বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদকঃ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শাটল ট্রেন বিকেল থেকে স্বাভাবিক নিয়মেই চলাচল করবে। রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর রোকন উদ্দিন বলেন, আমরা রেলওয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছি, আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। শিডিউল অনুযায়ী বিকেল ২টা ৫০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়গামী শাটল ট্রেন বটতলী স্টেশন থেকে ছেড়ে যাবে। লোকোমাস্টাররা (ট্রেনচালক) তাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর শাটল ট্রেনের ছাদে গাছের আঘাতে অন্তত ১৫ শিক্ষার্থী আহত হন। দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে ট্রেনের লোকোমাস্টারদের মারধর করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে ট্রেন স্টেশনে রেখেই দুই লোকোমাস্টার ও গার্ড পালিয়ে যান। এরপর থেকেই মূলত নিরাপত্তাহীনতার কথা বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেন না চালানোর সিদ্ধান্ত নেন লোকোমাস্টাররা।
ঘটনার পর থেকে রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) কর্তৃপক্ষ শাটল ট্রেন চালু করতে পারেনি। সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গামী কোনো ট্রেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে শহর ছেড়ে যায়নি। যদিও আগের দিন শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেন ও অন্যান্য কার্যক্রম স্বাভাবিক নিয়মেই চলবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শাটল চলাচল না করায় ভোগান্তিতে পড়েন শিক্ষার্থীরা। এ সমস্যা সমাধানে জরুরি ভিত্তিতে ৮টি বাসের ব্যবস্থা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। রোববার সকাল ৯টায় নগরীর বটতলী থেকে ৩টি ও ষোলশহর থেকে ৫টি বাস শিক্ষার্থীদের বহন করে।
রেলওয়ের কর্মচারীদের দেওয়া ছয়টি শর্ত হলো—
১) পাহাড়তলী থেকে প্রতিটি ইঞ্জিন সঙ্গে রেলওয়ে পুলিশের (জিআরবি) কমপক্ষে চারজন সদস্য দিতে হবে;
২) বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ, রেলওয়ে কর্মচারীদের প্রতিনিধি ও পুলিশ প্রশাসন মিলে বৈঠক করতে হবে। ওই বৈঠকে যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আলোচনা করতে হবে;
৩) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেলস্টেশনে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা;
৪) ট্রেনের ছাদে ও ইঞ্জিনে শিক্ষার্থী উঠলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে হবে;
৫) ছাত্রদের সচেতনতা বাড়াতে শ্রেণিকক্ষে কাউন্সেলিং করতে হবে এবং
৬) গত বৃহস্পতিবার লোকমাস্টারদের লাঞ্ছিতের ঘটনায় জড়িত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার ট্রেন দুর্ঘটনার জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভবন এবং অর্ধশতাধিক গাড়ি ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। ভাঙচুরের ঘটনায় শনিবার রাত ৮টায় ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে দুটি মামলা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে প্রায় নয় শতাধিক। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কেএম নূর আহমেদ এবং প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বাদী হয়ে হাটহাজারী থানায় মামলা দুটি দায়ের করেন।