যবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) শিক্ষকদের বাসের চাবি কেড়ে নেওয়া ও লিফট বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনায় শিক্ষকদের কর্মবিরতিতে ২২ দিন ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ থাকার পর রবিবার থেকে আবারও ক্লাস পরীক্ষায় ফিরছে যবিপ্রবি।
শনিবার (১২ আগস্ট) যবিপ্রবির বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিক ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্যালারীতে অনুষ্ঠিত শিক্ষক সমিতির এক সাধারণ সভায় শিক্ষক অপমানের ঘটনার প্রেক্ষিতে দীর্ঘ ২২ দিনের কর্মবিরতি সাময়িক স্থগিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়।
এবিষয়ে যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. সৈয়দ মোহাম্মদ গালিব বলেন, ‘শোকের মাস আগস্ট ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে ১৯ আগস্ট ফ্রী হেলথ ক্যাম্পকে সামনে রেখে শিক্ষকদের সাধারণ সভায় চলমান আন্দোলন সাময়িক স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আগামীকাল (রবিবার) থেকে যথানিয়মে ক্লাস পরীক্ষা চলবে।’
এদিকে শিক্ষকদের একটি সুত্র জানিয়েছে, গত ১৬ জুলাই শিক্ষকদের লিফট বন্ধ ও বাসের চাবি কেড়ে নেওয়ার ঘটনায় জড়িতদের তদন্ত সাপেক্ষে শাস্তির আওতায় না নিয়ে আসলে সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষকরা আবারও আন্দোলনে যেতে পারেন।
এ বিষয়ে যবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ সোহেল রানা বলেন, শ্রদ্ধেয় শিক্ষকরা শোকাবহ আগস্টের কথা চিন্তা করে তাদের কর্মবিরতি স্থগিত করে ক্লাস পরীক্ষায় ফিরে আশায় তাদেরকে সকল শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। যদিও শোকাবহ আগস্ট মাসের কথাটি আগেই চিন্তা করা উচিত ছিল।
এ বিষয়ে যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, শোকের মাস এবং ১৫ আগস্ট উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনকে সামনে রেখে শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত করায় তাদেরকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, গত ২ জুলাই অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী, বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের সর্বোচ্চ ৭৫ শতাংশ ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দের সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ ব্যয়ের নির্দেশনা দেওয়া হয়। ৯ জুলাই এ নির্দেশনাকে সামনে রেখে ১০-৩১ জুলাই পর্যন্ত সব বিভাগের সব বর্ষের ক্লাস শ্রেণিকক্ষের পরিবর্তে অনলাইনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় যবিপ্রবি কর্তৃপক্ষ। অনলাইন ক্লাসের সিদ্ধান্তে কিছু শিক্ষার্থী বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখায়।
গত ১৮ জুলাই যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি অভিযোগ তোলে, গত ১৬ জুলাই কিছু শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের গাড়ির চাবি ছিনিয়ে নেন। একইসঙ্গে তারা সব ভবনের লিফট বন্ধ করে দেন। গত ১৮ জুলাই তারা শিক্ষক-কর্মকর্তাদের গাড়ি বন্ধ রাখতে বাধ্য করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ওইদিন যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি জরুরি সভা করে ‘অপমান-লাঞ্ছনার তদন্তক্রমে সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত’ সব একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস ও পরীক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।