আত্মত্যাগ ও মূল্যবোধের প্রতিফলন ঘটনার মধ্যে দিয়ে উৎযাপিত হল মুসলমানদের দ্বিতীয় বড় ধর্মীও উৎসব পবিত্র ইদুল আযহা। পবিত্র ইদুল আযহা জানান দেয়, শান্তি ও সমৃদ্ধির বার্তা। মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দ্যেশ্যে পশু কোরবানি করেন। কোরবানির ঈদ মুসলিমদের কাছে আলাদা গুরুত্ব বহন করে থাকে। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও ত্যাগের মহিমা অনুধাবন করতে পারে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সেই ভাবনাগুলোই তুলে ধরেছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাকিবুল ইসলাম।
ঈদ মানেই অসীম আনন্দের সমাহার
ঈদ বলতেই আনন্দ। ছোটবেলায় ঈদ বলতে আমরা বুঝতাম নতুন জামা, এলাকার ছোট-বড় সবাই একসঙ্গে ঘুরে বেড়ানো, বড়দের সালাম করে সালামি নেয়া, বাসায় ভালো-মন্দ খাবার খাওয়া, একে অন্যের বাসায় ঈদের দাওয়াত। পরিবার, বন্ধু বান্ধব, প্রিয়জন সবার সঙ্গে ঈদের সময়গুলো দারুণভাবে কেটে যাওয়ার এক আবেগঘন মুহূর্ত।সময়ের সঙ্গে অনুভুতি বদলায়, মানুষ বদলায়, ব্যস্ততা শুরু হয়। এখন ঈদ বলতে পরিবারের সবাই একসঙ্গে হওয়া, সবাই মিলে সুন্দর কিছু মুহূর্ত ভাগাভাগি করা। একসাথে খাওয়া দাওয়া আর আত্মীয়-স্বজন সবার সঙ্গে আনন্দঘন মূহুর্ত তৈরি করা। তবে হ্যাঁ ছোটবেলার ঈদগুলো বেশি সুন্দর ছিল। ঈদ কার্ড, নতুন জামা, সকালে আম্মুর হাতে সেমাই হালুয়া দিয়ে ঈদের দিনগুলো শুরু হতো। সারাবছর বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত সময় পার করার পর বছরের এই দিনে এসে সবাই একসঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়ার এই মূহুর্তগুলো সত্যিই অনেক সুন্দর।
রাতিকুল ইসলাম রাহুল
শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ
অন্যের আনন্দে হোক আমার ঈদ উদযাপন
ঈদ মানে আনন্দ ঈদ মানে খুশি। কিন্তু ঈদল-আযহার সেই আনন্দের প্রকৃতি কিছুটা ভিন্ন ধর্মী। আনন্দ অথবা খুশি বিলিয়ে দেয়ার মাঝেই যেনো এই আনন্দ খুজে পাওয়া। গোসল করে, সেমাই খেয়ে ঈদের নামাজ আদায় করার পর এলাকায় প্রতিবেশী, ভাই,বন্ধু, কাছের মানুষ গুলোর সাথে আলিঙ্গনের মাধ্যমে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়। সকলে মিলে কবর জিয়ারত করে কবরের বাসিন্দাদের জন্য দোয়ার পর্ব শেষ করলাম। তারপরই ছুরি,দা নিয়ে কোরবানির জন্য প্রসুতি নিতে থাকলাম। কখন ইমাম সাহেব আসবেন জবাই দিতে। এবার এই কোরবানির গোস্ত প্রতিবেশী, আত্মীয়,গরীবদের মাঝে বিলানোর পালা। গোস্ত বিলি করার কাজটি সম্পন্ন করতে করতে সন্ধ্যা গড়িয়ে গেল। সন্ধ্যা বেলা থেকে খুব কাছের কিছু বন্ধুদের সাথে আড্ডার মাধ্যমে ঈদের দিনের সমাপ্তি ঘটলো। কোরবানির ঈদ আমাদের ত্যাগের শিক্ষা দেয়।
মো.আমিনুর রাহমান, শিক্ষার্থী, দর্শন বিভাগ
চিত্রার পাড়ে ইদ উদযাপন
ইদুল আজহা হলো “ত্যাগের উৎসব”। সারাবছর নিজের পরিবার ছেড়ে একা ঢাকায় থাকার পর ইদ উপলক্ষে চিত্রা নদীর পাড়ে, নিজের চিরচেনা সেই গ্রামে, আপন মানুষ গুলোর সাথে মিলিত হলে ত্যাগের মহিমা হৃদয়ের গভীর থেকে অনুভব করা যায়। মা বাবার পরম মমতায় সবকিছুতেই সম্পূর্ণ আনন্দ অনুভব হয়। ইদের দিন যতটুকু সম্ভব সময় মাকে দেওয়ার এবং যতটুকু সম্ভব তাকে হেল্প করার চেষ্টা করেই দিনের অর্ধেকের বেশি সময় পার হয়ে গিয়েছে। বিকালে বাবা আর ছোট বোনের সাথে প্রিয় চিত্রা ব্রিজে কিছু সময় পার করি, এরপর স্কুলের বন্ধুদের সাথে চিত্রা নদীর পাড়ে সূর্যাস্ত দেখে সন্ধ্যা নামে। রাতে কাজিনদের সাথে হাসি আনন্দে কিছু সময় কাটিয়ে, মায়ের সাথে অনেকক্ষণ গল্প করলাম। সবকিছু মিলে সত্যিই অসাধারণ সুন্দর ছিলো এবারের ইদুল আজহা।
জান্নাতুল ফেরদৌস ইথু, শিক্ষার্থী, ইতিহাস বিভাগ
ঈদ হচ্ছে পরিবারের সাথে কাটানো শ্রেষ্ঠ সময়
ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে মা বাবা ভাই বোনকে নিয়ে কাটানো সুন্দর সব মূহুর্ত। ঈদের দিনটি শুরু হলো সকালে বাবা ভাইয়ের ঈদগাহে গিয়ে নামাজ আদায়ের মাধ্যমে। এরপর কুরবানি দেয়ার মাধ্যমে তাকওয়া অর্জনের চেষ্টা। তারপর আত্মীয়-স্বজন পাড়া প্রতিবেশী দুখী দরিদ্রদের মাঝে মাংস বিতরণ। এরপর মামনী শুরু করেন মাংস রান্না। আমি আমার ভাই বসে যাই সেই কাঙ্খিত কাজে অর্থাৎ ভুড়ি পরিষ্কার করতে। মাংস রান্না শেষ এ মামণি পরম যত্ন আমাকে আর ভাইয়াকে খাইয়ে দেন। এর এক অন্য আনন্দ যা বলার অপেক্ষা রাখে নাহ। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে আমি, আমার ভাই লেগে যাই সালামি আদায় করতে। তারপর রাতে পরিবারের সবার সাথে উনো খেলতে বসলাম। এটা এই ঈদের সেরা মূহুর্ত। বছরের প্রত্যেকটা দিন কাটে ব্যস্ততায়।ঈদের দিন পৃথিবীর সকল ব্যস্ততা ভুলে কাটাই একটা সুন্দর দিন।
মেহনাজ বিনতে আলী নাসা, শিক্ষার্থী, লোকপ্রশাসন বিভাগ