বকেয়া টাকা চাওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্যসেন হলের ক্যান্টিন মালিককে মেরে দাড়ি ছিঁড়ে ফেলেছেন এক ছাত্রলীগ নেতা। অভিযুক্ত আরাফাত হোসাইন অভি সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
ক্যান্টিন মালিক ফাহিম হোসেন বলেন, ‘আরাফাত হোসাইন অভি গত পরশু খাবার নিতে এসেছিলেন। তখন পুরনো বকেয়া চেয়েছিলাম। গতকাল খাবার নিতে আসেননি। আজ আবার এলে আমি বকেয়া টাকা চাইলাম। খাতায় কিছু টাকা লেখা আছে। লেখা ছাড়াও কিছু বিল ছিল। ওনাকে বললাম, আগের টাকাসহ লিখে রাখব? উনি বললেন, ‘রাখ’। এই বলে ওনার সঙ্গে আমার কথা শেষ হলো।’
তিনি বলেন, পরে আমি ম্যানেজারকে বললাম, ছয়টি খাবারের টাকাসহ তুলে রাখ। পরবর্তীতে সে আর বাকি খাবে না। তিনি চলে যাওয়ার দুই-তিন মিনিট পর আবার আসেন। এসে আমাকে ক্যাশ টেবিল থেকে বের করে আনেন। বলেন, ‘কার সাথে কীভাবে কথা বলতে হয় জানিস না?’ এটা বলেই টান দিয়ে আমার দাড়ি তুলে ফেলেন। আমাকে থাপ্পর, লাত্থি মারেন। আমার ক্যান্টিনের ম্যানেজার মনিরকেও মারধর করেন। ক্যাশ বাক্স ফেলে দেন। গালাগালি করেন। ওনাকে চার-পাঁচজনও ধরে রাখতে পারছিল না। বিষয়টি নিয়ে হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন ক্যান্টিন মালিক ফাহিম হোসেন।
অভিযুক্ত আরাফাত বলেন, ‘আমি দুপুরে খাবার খেতে গেলে ক্যান্টিন মালিক বকেয়ার টাকা চায়। আমি বললাম, আমার বিকাশে সমস্যা হয়েছে, টাকা তুলতে পারছি না।’ আমি প্রমাণও দেখিয়েছিলাম। পরে সেখান থেকে বের হওয়ার সময় তিনি ম্যানেজারকে বললেন, আমাকে যেন নেক্সট টাইম খাবার না দেয়।
এটা শুনে আমি ক্যান্টিন মালিককে বললাম, ‘আপনি এটা কেমন কথা বললেন, সমস্যা তো থাকতে পারে!’ এরপর হঠাৎ করে তিনি আমাকে ধাক্কা মারেন, আমিও তার কলার টেনে ধরি। ধাক্কাধাক্কির মধ্যে তার দাঁড়িতে আমার হাত লেগে ছিঁড়ে যায়। তিনি আমাকে প্রথমে ধাক্কা দেন। আমি কোনো মারধর করিনি, বলেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা আরাফাত।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন ভূইয়া বলেন, আমি ক্যান্টিন মালিককে ঘটনা নিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। আমাদের তিনজন হাউজ টিউটর এবং ক্যান্টিন পরিচালনার সাথে যুক্ত আরেকজনসহ চারজনের একটি তদন্ত কমিটি করে দিচ্ছি। তারা তিনদিনের ভেতর রিপোর্ট জমা দেবে। আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।