আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জমায়েত বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। ইহকালের শান্তি, পরকালের মাফিরাত এবং বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সুখ ও সমৃদ্ধি কামনা করে শেষ হয়েছে মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ জমায়েত বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাত।
রাজধানীর অদূরে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে আজ রোববার সকাল ৯টা ১ মিনিটে শুরু হওয়া এই আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন কয়েক লাখ মুসল্লি। মোনাজাত পরিচালনা করেন বাংলাদেশ তাবলীগ জামাতের শীর্ষ মুরব্বি এবং কাকরাইল জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফেজ মাওলানা জোবায়ের আহমেদ।
আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে টঙ্গী ময়দান ও আশপাশের এলাকায় স্থান না পেয়ে যে যেখানে পেরেছেন বসে পড়েন রাস্তায়, খোলা মাঠে বা বাসার ছাদে কিংবা যানবাহনেই। তবু তাদের কোনো আক্ষেপ নেই। আখেরি মোনাজাতে যে কোনোভাবে অংশ নিতে পেরেই তারা খুশি।
আখেরি মোনাজাত কেন্দ্র করে আজ রোববার ভোর থেকে দলে দলে যোগ দেন হাজার হাজার মানুষ। মধ্যরাত থেকে ইজতেমা ময়দান এলাকায় বাস চলাচল বন্ধ থাকায় হেঁটেই রওনা হন মুসল্লিরা। তবে ঢাকার দক্ষিণাঞ্চল থেকে মেট্রোরেলে করে ইজতেমা এলাকায় এসেছেন অনেকে। এতে অফিস সময়ে হাজার হাজার মানুষের ভিড় দেখা গেছে মেট্রোরেল স্টেশনগুলোতে।
মতিঝিল, প্রেসক্লাব, কারওয়ানবাজার, ফার্মগেট, মিরপুর ১০-এর মুসল্লিরা মেট্রোরেলে উঠে উত্তরা স্টেশনে আসেন। গতকাল মধ্য রাত থেকে গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস, চান্দনা চৌরাস্তা, বোর্ডবাজার, কলেজগেট, বিমানবন্দর, উত্তরা, আব্দুল্লাহপুর, কামারপাড়া ও টঙ্গী রেলস্টেশন এলাকা হয়ে ঢাকা ও গাজীপুরের আশপাশের জেলার মুসল্লিরা দলে দলে ইজতেমা ময়দান এলাকায় এসেছেন।
আখেরি মোনাজাতে মুসল্লিরা দেশ, জাতি ও মানবতার জন্য দোয়া করেছেন। বিশ্ব শান্তি ও কল্যাণ চেয়ে মহান আল্লাহর দরবারে আকুতি জানান। আখেরি মোনাজাত উপলক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়।
বিশ্ব ইজতেমা আয়োজনে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এবারের ইজতেমায় সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব-আমিরাত, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, চাদ, ইথিওপিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, ভারত, পাকিস্তান, রাশিয়া, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ আফ্রিকা, স্পেন, সুইজারল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, মালয়েশিয়া, মরক্কো, নেপাল, কেনিয়া, কুয়েত, কাতার, বাহরাইন, জর্দান ও দুবাইসহ বিশ্বের ৬১ দেশের প্রায় এক হাজার ৯০০ জন বিদেশি মুসল্লি অংশ নিয়েছেন।
আখেরি মোনাজাতের দিন আজ রোববার ফজরের নামাজের পর থেকেই শুরু হয় হেদায়েতি বয়ান। হেদায়েতি বয়ান করেন পাকিস্তানের মাওলানা জিয়াউল হক। এর পর কিছু সময় নসিহতমূলক আলোচনা করেন ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা।
এ বছরও দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমা। তাবলিগের আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বিরোধী পক্ষ মাওলানা জুবায়ের ইজতেমা করছেন ২, ৩ ও ৪ ফেব্রুয়ারি। এর চার দিন বিরতির পর সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা ইজতেমা করবেন ৯, ১০ ও ১১ ফেব্রুয়ারি।