ইবি প্রতিনিধি : মাঘ মাসের কনকনে শীতকে বরণ করে নিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) বিভিন্ন উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণে দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত হচ্ছে ‘কুহেলিকা উৎসব-২০২৪’।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ভবনের সামনে বটতলা প্রাঙ্গণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পরিবেশবাদী সংগঠন ‘অভয়ারণ্য’র উদ্যোগে আয়োজিত তিন দিন ব্যাপী এই উৎসবের উদ্বোধন করেন সংগঠনের উপদেষ্টা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহজাহান মন্ডল।
সাজ পসরা, চা ওয়ালী, খাইলেই পটবে, জিভে জল, বই তরুণী, বুক ভিলেজ, হৈ চৈ হোটেল, আগে এদিকে আসুন, চিঠিবক্স, দ্যা ফ্লাওয়ারস বি সহ বিভিন্ন নাম ও ধরণের প্রায় ৩২টি স্টল বসেছে উৎসবটি ঘিরে। বাঙালির ইতিহাস ও সংস্কৃতির বিচিত্র রূপ ফুটে উঠেছে এসব স্টল দোকানিদের মাধ্যমে।
কুহেলিকা উৎসবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় ছিলো প্রিয়জনের উদ্দেশ্যে চিঠি প্রেরণ। ক্যাম্পাসের যেকোনো শিক্ষার্থীর কাছে এই চিঠি পাঠানো যাবে চিঠিবাক্সের মাধ্যমে। পছন্দের কারো কাছে চিঠি পাঠাতে হলে তার নাম, বিভাগ ও সেশন চিঠির খামের ওপর লিখে দিয়ে চিঠিবাক্সে ফেলে দিলে অভয়ারণ্যের সদস্যরা সেই কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দিবে চিঠি।
উৎসব প্রাঙ্গণে ঘুরে দেখা গেলো প্রায় সকল বিভাগের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের প্রাণবন্ত উপস্থিতি। মেলায় সবাই আসছেন নিজেদের ক্যাম্পাসের উদ্যোক্তাদের থেকে পছন্দসই পোশাক কিনতে, খাবার খেতে, একসাথে ভালো কিছু সময় কাটাতে। এমন উৎসবের আয়োজন শুধুই পণ্যের বেচাকেনা নয়, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও বন্ধুদের মাঝে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কও গড়ে তুলতে সাহায্য করে।
ঘুরতে আসা সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী তানিয়া বলেন, একটি সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে এতো সুন্দর আয়োজন সত্যিই মনোমুগ্ধকর। এখানে ঘুরে দেখতে, বন্ধুবান্ধবদের সাথে আড্ডা দিতে অনেক ভালো লাগছে।
সাজ পসরা স্টলের মালিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২১-২২ বর্ষের শিক্ষার্থী মাসুমা বলেন, অভয়ারণ্যকে অসংখ্য ধন্যবাদ এমন একটি আয়োজন সাজানোর জন্য। আমি এখানে সাজগোজের জিনিসপত্র বিক্রি করছি। এখন পর্যন্ত আলহামদুলিল্লাহ বেশ ভালোই সাড়া পাচ্ছি। আমি চাই এই আয়োজনের ধারা অব্যাহত থাকুক।
অভয়ারণ্যের সাধারণ সম্পাদক হাশিন অর্প বলেন, আমরা ৩২ টি স্টল দিতে পারছি। তন্মধ্যে গহনা, ফুসকা, পানি পুরী, কাঠের গহনা এবং বই স্টল ইত্যাদি। এই কুহেলিকা উৎসব ক্যাম্পাসের উদ্যাক্তাদের জন্য মাইলফলক হয়ে দাঁড়িয়েছে। কার্যক্রমের দিক থেকে আমাদের কোনো বাউন্ডারি নেই। সামাজিক সংস্কৃতিতে বিশেষ আকর্ষণ হচ্ছে রঞ্জন যেখানে মৌলিক গান, কবিতা আবৃত্তি, নাচ ইত্যাদি থাকবে। এই যে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে মৌলিক প্রচারণা যেটা পুরো বাংলাদেশে মাইলফলক হয়ে থাকবে।
সভাপতি ইসতিয়াক ফেরদৌস ইমন বলেন, এই কুহেলিকা উৎসব সফল করার লক্ষ্যে অভয়ারণ্যের সদস্যদের পাশাপাশি অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও তাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে সহায়তা করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্লাব ও সংগঠন আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছে। এজন্য আমাদের আয়োজন সুন্দর এবং গুছানো হয়েছে বলে মনে করছি। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এমন একটি যায়গা যেখানে যে কেও ভিন্নভাবে কিছু উপস্থাপন করলে সর্বোচ্চ সাড়া পাবে। আমাদের আজকে শুরু হয়ে আগামী তিনদিন এই আয়োজন চলমান থাকবে। আমাদের রঞ্জন-১ সহ বিভিন্ন কালচারাল পোগ্রাম চলমান থাকবে।