তাফহীমুল আনাম, কক্সবাজার: শীঘ্রই রেলের স্বাদ পেতে যাচ্ছে কক্সবাজার। আগামী সেপ্টেম্বরে দোহাজারী-কক্সবাজার রেল লাইন চালু হওয়ার কথা রয়েছে। সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে রেল লাইন প্রকল্পের কাজ। আজ থেকে ৯২ বছর আগে এই রেললাইন দোহাজারী পর্যন্ত এসেছিল। এরপর স্বাধীনতার ৫২ বছর পর সম্প্রসারিত হয়েছে আরও ১০০ কিলোমিটার রেল পথ। অবশেষে সেই দীর্ঘ অপেক্ষার পালা শেষ হতে যাচ্ছে।
প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে নতুন এই রেল লাইনের উদ্বোধন করবে জানা গেছে। এই লাইন চালু হলে সারাদেশের মানুষের ট্রেনে করে পর্যটন শহর কক্সবাজারে যাওয়ার স্বপ্ন পূরণ হবে।
কক্সবাজার সদর থেকে ৭ কি.মি পূর্ব উত্তরে ঝিলংজা ইউনিয়নের হাজি পাড়া এলাকায় ২৯ একর জমির উপর নিমার্ণ করা হচ্ছে ঝিনুকের আদলে দৃষ্টিনন্দন আইকনিক রেল স্টেশন। স্টেশনের ভবনটির আয়তন ১লক্ষ ৮২ হাজার বর্গফুট ছয় তলা ভবনটির বিভিন্ন অংশের অবকাঠামো নির্মাণ শেষে চলছে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ শেষ। স্টেশন টিতে আবাসিক হোটেলের পাশাপাশি ক্যান্টিন, লকার গাড়ি পার্কিং ইত্যাদি ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যেখানে পর্যটকরা স্টেশনের লকারে লাগেজ রেখে সারাদিন সমুদ্র সৈকত বা দর্শনীয় স্থান গুলোতে ঘুরতে পারবে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা তাইজুল ইসলাম বলেন,এখন সম্পূর্ণ রুপে আমাদের এই রেল স্টেশন টি প্রস্তুত আমরা এখন সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ গুলো করতেছি। এবং ফিনিশিং এর কাজ চলমান রয়েছে। আশা করছি নির্ধারিত সেপ্টম্বর নাগাদ উদ্বোধনের পূর্বেই আইকনিক রেল স্টেশন টির শতভাগ কাজ সম্পন্ন হবে। তিনি আরো বলেন পর্যটকরা এইখানে ব্যাগ পত্র রেখে সমুদ্র সহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ঘুরাঘুরি করতে পারবে। আমাদের এইখানে আবাসিক হোটেল আছে এবং রেস্টুরেন্ট আছে।
এই রেল লাইন চালু হলে কক্সবাজারে শুধু পর্যটন খাতে নয় ব্যবসা-বাণিজ্যে ও আসবে আমুল পরিবর্তন বলছে ব্যবসায়ী ও সচেতন মানুষেরা। পাশাপাশি স্বল্প সময়ে কম খরচে কৃষি পণ্য মাছ লবণ পরিবহন করা যাবে। এতে কক্সবাজারের পর্যটন সহ সামগ্রিক অর্থনীতিতে বৈকল্পিক পরিবর্তন আসবে।
সংশ্লিষ্ঠ কতৃপক্ষ এই প্রতিবেদক কে জানিয়েছেন, এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আইকনিক দৃষ্টিনন্দন রেল স্টেশনের কাজের অগ্রগতি সম্পূর্ণ হয়েছে ৯১ শতাংশ। কতৃপক্ষ আরো জানান মূল ভবণ ও অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ প্রায় শেষ এখন চলছে সৌন্দর্য বর্ধন কারু কাজ।
কক্সবাজার জেলা প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি এইচ এম ফরিদুল আলম শাহীন বলেন, কক্সবাজার পর্যটন শিল্পের আরো সম্প্রসারণ এবং পর্যটকের সংখ্যা বহুগুনে বেড়ে যাবে। চট্রগ্রাম কক্সবাজার রেল লাইন চালু হলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন অধ্যায় তৈরী হবে। পাশাপাশি সময় ও অর্থ দুইটি সাশ্রয় হবে।বিশেষ করে পর্যটন সহ অন্যান্য ব্যবসা-বাণিজ্য গুলো অনেক বেশি প্রসারিত হবে।
কক্সবাজার চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী খোকা বলেন, আমাদের ট্যুরিজম সেক্টরটি ডেভেলপ হবেই পাশাপাশি আমাদের এখানে উৎপাদিত পণ্য যেগুলো আমাদের ট্রান্সপোর্টেশন হবে যেটা আমাদের এখন বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় রাস্তায় বা অন্যান্য জায়গায় বিশেষ করে এই খান থেকে বিভিন্ন স্থানে লবণ, পান, মাছ রেফ্রিজার কন্টেইনার করে যাবে। সুতরাং সব কিছু মিলিয়ে ব্যবসায়ীক ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
একেবারে শেষ প্রান্তে কক্সবাজার আইকনিক রেল স্টেশনের নির্মাণ কাজ। আগামী সেপ্টেম্বর নাগাদ এই রেল স্টেশনের কাজ হলে দীর্ঘ ৫২ বছরের শেকল ভেঙ্গে রেল আসবে কক্সবাজার। আর এই রেল আসার মধ্যে দিয়ে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে পর্যটন নগরীতে।