রাকিব মাহমুদ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা পরবর্তী আবেদনে নবীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ভর্তিচ্ছুদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়।
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে প্রতিষ্ঠিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বয়স মাত্র সাত বছর হলেও শিক্ষা, গবেষণা ও সংস্কৃতিতে অভুতপূর্ব সাফল্য পেয়েছে দেশের এই নবীন বিশ্ববিদ্যালয়টি।
২০১৮ সাল থেকে প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির। গত পাঁচ বছরে ধারাবাহিকভাবে শিক্ষা, গবেষণা এবং সাংস্কৃতিক অগ্রগতিতে নবীন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি অনেক পুরনো বিশ্ববিদ্যালয়কে ছাপিয়ে ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় এগিয়ে রয়েছে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে প্রতিষ্ঠিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য প্রফেসর ড.শাহ আজমের দিকনির্দেশনা ও শিক্ষকদের নিরলস পরিশ্রমে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা, গবেষণা ও সংস্কৃতিতে দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় সিরাজগঞ্জের একটি প্রত্যন্ত উপজেলায় অবস্থিত হলেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষকদের শিক্ষাদান ও দিকনির্দেশনায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে উন্নতমানের শিক্ষা পাচ্ছে।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা,গবেষণা ও সংস্কৃতির উন্নয়নের ফলস্বরূপ গুচ্ছে শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় নবীন বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর থেকে এগিয়ে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়।
বিগত ১০ বছরে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী আবেদন করেছে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২২৫ টি আসনের বিপরীতে মোট আবেদন করেছেন ৬৪৭১ জন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী । গড়ে প্রতি আসনের বিপরীতে আবেদন করেছে ২৯ জন ভর্তিচ্ছু। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায়ও গতবছরের তুলনায় ৩ ধাপ এগিয়ে ১৫ তম স্থানে অবস্থান করছে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়।
সমসময়কালীন প্রতিষ্ঠিত রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন পড়েছে ৩৮৫৫ টি। গাজিপুরে প্রতিষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিশ্ববিদ্যালয় ও শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেছে যথাক্রমে ১২৪২ জন, ৫৬৭১ জন, ৪৭০৬ জন। এছাড়াও কনিষ্ঠতম বিশ্ববিদ্যালয় চাঁদপুরে আবেদন পড়েছে ১৮১১ টি এবং কিশোরগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫৭৬ টি। এছাড়াও ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকেও ৭১৩ জন বেশি ভর্তিচ্ছু রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেছে।
এবারের সমন্বিত আবেদনে বিগত বছরের তুলনায় বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক আবেদন কমেছে কয়েকগুণ। ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে সবচেয়ে বেশি আবেদন ছিল নোবিপ্রবিতে ৬৮১৪২ টি; যা এবার মাত্র ২০০৮০ টি, যা প্রায় ৭০.৫ শতাংশ কম। অন্যদিকে জবিতে ৩১ শতাংশ, ইবিতে ৩৬, শাবিতে ৪০ শতাংশ আবেদন কমেছে। সে তুলনায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন কমেছে মাত্র ১১ শতাংশ।
প্রসঙ্গত, আবেদনের সংখ্যানুসারে শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় গত বছর নবীন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় ছিল ২২ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ১৮ তম, সেখানে এবার শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় বিশ্ববিদ্যালয়টি ৩ ধাপ এগিয়ে ১৫ তম অবস্থান অর্জন করেছে।
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় চান্সপ্রাপ্ত কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা যায়, এবারের ওয়েবম্যাট্রিক্স র্যাংকিং অনুসারে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় নতুন হয়েও পড়াশোনার দিক থেকে অনেকটা অগ্রগতি লাভ করেছে। তাই এই অগ্রগতির সামিল হয়ে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে তারা রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেছে।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রগতির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো: শাহ্ আজম জানান, ২০২৩ সালের ওয়েবম্যাট্রিক্স র্যাংকিং অনুসারে গত ১০ বছরে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ২য় অবস্থানে আসে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় এবং এই তালিকায় শীর্ষে ছিল মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়।
তিনি আরও বলেন, আমাদের নিরলস পরিশ্রম শিক্ষার্থীদের উজ্জীবিত করেছে। এছাড়া, জিএসটির গুচ্ছ ভর্তির সুযোগটিকেও আমরা যথাযথভাবে কাজে লাগাতে সক্ষম হয়েছি। একইসাথে গবেষণা, শিক্ষা ও সহশিক্ষামূলক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় অচিরেই রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় তার স্বরূপ ফিরে পাবে বলে আমার প্রত্যাশা। গত মাসে আমরা প্রথমবারের মতো একটি আন্তর্জাতিক কনফারেন্সের আয়োজন করেছি। আমরা মনে করি, এসব কর্মকাণ্ড রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে সৃজনশীল শিক্ষা পরিবেশ তৈরির ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করব।