জবি প্রতিনিধি: অমর একুশে বইমেলায় স্মার্টফোন আসক্তির ক্ষতিকর দিক এবং এর প্রতিকারে করণীয় সম্পর্কিত বই “স্মার্টফোন আসক্তিঃ প্রযুক্তি ও জীবনের ভারসাম্যহীনতা'” প্রকাশ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ফারহানা জামান।
বর্তমান প্রজন্মকে সচেতন করে তুলতে বইটিতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন ড.ফারহানা। বইটি প্রকাশ করেছে আগামী প্রকাশনী। আগামী প্রকাশনীর ২৩ নং প্যাভিলিয়ন স্টলে পাওয়া যাবে বইটি, বইটির দাম ৪০০ টাকা । এছাড়াও রকমারীতে পাওয়া যাবে ২৫% ছাড়ে।
অতিমারি কোভিড-১৯ সারাবিশ্বের মানুষের জীবনযাত্রায় এনে দিয়েছে ব্যাপক পরিবর্তন। আতংকিত ও শঙ্কিত জীবনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন হয়ে উঠেছিল ভয়াবহ রকমের অনিশ্চিত। এমতাবস্থায় মুষড়ে পড়া শিক্ষাব্যবস্থার চাকা ঘুরাতে সক্ষম হয় অনলাইন ক্লাসরুম। এই অনলাইন ক্লাসের একটি অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ হলো স্মার্টফোন। স্মার্টফোন শিক্ষার্থীদের জীবনে এনে দেয় গতি, উন্মোচন করে নতুন দিগন্ত। কিন্তু নতুন এই দিগন্তে বিচরণ করতে গিয়ে অনেক শিক্ষার্থী হয়ে পড়েন স্মার্টফোনে আসক্ত। পড়ালেখায় গতি এনে দিলেও স্মার্টফোনের প্রতি আসক্তি অনেক শিক্ষার্থীকে ঠেলে দিয়েছে অন্ধকারের অতল গহ্বরে।
‘স্মার্টফোন আসক্তিঃ প্রযুক্তি ও জীবনের ভারসাম্যহীনতা’ বইটিতে শিক্ষার্থীদের জীবনে স্মার্টফোনের নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে বিস্তর আলোচনা করা হয়েছে। সেই সাথে স্মার্টফোন আসক্তির সাথে সম্পৃক্ত নানাবিধ শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকি বিষয়ে রয়েছে গবেষণাধর্মী আলোচনা। বইটির শুরুতেই স্মার্টফোন আসক্তির কারণ ও লক্ষণ সুনিপুনভাবে তুলে ধরা হয়েছে যা পড়ে একজন ব্যক্তি সহজেই খুঁজে নিতে পারবেন তার মধ্যে বিদ্যমান লক্ষণসমূহ। এ ছাড়াও
রয়েছে স্মার্টফোন তথা ইন্টারনেট আসক্তির মাত্রা নিরূপণ স্কেল। স্কোরিং পদ্ধতি জেনে নিয়ে যে কেউ সহজেই মেপে নিতে পারবেন তার স্মার্টফোনে আসক্তির মাত্রা। অনেক সময় মা-বাবা নিজের অজান্তেই হয়ে ওঠেন সন্তানের স্মার্টফোন আসক্তির কারণ। এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পত্রপত্রিকার উদ্ধৃতি উল্লেখপূর্বক এবং তত্ত্বের আলোকে বিশ্লেষণধর্মী আলোচনা রয়েছে এই বইটির তৃতীয় অধ্যায়ে। উপরোক্ত বিষয়গুলোর পাশাপাশি ভোগবাদী সমাজ বিস্তারে স্মার্টফোনের অবদান নিয়ে বিশ্লেষণ রয়েছে বইটির শেষভাগে। সবশেষে স্মার্টফোন আসক্তি থেকে পরিত্রাণের উপায় ও কৌশল তুলে ধরে বর্তমান সময়ের এই ভয়াবহ সংকট নিরসনের চেষ্টা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য , ড. ফারহানা জামান ১৯৮১ সালের ২৫শে জানুয়ারি ঢাকা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। রত্নগর্ভা মায়ের চার সন্তানের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। বর্তমানে ফারহানা জামান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। ২০১৭ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট এন্ড ভালনারেবিলিটি স্টাডিজ থেকে পিএইচডি ডিগ্রি। অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সালভে রেজিনা ইউনিভার্সিটি থেকে এডভান্সড গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজ সম্পন্ন করেন। অধ্যাপনার পাশাপাশি তিনি সামাজিক নানা বিষয়ে গবেষণা করে থাকেন। তার গবেষণার বিষয়বস্তু মূলত দুর্যোগপ্রবণ সমাজকে ঘিরে আবর্তিত হয়। দেশি এবং বিদেশি জার্নালে তার লেখা বেশ কিছু আর্টিকেল প্রকাশিত হয়েছে। তার প্রকাশিত দুটি বই হলো “Sociology of Disastero: Concepts, Perspectives, and Theories” এবং “Social Dynamics of Salinity: Problems and Prospects in Coastal Bangladesh”। একাডেমিক বই এর পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা তুলে ধরে তিনি বেশ কিছু পাঠক জনপ্রিয় গল্পও লিখেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমান সময়ের ভয়াবহ সংকট ‘স্মার্টফোন আসক্তি’ এবং মানবজীবনে এর ক্ষতিকারক প্রভাব নিয়ে লেখার তাগিদ অনুভব করেন।