The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শুক্রবার, ২২শে নভেম্বর, ২০২৪

অধ্যাপককে প্রকাশ্যে হুমকি জবি শিক্ষার্থীর

জবি প্রতিনিধি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শাহ নিস্তার জাহান কবিরকে প্রকাশ্যে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়েছে সাইদুর ইসলাম সাঈদ এক শিক্ষার্থী। হুমকিদাতা সাইদুর ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী ও ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি।

জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং সোসাইটিতে ৩৬টি বিভাগ ও ২টি ইনস্টিটিউট থেকে ২ জন করে ভোটার নির্বাচিত হন। যাদের ভোটে পরবর্তীতে ডিবেটিং সোসাইটির কমিটি গঠন করা হয়। সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে সাইদ তার পছন্দের ২ জনকে ভোটার করার জন্য অধ্যাপক শাহ নিস্তারকে অনুরোধ করেন। এ সময় অধ্যাপক নিস্তার বলেন, প্রতিনিধি মনোনয়নের জন্য আলাদা শিক্ষক রয়েছেন। তারা বাছাই করে তা নির্ধারণ করেন।

বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) অধ্যাপক ড. শাহ নিস্তার জাহান কবীর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন তিনি বুধবার (৩০ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন।

অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, গত সোমবার (২৮ আগস্ট) বিকাল ৩টা ৫০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধ ভাস্কর্যের সামনে শিক্ষকদের বাস ছাড়ার পূর্ব মুহূর্তে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি সাইদুর ইসলাম সাঈদ গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শাহ নিসতার জাহান কবীর এর সঙ্গে চরম ধৃষ্টতামূলক আচরণ করে। সাঈদের পছন্দের প্রার্থীকে সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে ডিবেটিং সোসাইটির নির্বাচনের জন্য প্রতিনিধি হিসেবে নাম না পাঠানোর জেরে বিভাগের চেয়ারম্যানকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়।

এবিষতে গতকাল একাডেমিক কমিটির সভায় এঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। সভায় বিভাগ মনে করে, ডিবেটিং সোসাইটিতে প্রতিনিধি প্রেরণের বিষয়টি একান্তই বিভাগের নিজস্ব বিষয়। এক্ষেত্রে কারো তরফ থেকেই কারো নাম উল্লেখ করে প্রভাবিত করা বা চাপ প্রয়োগ করার কোনো সুযোগ নেই বলে একাডেমিক কমিটি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে।

একাডেমিক কমিটির সর্বসম্মতিক্রমে, শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে ও শিক্ষকদের সম্মান সমুন্নত রাখতে ভবিষ্যতে কোনো শিক্ষক যেন এমন আচরনের শিকার না হন তা নিশ্চিত করতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত উক্ত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দ্রুত ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয়।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী অধ্যাপক ড. শাহ্ নিস্তার জাহান কবীর বলেন, সাইদ তার পছন্দের লোককে অবৈধভাবে ডিবেটিং সোসাইটির নির্বাচনে প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়ার জন্য বলেছিল। কিন্তু আমি তার অন্যায় দাবি মেনে নেই নি। পরবর্তীতে তিনি আমাকে প্রকাশ্যে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। বিষয়টি নিয়ে আমি বিব্রত।

এবিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি সাইদুর ইসলাম সাঈদ বলেন, শিক্ষকরা আমাদের পিতৃতুল্য। আমি স্যারের কাছে ক্ষমা চেয়েছি। তিনি অভিযোগ তুলে নেয়ার ব্যাপারে ভেবে দেখবেন বলেছে।

এবিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছি। আমরা সেই শিক্ষার্থীর শাস্তি দাবি করছি।

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. মোস্তফা কামাল বলেন, রেজিস্ট্রার স্যার অসুস্থ, তিনি আসলে চিঠি ইস্যু করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। কমিটির তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ বলেন, ঘটনার অভিযোগপত্রটি হাতে পেয়েছি। দ্রুত তদন্ত কমিটি করে যথাযথ পদক্ষেপ নিব।

উল্লেখ্য, গত বছর জুলাইতে সাইদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। যা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়। এতে একাধিক জাতীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। পরে ছাত্রলীগের সভাপতির কাছে বিচার দিলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি। এ ছাড়া চলতি বছরের ৪ মার্চে সাইদের হাতে মারধরের শিকার হন ডিবেটিং সোসাইটির সাংগঠনিক সম্পাদক তৌফিকুল হাসান হৃদয়। হৃদয়কে তিনি ৫ মিনিটের মধ্যে ক্যাম্পাস ত্যাগ করার হুমকি দেন।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.