The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
রবিবার, ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪

বিদেশে উচ্চশিক্ষা: কিভাবে আইইএলটিএস (IELTS) প্রস্তুতি নিবেন?

উচ্চশিক্ষা গ্রহণে বিদেশে যেতে চাইলে আপনার শুধু আর্থিক সামর্থ্য থাকলেই চলবে না, প্রস্তুতি হিসেবে আপনাকে পড়ালেখার পাশাপাশি বেশ কয়েক রকম পরীক্ষাও দিতে হতে পারে। আপনার ইংরেজি ভাষার উপর দক্ষতা কেমন তা প্রমান করতে আপনাকে দুইটি পরীক্ষায় বসা লাগতে পারে। যার একটি হলো আইইএলটিএস এবং অন্যটি হলো টোয়েফল।

আপনি আইইএলটিএস পরীক্ষা দিবেন নাকি টোয়েফল দিবেন তা নির্ভর করে আপনি কোন দেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে যেতে ইচ্ছুক সেটার উপর। যেমন ধরেন, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া সহ কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোতে পড়তে যেতে চাইলে ইংরেজিতে নিজের দক্ষতার প্রমাণ হিসেবে আপনাকে আইইএলটিএস (IELTS) স্কোরের তথ্য দিতে হয়। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা প্রভৃতি দেশে ইংরেজিতে নিজের দক্ষতার প্রমাণ হিসেবে টোয়েফল (TOEFL) স্কোর প্রয়োজন হয়। উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য স্যাট (SAT), জিআরই (GRE), জিম্যাট (GMAT) পরীক্ষাগুলোতেও অংশ নেওয়া লাগতে পারে।  তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার আবেদন করার আগেই পরীক্ষা দিতে বসা উচিত। কারণ এসব স্কোর দু’বছর পর্যন্ত কার্যকর থাকে।

এবার তাহলে চলুন এই পরীক্ষগুলো সম্পর্কে অল্প বিস্তর জেনে নেওয়া যাক!

আইইএলটিএস (IELTS) কি?

প্রায় ২১ বছর আগে এই পদ্ধতি চালু হয়। শব্দটির সাথে আমরা কম-বেশি সকলেই পরিচিত। রাস্তায় রাস্তায় আমরা আইইএলটিএস (IELTS) এর বিজ্ঞাপন দেখে অভ্যস্ত! সেই আইইএলটিএস (IELTS) এর পূর্ণ রূপ হলো: International English Language Testing System. এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১৩৫ টিরও বেশি দেশের সাড়ে সাত হাজারেরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ এই আইইএলটিএস পদ্ধতিকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এই পদ্ধতির আন্ডারে মূলত চারটি দক্ষতা (লেখা, বলা, শোনা, পড়া) যাচায় করা হয়ে থাকে। [ওয়েবসাইট: http://www.ielts.org]

আইইএলটিএস (IELTS) যেভাবে হয়ে থাকে:

আইইএলটিএস পরীক্ষা মূলত চারটি মডিউল (Listening, Reading, Writing, Speaking) এর উপর হয়ে থকে। প্রত্যেকটি মডিউলের ব্যান্ড নম্বর থকে সর্বমোট ৯। এক্ষেত্রে ৬ কিংবা ৬ এর উপরের নাম্বারকে মূলত স্ট্যান্ডার্ড নম্বর হিসেবে গণ্য করা হয়। পরীক্ষা ২ ধরণের হয়। একাডেমিক এবং জেনারেল। পড়াশুনার জন্য একাডেমিকটা বরাদ্দকৃত। জেনারেলের সাথে শুধুমাত্র পার্থক্য Reading আর Writing এ।

বাংলাদেশে ব্রিটিশ কাউন্সিল এবং আইডিপি এই পরীক্ষা নিয়ে থাকে। মাসে ৩ বার নেওয়া হয় এই পরীক্ষা। একজন পরীক্ষার্থী জীবনে যত খুশি ততবার এই পরীক্ষা দিতে পারবেন। আপনার হাতে যদি একের অধিক রেজাল্ট থাকে তাতেও কোন সমস্য নেই। সাধারণত পরীক্ষা দেয়ার দিন থেকে ১৩ তম দিনে রেজাল্ট পাব্লিশ করা হয়।

আইইএলটিএস (IELTS) পরীক্ষার প্রস্তুতি:

আইইএলটিএস পরীক্ষার মাধ্যমে আপনি ইংরেজিতে কতটা দক্ষ সেটা যাচাই করা হয়ে থাকে।  পরীক্ষা কঠিন হলেও আপনি যদি সঠিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে পারেন তাহলে এই পরীক্ষায় ভাল করা খুবই সম্ভব। আপনার যদি ইংরেজিতে দক্ষতা থেকেও থাকে তবুও প্রস্তুনি নেওয়া আবশ্যক। প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ থেকে ৬০ মিনিট সময় আইইএলটিএস প্রস্তুতি নেওয়ার পিছে খরচ করা উচিত। একজন শিক্ষার্থীকে অন্তত ৩ মাস ধরে এই পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।

কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে IELTS পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের বেশ কিছু মডেল পাওয়া যায়। বিভিন্ন সময়ের  IELTS এর মডেল প্রশ্ন সলভ করলেও প্রশ্ন সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়৷ ঢাকার নীলক্ষেত থেকে খুব কম টাকা দিয়েই আপনি এই মডেল টেস্টের বইগুলো সংগ্রহ করে নিতে পারবেন।

