইলা লিনা (১০) এবং সানিয়া হেনা (৭)। এই তিনজন টোকিওর চফো সিটিতে অবস্থিত আমেরিকান স্কুল ইন জাপানের (এএসজেআই) শিক্ষার্থী ছিল। আর মা এরিকো পেশায় একজন চিকিৎসক।

২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি শরীফ ইমরান বিয়ে বিচ্ছেদের আবেদন করেন।

আদালতের রায় অমান্য করে জাপানি মা নাকানো এরিকোও দ্বিতীয়বারের মতো তার বড় মেয়ে জেসমিন মালিকাকে নিয়ে গত বছরের ৩১ জানুয়ারি রাতে বাংলাদেশ ত্যাগের চেষ্টা করেন। রাত পৌনে ১২টার দিকে তাদের শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দেয় ইমিগ্রেশন পুলিশ। এ ঘটনার পর একটি ভিডিওতে দেখা যায়, গুলশান থানা থেকে মেজো মেয়ে লায়লাকে তার মা নিতে চাইলে সে যেতে অপারগতা প্রকাশ করে। একপর্যায়ে সে টেবিলের নিচে গিয়ে লুকায়। পড়ে মা বড় মেয়েকে নিয়ে থানা ত্যাগ করেন।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.