রাবি প্রতিনিধি: ২০২৩ সালে আন্তর্জাতিক জার্নালে মৌলিক ও গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ প্রকাশে এক ধাপ এগিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)। ২০২২ সালে ৫৭০টি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করে রাবির অবস্থান ছিল ষষ্ঠ। এ বছর ৫৮৯টি প্রবন্ধ প্রকাশ করে রাবির দেশীয় অবস্থান পঞ্চম। তবে ২০২১ সালে ৭০৭টি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করে বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল এ বিদ্যাপীঠের। পূর্বের অবস্থানে ফিরতে ইতোমধ্যে উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ১৪১০টি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করে বরাবরের ন্যায় এবারও শীর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
আন্তর্জাতিক নির্ভরযোগ্য বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল, বই ও গবেষণামূলক প্রবন্ধের তথ্য নিয়ে কাজ করে বিশ্বমানের গবেষণা ডাটাবেজ ‘স্কোপাস ইনডেক্স’। এর থেকে উপাত্ত নিয়ে তৈরি করা বাংলাদেশের গবেষণা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণকারী ম্যাগাজিন ‘সায়েন্টিফিক বাংলাদেশ’ নামের একটি অনলাইন ম্যাগাজিনের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়। ২০১২ সাল থেকে স্কোপাস ডাটাবেইজের সহায়তায় বাংলাদেশের গবেষণা পরিস্থিতির তালিকা প্রকাশ করে আসছে ‘সায়েন্টিফিক বাংলাদেশ’।
প্রতিবেদন অনুসারে, ৫৮৯টি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করে তালিকার পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)। গত বছরের তুলনায় ১৯টি গবেষণা প্রবন্ধ বেশি প্রকাশ করে এক ধাপ এগিয়ে আছে প্রাচ্যের ক্যাম্ব্রিজ খ্যাত এ বিশ্ববিদ্যালয়। তবে দুবছর আগে, ২০২১ সালে প্রতিষ্ঠানটি ৭০৭টি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল।
২০২৩ সালে বাংলাদেশ থেকে গবেষণা নিবন্ধসহ ১৩ হাজার ৩২৭টি বৈজ্ঞানিক ডকুমেন্টস প্রকাশিত হয়েছে। যা ২০২২ সালে ছিল ১২ হাজার ৮৪৩টি, ২০২১ সালে ছিল ১১ হাজার ৪৭৭টি গবেষণা প্রবন্ধ। ২০২০ সালে ছিল ৮ হাজার ১৪০, ২০১৯ সালে ৬ হাজার ৩৬৩ ও ২০১৮ সালে ছিল ৫ হাজার ২৩৪ টি গবেষণা প্রবন্ধ।
তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১০৮০টি বৈজ্ঞানিক ডকুমেন্টস প্রকাশিত হয়েছে।
এছাড়া তৃতীয় স্থানে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (৮৩১), চতুর্থ স্থানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (৬৪৩), ষষ্ঠ স্থানে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় (৫৭২), সপ্তম স্থানে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (৫৬৫), অষ্টম স্থানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় (৫২৪), নবম স্থানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (৪৯৯) এবং দশম স্থানে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (৪৮৮)।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস অব দ্য ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের সহকারী পরিচালক অধ্যাপক মো. আজিজুর রহমান শামীম বলেন, স্কোপাস ইনডেক্স ডাটাবেজে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিকেশন কম আছে। বিশেষ করে ২০২২ সালের সংখ্যাটা অনেক কম। গবেষণালব্ধ প্রবন্ধগুলো প্রকাশের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের থেকে শিক্ষকদের নিজ নিজ জায়গা থেকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গবেষণা ঠিকই হচ্ছে। তবে এ বছর হয়তো কোনো কারণে পাবলিকেশন কিছুটা কম হয়েছে। এই সংখ্যাটা কীভাবে আরো বাড়ানো যায় সে বিষয়ে আমরা কাজ করব।
তিনি আরো বলেন, একটা জার্নাল প্রকাশ করতে প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে যেতে হয়। সেখানে কিছুটা সময় লাগে। প্রবন্ধের সংখ্যাটা কম হওয়ার এটাও একটা কারণ। তবে অদূর ভবিষ্যতে আমরা খুবই ভালো একটি জায়গায় যাব বলে আশা করছি। বিশ্ব র্যাঙ্কিং নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন খুবই মনোযোগী এবং উদ্যোগী। প্রথমবারের মতো রাবি কিউএস র্যাঙ্কিংয়ে স্থান করে নিয়েছে। র্যাঙ্কিং প্রকাশকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে তথ্য দেওয়ার জন্য আমরা ইতোমধ্যে তথ্যগুলো প্রস্তুত করেছি। আসন্ন র্যাঙ্কিংয়ে আমরা আরো ভালো করব।