The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
রবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪

নির্যাতনের পর ভুক্তভোগীকে জবি ছাত্রলীগ নেত্রীর হুমকি

জবি প্রতিনিধি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ছাত্রলীগ কর্মীদের দ্বারা চারুকলা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাম হাফসা বিনতে নূরকে তিন ঘন্টা কক্ষে আটকে নির্যাতনের ঘটনার লোহমর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী।

বৃহস্পতিবার (১৮ মে) দুপুরে সাংবাদিকদের তিনি সেদিন রাতের নির্যাতনের ঘটনা তুলে ধরেন। নির্যাতনের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হাফসা কেঁদে ফেলেন।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে বাইরে থেকে হলে ফেরার পরপরই অন্য কক্ষের আবাসিক ছাত্রী তন্নী আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। পরে তার সাথে একটু কথা-কাটাকাটি হয়। পরে আমি আমার অন্য কক্ষের বান্ধবীদের নিয়ে নিচে আরকজন হাউজ টিউরটরের কাছে যাই। ততক্ষণে তিনি হল থেকে বের হয়ে গেছেন। পরে কক্ষে ফিরে আসার পর দেখি ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত অন্য ৮-৯ জনেরও বেশি মেয়ে আমার রুমে বসে আছে। রুমে ঢুকার পরপরই তারা দরজা আটকে দেয়। আমাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে।’

তিনি আরও বলেন, এই সময় গালিগালাজের পাশাপাশি আমার গায়েও হাত তুলে। রিশাত নামের একটি মেয়ে (পরে আমি তার পরিচয় জেনেছি) আমার গায়ে হাত তুলে। তার সাথে আরও কয়েকজন আমাকে মারধর করে। একপর্যায়ে ১৩তম ব্যাচের নাজমুন নাহার স্বর্ণা পাটোয়ারী আমাকে বলে, “তোর কপাল ভালো যে আমার মেয়েরা এখনও তোর প্যান্ট খুলে নেয়নি।” পরে তারা আমাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে অনেক হেনস্তা করে। বিভিন্ন সময়ে আরও সেসব নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করে রাখে।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি আরও বলেন, রাত সাড়ে ১২ টার দিকে সহকারী হাউজ টিউটর মানসুরা বেগম ম্যাম আসেন। তার সামনেও তারা মাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে। আমি ঘটনার বর্ণনা দিতে চাইলেও ম্যাম আমার কথা শুনতে চায়নি। বরং আমাকে দিয়েই আরও স্যরি বলায়। এঘটনায় আমি মানসিভাবে খুব ভেঙ্গে পড়ি। পরে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই।’

এবিষয়ে জানতে অভিযুক্তদের একজন নাজমুন নাহার স্বর্ণা পাটোয়ারীকে মুঠোফোনে বার বার কল দেওয়া হলেও তিনি সাড়া দেননি। তবে এর আগে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি ঘটনা শোনার পর আরও গিয়ে ওদের শান্ত করার চেষ্টা করি। কিন্তু হাফসাকে মারধর বা গালিগালাজের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। একপর্যায়ে আমি ওদের রুমে ম্যামকে রেখে নিচে চলে আসি। আমি আসার পরে নাকি হাফসা আমাদের ছাত্রলীগের মেয়েদের গাঁয়ে হাত দিয়েছে।’

এবিষয়ে জানতে ঘটনার সময় উপস্থিত সহকারী হাউজ টিউটর মানসুরা বেগমের সাথে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দিপীকা রাণী সরকারের কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রক্টরিয়াল বডির সাথে মিটিংয়ে ব্যস্ত আছেন বলে ফোন কেটে দেন।

এর আগে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে হলে এমন ঘটনা ঘটছে। এধরণের ঘটনায় আমি শঙ্কিত। আজ (বুধবার) অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা আলোচনায় বসেছি। তারপর দু-পক্ষকে ডেকে বিষয়টি সমাধান করে দিয়েছি। এরপর থেকে যদি কেউ এরকম কাজের সাথে জড়িত হয় তাহলে তাদের সিট বাতিল হবে।’

এর আগে, মঙ্গলবার (১৬ মে) রাত ৯ টা থেকে সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ১২০৩ নম্বর কক্ষে চারুকলা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হাফসা বিনতে নূরকে তিন ঘন্টা কক্ষে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠে ছাত্রলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীরা হলেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী তন্বী, রিসাত, ফাল্গুনী আক্তার, নিনজা শিকদার , ইরা ও নাজমুন নাহার স্বর্ণা পাটোয়ারী।

এ ঘটনার পর বুধবার (১৭ মে) হল প্রভোস্টের মাধ্যমে উপাচার্য বরাবর অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.