কৃষকদের মাঝে বাউ মিষ্টি আলুর চারা বিতরণ
বাকৃবি প্রতিবেদকঃ বাংলাদেশ কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উদ্ভাবিত বাউ মিষ্টি আলু-৫ এর চারা ময়মনসিংহ অঞ্চলের কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রায় দেড় শত কৃষকদের মাঝে বাউ মিষ্টি আলু-৫ বিতরণ করা হয়।
রবিবার (০৮ অক্টোবর) দুপুর ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কৌলিতত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের খামারে বাউ মিষ্টি আলুর চারা বিতরণ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে কৌলিতত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. জি এইচ. এম. সাগরের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ^বিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের (বাউরেস) পরিচালক অধ্যাপক ড. মাহফুজা বেগম, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) গবেষনা পরিচালক ড. মো আবদুল মালেক, কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ির অতিরিক্ত পরিচালক ড. সুশান্ত কুমার প্রামানিক ও ইন্টারন্যাশনাল পটেটো সেন্টারের (সিআইপি) কান্ট্রি প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর ড. দেবাশীষ চন্দ। বাউ মিষ্টি আলুর প্রধান গবেষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. এ.বিএম আরিফ হাসান খান রবিন।
বাকৃবির কৌলিতত্ত¡ ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক ড. এ বি এম আরিফ হাসান খান রবিনের নেতৃত্বে একদল গবেষক বাউ মিষ্টিআলু-৫ জাতটি উদ্ভাবন করেন। অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ড. আরিফ হাসান বলেন, বাউ মিষ্টিআলু-৫ উচ্চফলনশীল। এজাতটি উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে হেক্টর প্রতি ৩০ টনের বেশি ফলন দিতে সক্ষম। যেখানে সাধারণ আলু যেখানে হেক্টর প্রতি ফলন দেয় ১০.২৫ টন । বাউ মিষ্টিআলু-৫ এর প্রতিটি গাছে ১.০ থেকে ১.৫ কেজি মিষ্টি আলু পাওয়া যায় । এজাতটি থেকে ৯০ দিনেও মিষ্টি আলু তোলা সম্ভব। তবে ১০০ থেকে ১১০ দিন বয়সে সর্বোচ্চ ফলন পাওয়া যায়। বাউ মিষ্টি আলু-৫ সারা বছর চাষযোগ্য। তবে রবি মৌসুমে এর ফলন সবচেয়ে বেশি।
এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী বলেন, মিষ্টি আলু ভাতের থেকে পুষ্টিগুনে অনেক ভালো। যেকোনো পুষ্টিবিদ ফল ও সবজি খাওয়ার পরমর্শ দিবেন। মিষ্টি আলু ফল ও সবজি উভয় অংশ পাওয়া যায় বলে ভাতের বিকল্প হিসেবে খাওয়া যায়।
উপাচার্য আরও বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে আমাদের আচার-আচরন ও স্বভাবে পরিবর্তন আনতে হবে। শুধু ফোনে, ফেসবুকে স্মার্ট দেখালে হবে না। আমাদের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। মাঝে মধ্য ভাতের বিকল্প অন্য খাবার খেতে হবে। পুষ্টির ভিতরে ভিন্নতা আনতে হবে। সেটি যদি অধিক পুষ্টিগুন সম্পন্ন আলু হয় সেটি আরো ভালো। পুষ্টি বিবেচনায় মিষ্টি আলুতে শর্করার পরিমান ভাতের তুলনায় কম, প্রোটিনের পরিমান বেশি। কোষ্ট্যকাঠিন্য দূর করতে ফাইবার দরকার। যেটি ফল ও সবজির মধ্যে রয়েছে। প্রতি ১০০ গ্রাম আলুর মধ্যে ৩ গ্রাম ফাইবার থাকে যেখানে প্রতি ১০০ গ্রাম ভাতে মাত্র ০.৪ গ্রাম ফাইবার থাকে। ক্যালশিয়াম ৩৮ মিলিগ্রাম। ভাতে থাকে ১০ মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম।