যবিপ্রবি প্রতিনিধি: নিয়োগ বাণিজ্যের সাথে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়ায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মো. হায়াতুজ্জামানের আগামী পাঁচ বছর ‘পদোন্নতি’ এবং তিনটি বার্ষিক ‘ইনক্রিমেন্ট’ স্থগিত এবং সিনিয়র টেলিফোন অপারেটর মো. ফয়সাল কবিরকে চাকরি হতে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে ও এক শিক্ষার্থীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
আজ শনিবার(৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩) দুপুরে যবিপ্রবির সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম রিজেন্ট বোর্ডের ৯৪তম সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এর আগে অভিযোগ সংক্রান্ত কমিটি রিজেন্ট বোর্ডে প্রতিবেদন পেশ করে। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইন ও শৃঙ্খলা বিধি অনুযায়ী ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় এ সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সভার শুরুতে যশোর-৩ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও যবিপ্রবির রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের শ্রদ্ধেয় পিতা কাজী শাহেদ আহমেদের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। একইসঙ্গে এক মিনিট নিরবতা পালন ও তাঁর রূহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া-মোনাজাত করা হয়। সদস্যদের অনেকে ভার্চুয়ালি এবং সশরীরে রিজেন্ট বোর্ডের সভায় অংশ নেন।
রিজেন্ট বোর্ডের সভায় জানানো হয়, নিয়োগ বাণিজ্যের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগের বিষয়ে গঠিত তদন্ত বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরের জনসংযোগ শাখার উপ-পরিচালক মো. হায়াতুজ্জামানের আগামী পাঁচ বছর সকল ধরনের ‘পদোন্নতি’ এবং তিনটি বার্ষিক ‘ইনক্রিমেন্ট’ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বোর্ডের সভায় জানানো হয়, নিয়োগ বাণিজ্যের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে সিনিয়র টেলিফোন অপারেটর মো. ফয়সাল কবির ইতিমধ্যে চাকরি হতে সাময়িক বরখাস্ত ছিলেন। পরবর্তীতে এ বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি তাঁকে গুরুদন্ডের শাস্তি প্রদানের সুপারিশ করে। তাঁর বিরুদ্ধে আনীত নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায়, কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বিধি অনুযায়ী ফয়সাল কবিরকে চাকরি হতে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। রিজেন্ট বোর্ডের সভায়, প্রশ্ন ফাঁস সংক্রান্ত কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হাজ্জাজ বিন আজিজের চাকরি অবসান করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
রিজেন্ট বোর্ডের সভায় জানানো হয়, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) চৌগাছার মৃধাপাড়া কলেজ কেন্দ্রে এইচএসসির ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে গিয়ে যবিপ্রবির পিটিআর বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নুরুল সাদিক সজীব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন। পরবর্তীতে তাঁকে জেল-হাজতে প্রেরণ করা হয়। রুলস অব ডিসিপ্লিন ফর স্টুডেন্টুস অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিসিপ্লিনারি কমিটির ১১তম সভার সুপারিশক্রমে রিজেন্ট বোর্ডের সভায় তাকে বিশ্ববিদ্যালয় হতে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
যবিপ্রবির উপাচার্য ও রিজেন্ট বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোঃ আনিছুর রহমান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) মো. আবু ইউসুফ মিয়া, যুগ্ম সচিব সৈয়দা নওয়ারা জাহান, সাভারের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজির মহাপরিচালক ড. মো: সলিমুল্লাহ, সাভারের পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ও প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এস এম আসাদুজ্জামান, যশোরের আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. কাওছার উদ্দিন আহম্মদ, ইউজিসি অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির, ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. এম. এ. রশীদ, যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোঃ আহসান হাবীব, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গালিব, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস (এআইএস) বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মেহেদী হাসান, সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মর্জিনা আক্তার, রিজেন্ট বোর্ডের সচিব ও রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব প্রমুখ।