কুবি প্রতিনিধি: অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র রাখার দায়ে ২০১৫ সালে র্যাব বাদি হয়ে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় দায়ের করা মামলায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজকে ১২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
বুধবার (৯ আগস্ট) কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক বেগম সেলিনা আক্তার এ রায় দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা আদালতের অতিরিক্ত পিপি মুজিবুর রহমান বাহার।
জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৪ এপ্রিল কুমিল্লার কোটবাড়ির সালমানপুর এলাকায় দুই রাউন্ড গুলিভর্তি একটি বিদেশি রিভলবার ও একটি মোটরসাইকেলসহ ইলিয়াসকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১১। অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় সেসময় র্যাব বাদী হয়ে সদর দক্ষিণ মডেল থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা দায়ের করে। র্যাবের করা মামলায় দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ আদালত ১২ বছরের রায় ঘোষণা করে। তবে এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন না ইলিয়াস।
জেলা অতিরিক্ত পিপি মুজিবুর রহমান বাহার বলেন, অস্ত্র আইনের মামলায় ১৯ (এ) ধারায় ১২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এবং আসামী এখনও পর্যন্ত পলাতক রয়েছে।
এবিষয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, আমি খুব দ্রুত আদালতের কাছে আন্মসমর্পণ করবো এবং এই বিষয়ে উচ্চ আদালতে রিট করবো।
উল্লেখ্য, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষাবর্ষে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের লোক প্রশাসন বিভাগে ভর্তি হন ইলিয়াস৷ তারপর থেকেই বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়ে প্রভাব বিস্তার করতে থাকেন ইলিয়াস। ২০১৭ সালের ২৮ মে শাখা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটিতে ইলিয়াসকে সভাপতি করা হয়। এতে তার প্রভাব আরও বেড়ে যায়। শিক্ষাজীবন শেষ হলেও ১৫ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছিলেন এই ইলিয়াস তার বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগে হস্তক্ষেপ, টেন্ডারবাজি, শিক্ষকের ওপর হামলা, ছাত্রীদের নিপীড়ন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও সাংবাদিকদের মারধর এবং কাজী নজরুল ইসলাম হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. খালিদ সাইফুল্লাহ হত্যায় মদদদাতার অভিযোগে গণমাধ্যমে বহুবার সংবাদের শিরোনামও হয়েছেন এই নেতা।
অবশেষে মেয়াদ শেষ হওয়ার সাড়ে চার বছর পর মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়া, সাংগঠনিক নিষ্ক্রিয়তা, শৃঙ্খলাহীনতা ও গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কার্যকলাপে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ এনে ৬ মার্চ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।