টিআরসি রিপোর্টঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছাত্রাবাসগুলোর ডাইনিং ছাড়াও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁয় নিম্নমানের খাবার খেয়ে শিক্ষার্থীরা জন্ডিসসহ নানা ধরনের পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এক মাসে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী পেটের পীড়া ও জন্ডিসের লক্ষণ নিয়ে রাবি মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা নিয়েছেন। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি ও বিক্রি বন্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কমিটি গঠন করেছে।
রাবি মেডিকেল সেন্টারের পরিচালক ডা. তবিবুর রহমান শেখ জানান, জন্ডিস ও পেটের পীড়া পানিবাহিত রোগ। ছাত্রাবাসগুলোতে ওয়াসার সরবরাহ করা পানি নিরাপদ নয়। আবার ক্যাম্পাসের আনাচে-কানাচে যত্রতত্র খাবারের হোটেল গড়ে উঠেছে। ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন বাজারের হোটেলগুলোতেও নিয়মিত খাবার খায়। টিউবওয়েলের পানিও বিশুদ্ধ নয়। আক্রান্ত শিক্ষার্থীদের আমরা বলছি-তারা যেন বাইরে যত্রতত্র সাজিয়ে রাখা খাবার না গ্রহণ করেন। পানি পানের ক্ষেত্রেও আমরা সতর্ক হতে বলছি তাদের। তিনি আরও জানান, অনিরাপদ পানি ও অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করায় শিক্ষার্থীরা জন্ডিসে আক্রান্ত হচ্ছেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, শীতকালীন ছুটি শেষে ক্যাম্পাসে ফেরার পর অনেকে জন্ডিসে আক্রান্ত হয়েছেন। পেটের পীড়া ও জন্ডিসের লক্ষণ নিয়ে রাবি মেডিকেল সেন্টারে তারা চিকিৎসা নিয়েছেন। ১৭৮ জন শিক্ষার্থীর নমুনা পরীক্ষার পর ১০৮ জনের জন্ডিস শনাক্ত হয়েছে। বাকিরা বিভিন্ন পেটের পীড়ায় ভুগেছেন। হল ক্যান্টিনের নিম্নমানের খাবার খেতে না পেরে বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনের হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোয় গিয়ে শিক্ষার্থীদের একাংশ দুবেলা খাবার খান। এসব হোটেলেও অনিরাপদ পানি ব্যবহার করা হয়। যার ফলে জন্ডিসসহ পেটের পীড়ায় আক্রান্তের বড় কারণ বলে মনে করছে শিক্ষার্থী ও কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উন্মুক্ত হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোয় সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নানা ধরনের ভাজাপোড়া ও মুখরোচক খাবার বিক্রি হয়। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি খাবার শিক্ষার্থীরা খাচ্ছেন। এসব হোটেল- রেস্তোরাঁয় ট্যাপের পানি ব্যবহার করা হচ্ছে। নিুমানের খাবার খোলা মাঠেও বিক্রি হচ্ছে। সম্প্রতি ক্যাম্পাসের ভ্রাম্যমাণ ও স্থায়ী হোটেল-রেস্তোরাঁর খাবারের দাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করে দিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের জন্ডিসে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে। ক্যাম্পাসের ভ্রাম্যমাণ ও স্থায়ী খাবারের দোকানগুলোর খাবারের মান যাচাইয়ে আমরা অভিযান পরিচালনা করছি। শিক্ষার্থীদের সচেতন করার জন্য প্রচারণা শুরু করেছি। শিক্ষার্থীরা যাতে যত্রযত্র তৈরি খাবার গ্রহণ না করেন ও নিরাপদ পানি পান করেন সে বিষয়েও জোর দিয়েছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ক্যাম্পাসে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি ও বিক্রি রোধে আমরা কার্যক্রম শুরু করেছি। কয়েকটি অভিযানও চালানো হয়েছে। এসব বন্ধে মনিটরিং টিম দ্রুত কাজ শুরু করবে বলে আশা করছি।