ইবি প্রতিনিধি : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) গুচ্ছ প্রক্রিয়ার অধীনে ভর্তি প্রক্রিয়া অফিসিয়ালি শেষ হয়েছে ১৯ অক্টোবর। ইতোমধ্যে অনেক বিভাগই ইনকোর্স, ল্যাব, প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষাও শেষ করেছে। বিভাগগুলো এখন সেমিস্টারের চূড়ান্ত পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে, এখনো পোষ্য কোটার নামে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের পোষ্য কোটায় ভর্তিতে চলছে নানা চেষ্টা- তদবীর৷ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শর্ত পূরণ করে পাশ নম্বর পেয়ে পোষ্য কোটায় ভর্তি হয়েছেন ২০ জন শিক্ষার্থী। কিন্তু, শিক্ষক- কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এখন উক্ত কোটায় ভর্তি পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থী ভর্তির নানা চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে জানা যায়।
তবে, নম্বর কমিয়ে অকৃতকার্য শিক্ষার্থী ভর্তির কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান। তিনি বলেন, আবেদনের যোগ্যতা থাকলেই ভর্তি, পৃথিবীর কোথাও এমন নিয়ম নেই। কোটায় নম্বর কমিয়েও শিক্ষার্থী ভর্তির কোনো সুযোগ নেই। গুচ্ছ কেন্দ্রীয় কমিটি যে নম্বর নির্ধারণ করে দিয়েছে সেটাই চূড়ান্ত। গুচ্ছের বাইরে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে পারে না। কাউকে অতিরিক্ত সুবিধা দেয়ার জন্য ভর্তির ন্যূনতম নম্বর কমানো সম্পূর্ণ অনৈতিক। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার গুনাগুন ও মান নষ্ট হয়। যে শিক্ষার্থী ১০০ নম্বরের মধ্যে ৩০ নম্বরও পাবে না তার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কোনো অধিকার নেই।
গুচ্ছের টেকনিক্যাল কমিটির সভাপতি ও চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. নাছিম আখতার বলেন, নির্দিষ্ট সময় কিংবা নম্বরের বাইরে ভর্তি নেয়ার নিয়ম নেই। তবে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যদি এক্ষেত্রে ভর্তি গ্রহণ করে তবে তা হবে নিয়মবহির্ভূত। গুচ্ছ সংক্রান্ত যেকোনো সিদ্ধান্তই গুচ্ছ কমিটির সভায় নেয়া হয়।
এরই মধ্যে এমন দাবির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে একাধিক বার এমন ভর্তি প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করতে দেখা যায়। যাতে একাত্মতা পোষণ করে ইবি শাখা ছাত্রলীগ।
বিগত সময়ে দেখা গেছে কোটার সুযোগ নিয়ে ভর্তি পরীক্ষায় ফেল করলেও তারা সাবজেক্ট চয়েজ দেয় সবচেয়ে কঠিন ও চাহিদাসম্পন্ন বিভাগসমূহে। এসব বিভাগে মেধাতালিকা থেকে আসা শিক্ষার্থীদের তুলনায় কোটাধারীরা নম্বরে ঢের পিছিয়ে থাকে। ফলে, তারা কুলিয়ে উঠতে না পেরে বারবার ফেল করে যা সেশনজটও তৈরী করছে। তাদের এমন ফলাফলে বিভাগের ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রেখে বারবার মানউন্নয়ন, রিটেক, বিশেষ পরীক্ষা নিতে হয়।
কর্মকর্তাদের সন্তান হওয়ায় বিভাগের শিক্ষকদের প্রতি চলে অভিভাবকদের তদবির-সুপারিশ। যার ফলে মেধাবীরা বঞ্চিত হয়। অনেক সময় স্বজনপ্রীতির ফলে কোনোকোনো বিভাগে ভালো ফলাফল করে ২/১ জন শিক্ষকও হয়ে যায়। পরবর্তীতে এসব শিক্ষকেরা বিভাগের গলার কাঁটা হয়ে আছে।
যার ফলে বর্তমানে সাধারন শিক্ষার্থীরা চরমভাবে প্রতিবাদী হয়ে উঠেছে। ধারণা করা হচ্ছে যে, কোনো সময়ে তার বিষ্ফোরণও ঘটতে পারে।