বাকৃবি প্রতিনিধিঃ সম্প্রতি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে প্রাণির উৎপাদন বিষয়ক কয়েকটি নন-ক্যাডার পদে পশুপালন গ্রাজুয়েটদের পাশাপাশি ভেটেরিনারি সায়েন্স ও এনিমেল হাজবেন্ড্রি তথা কম্বাইন্ড ডিগ্রিধারীদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এর প্রতিবাদে ওই পদসমূহে শুধুমাত্র পশুপালন ডিগ্রিধারীদের অন্তর্ভূক্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের (বাকৃবি) পশুপালন অনুষদ ছাত্র সমিতি।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) দুপুর একটায় পশুপালন অনুষদীয় সম্মেলন কক্ষে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পশুপালন অনুষদ ছাত্র সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত সরকার। এর আগে গত মঙ্গলবার কম্বাইন্ড ডিগ্রি চালুর দাবিতে পৃথক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাকৃবির ভেটেরিনারি অনুষদ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে প্রাণি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা, পোল্ট্রি উন্নয়ন কর্মকর্তা, প্রাণি উৎপাদন কর্মকর্তা, জ্যু কর্মকর্তা, সহকারি ব্যবস্থাপক কর্মকর্তা পদে পশুপালন গ্রাজুয়েটদের পাশাপাশি ভেটেরিনারি সাইন্স ও এনিমেল হাজবেন্ড্রি তথা কম্বাইন্ড ডিগ্রিধারীদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই পদগুলো শুধু মাত্র পশুপালন ডিগ্রিধারীরা যোগ্য দাবিদার। ভেটেরিনারি সাইন্স ও এনিমেল হাজবেন্ড্রি তথা কম্বাইন্ড ডিগ্রি মূলত ডিভিএম ডিগ্রি।
সংবাদ সম্মেলনে কম্বাইন্ড ডিগ্রির প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে জানতে চাইলে ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. রায়হান হাবিব বলেন, ভেটেরিনারি বা কম্বাইন্ড ডিগ্রির সাথে পশুপালন ডিগ্রির কোনো মিল নাই। বাকৃবির ভেটেরিনারি ডিগ্রি বিশ^মানের। সেখানে কম্বাইন্ড ডিগ্রির মাধ্যমে তাঁরা ভেটেরিনারি ডিগ্রির উচ্চমানকে নি¤œপর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার হীন প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। বর্তমান যুগে যেকোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ প্রয়োজন। সেখানে দুটো ভিন্ন ভিন্ন ডিগ্রিকে এক করার প্রস্তাবনা একেবারেই যুক্তিযুক্ত নয়।
এসময় পশুবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, ভেটেরিনারি ও কম্বাইন্ড ডিগ্রির মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য নাই। কম্বাইন্ড ডিগ্রিধারী কখনই পশুপালন ডিগ্রিধারীর সমকক্ষ নয়। আমার মনে হয় আমাদের আরো বেশি স্বতন্ত্রভাবে কাজ করতে হবে।
এর আগে ভেটেরিনারি অনুষদের এক সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ড. মো.মকবুল হোসেন বলেন, আলাদা আলাদা ডিগ্রি চালু থাকায় শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার পাশাপাশি দেশের প্রাণিসম্পদও ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। প্রান্তিক পর্যায়ে সেবাদানের ক্ষেত্রে আমাদের শিক্ষার্থীরা চাহিদার সম্পূর্ণ সেবা দিতে পারছে না। এতে এ বিশ^বিদ্যালয়ের আলাদা ডিগ্রীধারীদের চাকরির ক্ষেত্রে সুযোগ কমছে। এতে দেশের আমাদেও গ্র্যাজুয়েট, দেশের কৃষকের পাশাপাশি প্রাণিসম্পদ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। তাই দেশের প্রাণিসম্পদকে বিকশিত করতে দ্রæততার সাথে সকল বিশ^বিদ্যালয়ে একক ডিগ্রি চালু করতে হবে। দক্ষ দক্ষ গ্র্যাজুয়েট গড়ে তুলতে এর কোন বিকল্প নেই। এতে দেশ ও জাতি উভয়ই উপকৃত হবে।