IELTS সম্পর্কিত সবধরণের তথ্য পাবেন ব্রিটিশ কাউন্সিল এবং আইডিপি বাংলাদেশ থেকে। ব্রিটিশ কাউন্সিলের লাইব্রেরির সদস্য হয়ে গেলে তাদের লাইব্রেরি থেকে আপনি IELTS সম্পর্কিত অসংখ্য বই পড়তে পারবেন। মূলত কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়, আইডিপি অস্ট্রেলিয়া এবং ব্রিটিশ কাউন্সিলের সরাসরি তত্ত্বাবধানেই IELTS পরীক্ষা হয়। তাদের কাছ থেকেই যখন সরাসরি তথ্য পাচ্ছেন, তখন অন্য কোথাও যাওয়াটা মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ নয়। IELTS নিবন্ধনের সময় প্রস্তুতির জন্য দুটি ছোট বই দেওয়া হয়। এগুলো ভালোমতো পড়ুন ও সমাধান করুন। ব্যাকরণের অনেক খুঁটিনাটি জানতে পারবেন।

প্রথমেই মডেল প্রশ্নগুলো সমাধান করার চেষ্টা করুন। পরীক্ষায় বানান ভুলের জন্য নম্বর কাটা যায়। তাই নিজের বানান ঠিক রাখার চেষ্টা করবেন। ভুল উত্তর দিলে কোনো নম্বর কাটা যায় না। তাই সব প্রশ্নেরই উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবেন। Speaking এ ভাল করতে হলে পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের সাথে ইংরেজিতে কথা বলা শুরু করুন৷ এতে আপনার জড়তা কমবে। ব্রিটিশ কাউন্সিল সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নির্দিষ্ট ফির বদলে মক টেস্ট দেওয়া যায়। এই প্রতিষ্ঠান গুলোতে পরীক্ষা দিয়ে পরীক্ষার আগেই নিজের দক্ষতা যাচায় করে দেখতে পারেন।

সহায়ক বই:  

আইইএলটিএস এর উপরে বাজারে হাজারো রকমের বই পাওয়া যায়। তবে সব বইয়ে ভাল মানের কিছু নাও পেতে পারেন৷ এখানে IELTS পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন এমন শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে তুলনামূলক ভাবে দরকারী এবং উপযোগী কিছু বইয়ের নাম উল্লেখ করা হলো।

Listening এর জন্য: লিসেনিং-এর জন্য Cambridge-এর সিরিজ আছে। খুব ভালো। তবে প্রথম দুটো মানে ১ এবং ২ খুব সাধারণ মানের। ভালো কিছু শেখা যাবে ৩,৪,৫,৬-এই বইগুলো থেকে। এই বইগুলো সিডি সহ কিনতে হবে। কারো কাছে যদি সফট কপি থাকে সেটাও সংগ্রহ করতে পারেন।

Reading এর জন্য: বেশিরভাগ শিক্ষার্থীদের মতে রিডিং-এর জন্য Saifur’s-এর বইটা সহজ এবং বোধগম্য।

Writing এর জন্য: রাইটিং-এর জন্য ভালো বই হচ্ছে Moniruzzaman’s IELTS Writing বইটি।

Speaking এর জন্য: স্পীকিং-এর জন্য Khan’s Cue-Card 1 এবং 2 বেশ কার্যকরী।

আইইএলটিএস (IELTS) পরীক্ষার স্কোর:
শুন্য থেকে নয় এই স্কেলে IELTS এর স্কোর দেওয়া হয়। চারটি অংশের জন্য আলাদা আলাদা ব্যান্ড স্কোর দেওয়া হয়। এগুলোর গড় করে সম্পূর্ণ আরেকটি স্কোর দেওয়া হয়। এখানে কৃতকার্য বা অকৃতকার্য হওয়ার কোনো বিষয় নেই। আপনি আপনার প্রয়োজনীয় স্কোর করতে পারলেই পরীক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্য সফল হবে। ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চাইলে সাধারণত সাড়ে ছয় থেকে সাড়ে সাত পেতে হয়।

IELTS স্কোর স্কেল: IELTS স্কোরসমূহের শুরু ১ থেকে ৯ পর্যন্ত। স্কোরগুলো হচ্ছে –

ব্যান্ড ৯: দক্ষ ব্যবহারকারী

ব্যান্ড ৮: খুব ভালো ব্যবহারকারী তবে কিছু জায়গায় সমস্যা রয়েছে

ব্যান্ড ৭: ভালো ব্যবহারকারী, চলনসই

ব্যান্ড ৬: পর্যাপ্ত ব্যবহারকারী

ব্যান্ড ৫: পরিমিত ব্যবহারকারী

ব্যান্ড ৪: সীমিত ব্যবহারকারী

ব্যান্ড ৩: অতিরিক্তমাত্রায় সীমিত ব্যবহারকারী

ব্যান্ড ২:ব্যবহারকারী নয়

ব্যান্ড ১: যারা অপ্রাসঙ্গিক উত্তর দিয়েছে বা ‍ যারা কমিউনিকেট করতে ব্যর্থ হয়েছে

ব্যান্ড ০: পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেনি বা উত্তর দেয়নি।

যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া প্রভৃতি দেশে প্রধান ভাষা ইংরেজি হওয়ায়, তাল মেলাতে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের বিশেষ কোনো অসুবিধা হয় না। কিন্তু চীন, জাপান, রাশিয়া, ফ্রান্স বা জার্মানীর মত দেশগুলোয় প্রধান ভাষা ইংরেজি নয়। তাদের রয়েছে নিজেদের মাতৃভাষা। অনেক ক্ষেত্রে এসব দেশে পড়তে যেতে হলে ঐ দেশের ভাষাটা শিখে নিলে সুবিধা হয়। কিন্তু এসব দেশেও ইংরেজীতেও পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.