The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪

যবিপ্রবির বাস ড্রাইভারের আত্মহত্যার চেষ্টা, পুড়ে গেছে ৮০ শতাংশ

যবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) সিনিয়র ড্রাইভার মোঃ মফিজুর রহমান নিজের শরীরে পেট্রোল ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। এরপর গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসার জন্য তাকে প্রথমে যশোর সদর হাসপাতাল ও পরবর্তীতে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি প্রায় মৃত্যু শয্যায়। পারিবারিক সূত্রে জানা যায় তার শরীরের প্রায় ৮০% পুড়ে গেছে। গত শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) রাতে যশোরের আমবটতলায় নিজ বাড়িতে তিনি এ আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

এদিকে যবিপ্রবির বাস ড্রাইভার হেলপাররা গতকাল (৩০ ডিসেম্বর) মফিজুরের আত্মহত্যার চেষ্টার পিছনে পরিবহন প্রশাসকের অসৌজন্যমূলক আচারণকে দায়ী করে রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. আনিছুর রহমানকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া পরিবহন প্রশাসক ড. মো. জাফিরুল ইসলামকে সাময়িকভাবে অপসারণ করে সহকারী পরিবহন প্রশাসক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলমকে পরিবহন প্রশাসকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন।

ড্রাইভার হেলপারদের লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, পরিবহন দপ্তরের পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. মো. জাফিরুল ইসলাম যোগদান করার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবহন দপ্তরের কর্মরত ড্রাইভার-হেলপারগণে‘র সাথে বিভিন্ন সময় অসৌজন্য মূলক আচারণ করেন। তেল মাপা কমিটি কর্তৃক মাইলেজ নির্ধরণ করে দেওয়ার পরেও পরিবহন প্রশাসক বিভিন্ন সময় কর্মরত ড্রাইভার-হেলপারদের তেল চোর বলেন।

এমনকি তাঁরা মসজিদে নামাজ পড়তে গেলেও বলে, তোরা তো তেল চোর তোদের নামজ পড়ে কি হবে? এভাবে তারেরকে বিভিন্নভাবে হেয়প্রতিপন্ন করে। প্রত্যেক ড্রাইভার-হেলপারদের সাথে তুই-তোকারি সহ অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করে। তার ব্যক্তিগত কাজে গাড়ি ব্যবহারের ক্ষেত্রে পরিবহন দপ্তরের ড্রাইভার-মেকানিক-হেলপার ব্যবহার করেন।
এছাড়া একজন সিনিয়র ড্রাইভারকে বিনা অপরাধে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় সিনিয়র ড্রাইভার মফিজুর রহমানকে অফিসের দায়িত্ব দেওয়া হলে সে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে এবং অপমানিত হওয়ায় রাতে গায়ে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যা করতে যায়।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, অগ্নিদগ্ধ মফিজুর হাসপাতালে যাওয়ার সময় তার স্ত্রী‘কে বলে যায় আমার যদি কিছু হয় তুমি যানবাহন কর্মকর্তা ও পরিবহন প্রশাসকের নামে মামলা করবে।

এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. মো. জাফিরুল ইসলাম বলেন, আমার উপরে যেসকল অভিযোগ করা হয়েছে তা মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। যেটি হয়েছে ,আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়য়ের দুইটি বাস নষ্ট হয়ে পড়ে থাকায় দুইজন ড্রাইভার এমনিতে বসে ছিল, অফিসে কোন পিওন না থাকার কারনে উপাচার্য মহোদয়ের নির্দেশে তাঁদের থেকে একজনকে অফিসের কাজের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছিল এবং এটা নিয়ে চিঠিও দেওয়া হয়। ব্যক্তিগত ভাবে কোন ড্রাইভারদের সাথে আমার খারাপ সম্পর্ক নেই। সে এমনিতেই পারিবারিক সমস্যার মধ্যে ছিল, কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক হেলপারের স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছে। পারিবারিক কারণে হয়তবা সে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করতে পারে। তার আত্মহত্যা চেষ্টা করার পিছনে আমি কোন ভাবে দায়ী নই।

ড্রাইভারদের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, তেল চুরি,পাইপ চুরি সহ নানা অপকর্ম না করতে পারায় কিছু ড্রাইভারদের ব্যক্তিগত সমস্যা হচ্ছে। ইতোমধ্যে আমারা কয়েকজনকে এই রকম অপকর্মের প্রমাণ সহ ধরেছি এবং তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের কাজ চলমান। হয়তবা এই কারণে ব্যাক্তিগত আক্রোশের ফলে আমার নামে এমন অভিযোগ করেছে।

এ বিষয়ে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসনে বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। এবিষয়ে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া তার চিকিৎসার জন্য প্রাথমিকভাবে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। তার বিষয়ে সার্বক্ষণিক খোঁজ রাখা হচ্ছে।

মফিজুরের আত্মহত্যা করার বিষয়ে তার পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে মফিজুরের সহকর্মীদের থেকে জানা যায়, তিনি বেশ কয়েকদিন যাবত পারিবারিক সমস্যার মধ্যে ছিলেন।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.