ইবি প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) শত চেষ্টার পরেও র্যাগিং এর অভিযোগ থামছেনা। র্যাগিং রোধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্মকাণ্ড প্রশংসনীয় হলেও তাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে জুনিয়র শিক্ষার্থীদের উপর মানসিক নির্যাতনের ঘটনা অহরহ ঘটছে বলে জানা যায়। সর্বশেষ দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টিকারী ফুলপরীকে নির্যাতনে পাঁচ শিক্ষার্থী আজীবন বহিষ্কারের ঘটনার ১০ দিন না পেরোতেই ফের নবীন এক শিক্ষার্থী তিনদিন ব্যাপী মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ পর্যায়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা আবাসিক হলে নয় বরং নির্যাতনের জন্য তারা এবার বেছে নিয়েছিলো ক্যাম্পাসের অন্তর্গত খেলার মাঠ ও হল সংলগ্ন পরিত্যক্ত স্থান। অভিযোগ রয়েছে শারীরিক নির্যাতন না করলেও মানসিক ভাবে নির্যাতন সহ অকথ্য ভাষায় গালাগালি এবং ওই ভুক্তভোগীকে হুমকি ধামকি দেয়া হয়।
এঘটনায় প্রথমে ভুক্তভোগী হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী তাহমিন ওসমানের বাবা ওসমান গনি শওকত রেজিস্ট্রারকে মেইলে অভিযোগ জানায় এবং পরে ৯ সেপ্টেম্বর লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়। ঘটনা তদন্তে ইতোমধ্যে ৫ সদস্যের কমিটি কাজ করছে বলে জানা যায়।
এঘটনায় অভিযুক্ত পাঁচ শিক্ষার্থী হলেন, শুভ, মিজানুর ইমন, আকিব, পুলক ও সাকিব। তারা সবাই হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
ঘটনার অভিযোগের পর কথা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও অ্যান্টি র্যাগিং ভিজিল্যান্স কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদের সাথে। সকলের সহযোগিতা ও আন্তরিক প্রচেষ্টায় র্যাগিং চিরতরে বন্ধ হবে বলে আশবাদী তিনি। প্রক্টর বলেন, র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ১ম বর্ষের ক্লাস শুরুর আগের দিনই সাংবাদিক সংগঠনগুলোতে চিঠি দেয়া হয়েছিল এবং প্রায় ২০ টা পত্রিকায় র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে উল্লেখ করে নিউজ হয়েছিল। এছাড়া, সচেতনতামূলক মাইকিং হয়েছে পরপর কয়েক দিন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তার আবেদনে উল্লেখ করেছে, যখন জিমনেশিয়ামের পাশে তাকে র্যাগিং দেয়া হচ্ছে তখন সে র্যাগিং বিরোধী প্রচারের শব্দ শুনতে পাচ্ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে নোটিশ দেয়া হয়েছিল। বিভাগের সভাপতি, ডিন, প্রভোস্টদের কাছে প্রজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে। বিলবোর্ডে র্যাগিং বিরোধী প্রচার রয়েছে। একাধিক র্যালী করা হয়েছে। প্রশাসনের নেতৃত্বে ডিন, প্রভোস্ট, সভাপতিদের নিয়ে র্যাগিং বন্ধে করণীয় বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। তারমধ্যেই এইসব চলছে।
তিনি আরও বলেন, ৯ সেপ্টেম্বর সাড়ে তিনটায় লিখিত পেয়েছি, পরদিনই রেজিস্ট্রার বরাবর নোট পাঠিয়েছি, তদন্ত কমিটি হয়েছে। আমি বিভাগীয় সভাপতি, ইবি থানার ওসিকে ওই ছাত্রকে নিরাপত্তা দেয়ার জন্য চিঠি দিয়েছি। একজন সহকারী প্রক্টরকে সার্বক্ষণিক দেখভাল করার দায়িত্ব দিয়ে চিঠি দিয়েছি। তাছাড়াও, ওই ছাত্রের বাবার চাওয়ায় হল প্রভোস্টকে চিঠি দিয়েছি তাকে ১ টি সিট দেয়ার জন্য। আমার মনে হয়, চেষ্টার কোনও ত্রুটি করা হয় নাই। তবুও, এসব ঠেকানো দূরহ হয়ে উঠছে, কারণ কোভিড পরবর্তী ব্যাচগুলো কেমন যেনো কারও কথাই শুনছে না এরা। তবে আমি আশাবাদি, সবার আন্তরিক প্রচেষ্টা ও সহযোগিতায় এসব একদিন বন্ধ হবে।