জাবি প্রতিনিধিঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) আসন্ন সিনেটে শিক্ষক প্রতিনিধি নিবার্চনকে ঘিরে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আর্দশের শিক্ষক পরিষদ’ নামে নতুন দল গঠন করেছেন আওয়ামীপন্থীদের শিক্ষকদের একাংশ। কমিটিতে আইবিএ অধ্যাপক ড. মো. মোতাহার হোসেনকে আহ্বায়ক এবং ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. খো. লুৎফুল এলাহীকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে গণমাধ্যমের কাছে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
কমিটিতে অন্য সদস্যরা হলেন প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ, আইবিএ অধ্যাপক ড. আইরিন আক্তার, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক জনাব মালিহা নার্গিস আহ্মেদ, আইবিএর সহযোগী অধ্যাপক জনাব মো. আলমগীর হোসেন, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শামীমা নাসরীন জলি, ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাসুদা পারভীন ও জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমিনা ইসলাম।
সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘২০১৮ সালে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী সকল শিক্ষককে একই ছাতার তলে নিয়ে আসবার জন্য বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ গঠিত হয়েছিল। এ সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি উপাচার্যের দায়িত্ব পাওয়ায় আমরা আনন্দিত হয়েছিলাম। কিন্ত তিনি উপাচার্যের দায়িত্ব গ্রহনের পর কতিপয় সুবিধাবাদী শিক্ষকের ইন্ধনে বিতর্কিতদের দিয়ে গত বছরের ১১ অক্টোবর নতুন আহবায়ক কমিটি গঠন করেন। এক্ষেত্রে আওয়ামীপন্থী জ্যেষ্ঠ অনেক শিক্ষককে আস্থায় না নিয়ে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে তার চরম স্বেচ্ছাচারী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী বিপুল সংখ্যক শিক্ষক ভীষণ মর্মাহত এবং বিব্রতবোধ করছি।’ এছাড়া আহবায়ক কমিটি গঠনে উপাচার্যের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতি ও বিতর্কিতদের পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানের অভিযোগ করেন তারা।
বিবৃতিতে আরো উল্লেখ করা হয়, উপাচার্য একই সুবিধাবাদী গোষ্ঠীর স্বার্থ হাসিলে সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক পদে পদোন্নতির নির্বাচনী বোর্ডে যোগ্য ও জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের বাদ দিয়ে একাডেমিক ইথিকস ও পেশাদারিত্বের অভাব দেখিয়েছেন। সম্প্রতি উপাচার্য নিয়োগে অনৈতিক প্রভাবের যে অভিযোগ উঠেছে, তা খতিয়ে দেখার জন্য আমরা রাষ্ট্রের যথাযথ কতৃর্পক্ষের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।
নবগঠিত এ সংগঠনের সদস্যরা অভিযোগ করে বলেন, ‘যাদেরকে কখনো জাতীয় রাজনৈতিক কর্মকান্ডে আওয়ামী লীগের পক্ষে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি তারা ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য উপাচার্যকে ক্রীড়নকে পরিণত করেছে। উপাচার্যের এসকল বিতর্কিত কর্মকান্ড জাতীয় অঙ্গনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ও বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষণ্ণ করছে। এই বিতর্কিত কর্মকান্ডের দায়ভার আমরা আর নিতে পারছি না।’
আসন্ন সিনেটের শিক্ষক প্রতিনিধি নিবার্চনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়ে বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, ‘আমরা এই শিক্ষক সংগঠনের পক্ষ থেকে আসন্ন সিনেটে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকগণের সমর্থন ও সহযোগিতা একান্তভাবে কামনা করছি।’
নবগঠিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আর্দশের শিক্ষক পরিষদের আহ্বায়ক ড. মো. মোতাহার হোসেন বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে উপাচার্যের নানা কর্মকান্ডে আমরা মর্মাহত। সিনেটে নিবার্চনের এ সময়টাকেই আমরা উপযুক্ত বলে মনে করছি। সিনেটে নিবার্চনে আমরা ৭/৮ টি পদে আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব।
উল্লেখ্য, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের ১৯ (১)( জে) ধারা অনুসারে, সিনেট সদস্য হিসেবে ৩৩ জন নিবার্চিত শিক্ষক প্রতিনিধি থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের ঘোষণা অনুসারে, আগামী ১৬ অক্টোবর সিনেটে শিক্ষক প্রতিনিধি নিবার্চন অনুষ্ঠিত হবে।