জাবিতে গাছ কাটার প্রতিবাদে গাছের প্রতীকী লাশের মিছিল
জাবি প্রতিনিধিঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ” সুন্দরবন ” এলাকায় রাতের আধারে নির্বিচারে প্রায় ৪০ টি গাছ কাটার প্রতিবাদে গাছের প্রতীকী লাশ নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসব গাছের মধ্যে শাল, সেগুন, জারুলসহ বিভিন্ন প্রজাতির পরিবেশ রক্ষাকারী গাছ রয়েছে।
বুধবার(১ অক্টোবর) দুপুর দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সুন্দরবন এলাকা থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে সমাজবিজ্ঞান ভবন, শহীদ মিনার হয়ে রেজিস্ট্রার ভবনে এসে শেষ হয়। তৎক্ষনাৎ প্রতিক্রিয়া হিসেবে শিক্ষার্থীরা গাছ কাটার স্থানে পুনরায় কিছু নতুন গাছের চারা রোপণ করেন।
জাবি ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের সাধারণ সম্পাদক অমর্ত্য রায় বলেন, “আমরা শুনে আসছিলাম আইবিএ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে মিলে ইলেকট্রিক করাত এনে গাছ কাটার পাঁয়তারা করছেন। আমরা আন্দোলনে যাবো বলায় রাতের আধারে গাছ কেটে ফেলেছে, যা খুবই ন্যাক্কারজনক। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখানে কাজ চালিয়ে যেতে চাইলে সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট আন্দোলন চালিয়ে যাবো ।”
জাবি ছাত্র ইউনিয়নের অপরাংশের আহবায়ক আলিফ মাহমুদ বলেন, “ভবনের অবশ্যই দরকার আছে, কিন্তু সেটা হতে হবে যেখানে প্রকৃতির কোনো ক্ষতি হবে না। এখানে বিভাগ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দুটি কর্তৃপক্ষ জড়িতে। তাদের দ্বন্দ্বে এভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ পকৃতি ধ্বংস হতে পারে না। তাদের এই হঠকারিতার প্রতিবাদের অংশ হিসেবে আমরা এখানে গাছের চারা রোপণ করছি।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভবন নির্মাণ অতীব জরুরি দাবি করে আইবিএ-জেইউ এর পরিচালক অধ্যাপক কে এম জাহিদুল ইসলাম বলেন, “আমাদের শ্রেণিকক্ষ এবং শিক্ষকদের কক্ষের সংকট আছে। দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনকে এটা জানিয়ে আসঝি। প্রশাসন আমাদের এই জায়গা নির্ধারণ করে দিয়েছে। ভবন নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় প্রায় এক কোটি টাকা খরচ হয়েছে। আর গাছ কাটার বিষয়টা ঠিকাদার কোম্পানির উপর নির্ভর করে। যতটুকু জেনেছি ওরা আজ ভোরে গাছ কেটেছে| এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিস জানে। তাদের সাথে পরামর্শ করেই করা হয়েছে বলে জানি।”
পরবর্তী কর্মসূচী জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯ ব্যাচের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নূরে তামীম স্রোত বলেন, আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ” জাহাঙ্গীরনগর বাঁচাও আন্দোলন ” চালিয়ে যাবো।গতকাল প্রশাসন বলেছিল উপাচার্যের অনুমতি ছাড়া গাছের একটি পাতাও নাড়বে না।কিন্তু রাতের আধারে গাছ কাটা হয়েছে তা এই প্রশাসন জানেন না। তাহলে রাতের আধারে গাছ কাটালো কারা? বহিরাগত যদি কাটে তাহলে প্রশাসনের কি করছিল? এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে প্রশাসনকে।” তিনি আরও জানান, প্রতিবাদস্বরূপ আমরা আজ সন্ধ্যা থেকে গাছকাটার স্থানে অবস্থান করবো এবং আগামীকাল সকাল ১১ টায় ট্রান্সপোর্ট থেকে বিক্ষোভ মিছিল করবো।
উল্লেখ, গত ২৩ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের দক্ষিণে এবং বিজ্ঞান কারখানার উত্তরে- মধ্যবর্তী স্থানে সুন্দরবনে আইবিএ-জেইউ এর নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ নূরুল আলম। এরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠন সহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানায়।