নিজস্ব প্রতিবেদক: শোক দিবসের আলোচনা সভা শেষে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রলীগ কর্মীদের মাঝে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। রবিবার (২০ আগস্ট) দুপুর ২ টার দিকে ক্যাম্পাসের বাংলা মঞ্চের সামনে আম বাগানে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উভয় হলের কয়েকজন আহত হয়।
আহতরা হলেন শেখ রাসেল হল শাখা ছাত্রলীগের কর্মী মুফতায়িন আহমেদ সাবিক, ফারহান লাবিব ধ্রুব, আশিক কুরাইশি, সাদ্দাম হোসেন হলের তাজওয়ার আহমেদ তনয় ও সাদিদ খান এবং জিয়া হলের কর্মী আকিব, রাকিব ও জাফর।
এর আগে রোববার সকালে ইবি বঙ্গবন্ধু পরিষদের আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’ শীর্ষক এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ আসনের সাংসদ মাহবুবউল আলম হানিফ। এ ছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন আওয়ামী লীগের ঝিনাইদহ জেলার শাখার সভাপতি ও ঝিনাইদহ-১ আসনের সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল হাই।
আলোচনা সভা শেষে মিলনায়তন থেকে বের হওয়ার সময় কথা-কাটাকাটি শুরু করে উভয় হলের কর্মীরা। পরে তাদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে শেখ রাসেল হলের মুফতায়িন আহমেদ সাবিক গুরুতর আহত হলে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চিকিৎসা কেন্দ্রের নার্স শামীমা আক্তার।
এদিকে সাদ্দাম হলের তাজওয়ার আহমেদ তনয়, জিয়া হলের কর্মী আকিব, শেখ রাসেল হলের কর্মী সাবিককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন বলে অভিযোগ শেখ রাসেল হল শাখা ছাত্রলীগ কর্মীদের।
এ বিষয়ে কুরাইশি বলেন, আমি অডিটোরিয়ামের দুই তলায় দায়িত্বে ছিলাম। প্রোগ্রামের আগে জিয়া হল নিয়ম বহির্ভূতভাবে ঢুকে পড়ে। আমি মানা করায় সামিম ভাই আমাকে বলে, আমি তোমাকে দেখে নিবো, চোখ দুইটা তুলে নিব। প্রোগ্রাম শেষে সবাইকে নামিয়ে দিতে গেলাম। আমি ওই ভাইদের বললাম, আপনারাও নামেন। তখন তাদের কয়েকজন আমাকে ধাক্কা ধাক্কায় নিচে নামায়। তারা আমার উপর অতর্কিত হামলার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে আকিব ছুরি দিয়ে মারার চেষ্টা করে। তখন ওই ছুরি সাবিকের গিয়ে লাগে।
তবে ছুরিকাঘাতের বিষয়টি অস্বীকার করে আকিব বলেন, প্রোগ্রাম শেষে জিয়া হলের বড় ভাই ও রাসেল হলের বড় ভাইদের ঝামেলা হয়। পরে রাসেল হলের ধ্রুব, নাইমুর রহমান জয় ভাই, সাবিক আমাদের থ্রেট দেয়। আমি নিচে পড়ে যায়। পরে আমাকে ভ্যানে করে উঠায়া চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যায়। হাতাহাতি হয়েছে। আমাকে মারার সময় ঠেকাইছি। হলের পলিটিক্যাল বড় ভাইরা তরকাতর্কি করছিল। কিন্তু বড় ভাইদের নাম আমি জানিনা। তবে আমি ছাত্রলীগের ছিটে থাকি।
এ বিষয়ে শেখ রাসেল হলে থাকা শাখা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি নাঈমুর রহমান জয় বলেন, আমি মূলত মারামারির ঘটনাটিকে ঠেকানোর চেষ্টা করছিলাম যাতে মারামারি না হয়। কিন্তু ঠেকাতে গিয়ে আমি আঘাত পাই। তবে আমার কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই।
শেখ রাসেল হলে থাকা ছাত্রলীগ কর্মী ফারহান লাবিব ধ্রুব নাঈমুর রহমান জয়ের বক্তব্যের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে বলেন, আমরা মূলত মারামারি ঠেকাচ্ছিলাম। মধ্যখানে জিয়াউর রহমান হলের আকিব ছুরি জাতীয় কিছু দিয়ে সাবিক ও তনয়কে আঘাত করে। সেটা ঠেকাতে গিয়ে আমিও আঘাত প্রাপ্ত হই।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। তবে এতে কারো ইন্ধন আছে কিনা বিষয়টি খুঁজার চেষ্টা করছি। যদি কারো সংশ্লিষ্টতা পাই তাহলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, আলোচনা সভা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়। তবে সভা শেষে যে ঘটনাটি ঘটেছে তা খুবই দুঃখজনক। আমরা বিষয়টি নিয়ে বসবো। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিবো।