The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪

ওজন মাপা মেশিন দিয়েই চলে ৫৫ বছরের বৃদ্ধা সাবেরার পরিবার

বেরোবি প্রতিনিধি: “ওয়ো কামাই করে মুইও করো,কোনো মতে বাঁচি আছো। বয়স আইডেন্টিটি কার্ডে কম থাকায় বয়স্ক ভাতাও পাও না।বয়স যদি ষাইট বাষট্টি হইল হায় তাইলে বয়স্ক ভাতা দেইল হায়” এভাবেই ছলছলে চাহনি নিয়ে কথা গুলো বলতেছিলেন সাবেরা খাতুন নামের ৫৫ বছরের বয়স্ক বৃদ্ধা মহিলা।

সাবেরা খাতুনের সাথে কথা বলে জানা যায়,সাবেরা খাতুনের দুই কন্যাকে রেখেই তার স্বামী মারা গিয়েছেন বহু বছর আগে।পরে তিনি বহু কষ্ট করে মেয়ে দুটোকে মানুষ করেন।বর্তমানে দুই মেয়েকে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করেছেন- বৃদ্ধা সাবেরা খাতুনের বাড়ি রংপুরের মডার্ন মোড়ের নিকটবর্তী ঘাঘট পাড়ায়।ছোট একটি বাড়িতে তাদের বসবাস। উপার্জনের মাধ্যম হিসেবে কোনো রকম জীবিকা নির্বাহ করতেছেন। প্রতিদিনে দিনে একশত থেকে দুইশত টাকা আয় করেন। আবার কোনো দিনে তার থেকে কম উপার্জন করেন।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের( বেরোবি) ক্লাস চালু থাকলে ওজন মাপার যন্ত্র নিয়ে বসে থাকে রাস্তার এক কোণে। ক্যাম্পাস চলাকালীন সময়ে তিনি সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বসে থাকে সাবেরা খাতুন।কেউ ওজন মাপলে ৫ টাকা দেয়।আবার কেউবা ওজন না মেপেও খুশিমতো বিশ,পঞ্চাশ, একশত টাকা দিয়ে থাকেন। ওজন মেপে যা পায় তা নিয়ে কোনোরকমে সংসার চালায়।ক্লাস চলাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ওজন মাপে আর বাকি বন্ধের সময় কারমাইকেল কলেজ গেটে বসেন।

সাবেরা খাতুন বুক ভরা কষ্ট নিয়ে বলেন, “আল্লাহ ভালো জানে। আল্লাহ ছাড়া আর কেউ দেখার নাই, আল্লাহ দেখবে।প্রত্যেক দিন মিশিন নিগিবার পাও না।মোর মেয়োও মানষের বাড়িত কাজ করে আর মুই ওজন মিশিন দিয়ে চার -পাঁচ দিন যা টাকা পাও তাতে কোনো মতে বাঁচি আছি হামরা।বাজারে গেলে চাল কিনলে তেল কিনতে পারো না , ডাল কিনলে ঔষধ কিনতে পারো না।বাজারে যে দাম বাহে।

তিনি আরো বলেন, কতগুলা চ্যাংড়া বাড়িতে আছিয়া এই ওজন মাপা মিশিনটা দিয়া গেছিলো সাথে পাঁচশ টাকা।আগের মোতন মানুষের বাড়িত কাজোও করিবার পাও না। এখন ওজন মেশিন দিয়ায় যে কয়টা টাকা পাও সেইটা দিয়াই সংসার চালাও।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জান্নাতুল নাঈমা নিপা বলেন, আন্টিকে ক্লাসে যাওয়ার সময় প্রায় দেখি উনি ওজন মাপা মেশিন নিয়ে বসে থাকে।তার অনেক বয়স হয়েছে।ওভাবে বসে থাকলে দেখতে খারাপও লাগে।এ বয়সে তিনি বিশ্রামে না থেকে উপার্জনের জন্য সকাল থেকে বসে থাকেন।সরকারি কোনো অনুদান পেলে বৃদ্ধ সময়ে কষ্ট না করে সুখে থাকতে পারতো।

এম কে পুলক আহমেদ/

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.