ইবি ছাত্রলীগের কমিটি আসে কমিটি যায় পূর্ণতা পায়না কেউ
ইবি প্রতিনিধি: সাতটি বসন্ত পার করে অষ্টম বসন্তের মুখোমুখি অথচ এই সাত বছরে পূর্ণাঙ্গ কমিটির মুখ দেখেনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রলীগ। এই সাত বছরে আংশিক কমিটি এসেছে তিনটি যার মধ্যে বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে মাস চারেক আগে। এভাবেই কমিটি আসে কমিটি যায় কিন্তু পূর্ণাঙ্গ না হওয়ায় দিনশেষে পরিচয়হীন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়েন ছাত্রলীগ কর্মীরা। ফলে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে চাপা ক্ষোভ।
গত ৭ বছরে ইবি ছাত্রলীগের ৩টি কমিটির অনুমোদন হয়েছে কেন্দ্রীয়ভাবে। বছরের পর বছর ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থেকেও পদ না পাওয়ায় অনেকটাই হতাশ হয়ে দীর্ঘদিন ধরে শাখা ছাত্রলীগের অনেক কর্মী।
ছাত্রলীগ নেতাকর্মী সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ ২০১৬ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক অমিত কুমার দাসের নেতৃত্বে ১২১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেছিলো ইবি ছাত্রলীগ। এরপর ২০১৭ সালের ১৫ এপ্রিল সভাপতি শাহিনুর রহমান শাহিন ও সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা হালিমের ২ সদস্যবিশিষ্ট নতুন কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। তবে দায়িত্ব পালনের ২ বছরেও কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে পারেনি তারা।
পরবর্তীতে ইবি ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসেন সভাপতি রবিউল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব। ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই ২ সদস্যের এই কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। তবে দায়িত্বের ৩ মাসের মাথায় সাধারণ সম্পাদকের পদ বাণিজ্যের অডিও ফাঁস হলে বিতর্ক সৃষ্টি হয় কমিটি নিয়ে। তৎকালীন পদ বঞ্চিত বিদ্রোহী গ্রুপের নেতাকর্মীরা সেই কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে। ফলে তারা পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের আশ্বাস দিলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারায় পূর্ণাঙ্গ কথাটি রূপকথার গল্পের মতোই থেকে যায়।
গত ২০২২ সালের ৩১ জুলাই ২৪ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্র ঘোষিত ইবি ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির দায়িত্বে আসেন সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিক আরাফাত ও সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়। পূর্ববর্তীদের মতো তারা পূর্ণাঙ্গ কমিটি আশ্বাস দিলেও মেয়াদ শেষের চার মাস পরেও এখন অবধি তা বাস্তবায়ন হয়নি।
গত ২ মে ২০২৩ তারিখে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার লক্ষ্যে কর্মীদের জীবন বৃত্তান্ত সংগ্রহ করা হলেও আর তা আলোর মুখ দেখেনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শর্তে অনেক কর্মীই তাদের হতাশা প্রকাশ করেছেন রাইজিং ক্যাম্পাসকে। বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক এক কর্মী বলেন, বর্তমান সভাপতি ও সম্পাদক যদি জীবনবৃত্তান্ত নিয়েও কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে না পারে তবে কর্মীদের সাথে ব্যাপক বেইমানি করবেন তারা। লালন শাহ হলের আবাসিক আরেক কর্মী বলেন, প্রোগ্রাম হলেই নেতারা আমাদের সাহস দেন অনেক মোটিভেটেড করেন তবে পূর্ণাঙ্গ কমিটির বিষয় আসলেই আশ্বাস ছাড়া কোনো কার্যক্রম দেখতে পাইনি।
এ বিষয়ে ইবি ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিক আরাফাত বলেন, ইতোমধ্যে আমরা কমিটি পূর্ণাঙ্গের জন্য কেন্দ্রে তালিকা পাঠিয়েছি। তারা আশ্বাস দিয়েছেন দ্রুতই ইবি ছাত্রলীগের পূর্নাঙ্গ কমিটি দেয়া হবে। কেন্দ্রে গ্রীন সিগনাল পেলেই আমরা কমিটি পূর্ণাঙ্গ করবো।
শাখা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, আমি জানি ছাত্রলীগে পরিচয়হীন হয়ে থাকা কতটা কষ্টের। খাটিয়ে নিয়ে স্বার্থ হাসিলের রাজনীতিতে আমি বিশ্বাসী না। আমরা কমিটি পূর্নাঙ্গের জন্য সিভি জমা নিয়ে ৩ মাস আগে কেন্দ্রে তালিকা জমা দিয়েছি। কেন্দ্রে অনুরোধ করেছি যেন তাড়াতাড়ি কমিটি অনুমোদন দেয়। তবে আমরা হল কমিটি দেওয়ার একটা মৌখিক আশ্বাস পেয়েছি।