বাংলাদেশ একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রবণ এলাকায় অবস্থিত। ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, পাহাড়ধসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রায় হানা দেয় এই জনপদে। এই জনপদে ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা প্রায় হানা দেয়। এই জনপদের অবস্থানগন কারনে প্রাকৃতিক দুর্যোগুলো এড়ানোও যায় না। কিছুদিন আগেও বন্যায় পুরো সিলেট বিভাগ তলিয়ে যায়। বিভিন্ন সময়ে কিছু প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় লন্ডভন্ড করেছে এই জনপদকে। রেখে গেছে ধ্বংসের ইতিহাস।
গত কয়েকদিন যাবত দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি ঘণীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’য় পরিণত হয়েছে। মোখার অগ্রভাগ ১৪ মে সকাল ৬টার পর থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে চট্টগ্রাম উপকূলে আঘাত হানার আশঙ্কা রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় আসলে কি, কিভাবে সৃষ্টি হয়?
কোন একটি স্থানে যখন বাতাস অতিমাত্রায় গরম হয়ে যায় তা তখন স্থান পরিবর্তন করে উপরে উঠে যেতে থাকে। এটাই বাতাসের ধর্ম। এর ফলে ওই নির্দিষ্ট স্থানে বাতাসের চাপ কমে যায় সৃষ্টি হয় নিম্নচাপের। নিম্নচাপের অঞ্চলটিতে বায়ুশূন্যতার কারনে আশপাশের এলাকা থেকে প্রবল বেগে ঘুরতে ঘুরতে বাতাস ধেয়ে আসে নিম্নচাপ কেন্দ্রের দিকে। বায়ুশূন্য নিম্নচাপ কেন্দ্রে বাতাস ঘূর্ণির মতো ঘুরতে ঘুরতে আসার ফলে এই বায়ুপ্রবাহকে বলা হয় ঘূর্ণিঝড়। পরিসংখ্যান অনুযায়ী পৃথিবীতে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ৮০টির মতো ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়। তবে তার বেশিরভাগ উপকূলে আঘাত হানে না। অধিকাংশ সময় এই ঘূর্ণিঝড় গুলো সাগরেই হারিয়ে যায়। সাধারণত সাগরের পানি যখন ৮০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি উত্তপ্ত হলে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির আশংকা সৃষ্টি হয়।
ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণঃ
পূর্বে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হতো সাধারণত অক্ষাংশ-দ্রাঘিমাংশের ওপর ভিত্তি করে। এতে করে করে তৈরি হতো নানা জটিলতা ও বিভ্রান্তি। জটিলতা ও বিভ্রান্তি থেকে রক্ষা পেতে ঘূর্ণিঝড়গুলোর নামকরণের প্রয়োজন দেখা দেয়। আর এই নামকরণের জন্য বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার অধীনে থাকে বিভিন্ন আঞ্চলিক কমিটি, যা তৈরি করা হয় সমুদ্রের ওপর ভিত্তি করে। যেমন উত্তর ভারত মহাসাগরে সৃষ্ট সব ঝড়ের নামকরণ করবে আঞ্চলিক কমিটির ৮টি সদস্য রাষ্ট্র বাংলাদেশ, মিয়ানমার, ভারত, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড ও ওমান।
এবার দেখা যাক বাংলাদেশে আঘাত হানা কয়েকটি প্রলয়ংকারী, বিধ্বংসী ঝড়ের ইতিহাস।
দ্যা গ্রেট বাকেরগঞ্জ ঘূর্ণিঝড় (১৮৭৬)
বরিশালের বাকেরগঞ্জে এই ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানে ১৮৭৬ সালের ৩১ অক্টোবর। ব্রিটিশ শাসনামলে আঘাত হানা এই ঝড়কে ‘দ্যা গ্রেট বাকেরগঞ্জ ঘূর্ণিঝড়’ নামে ডাকা হয়। এই ঘূর্ণিঝড়ের ভয়াবহতার হিসাবে এটি পৃথিবীর ষষ্ঠ প্রলয়ংকারী, ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় হিসাবে গণ্য হয়ে থাকে। ভয়াবহ ওই ঝড়ে প্রাণ হারায় অন্তত দুই লাখ মানুষ। বরিশালের বাকেরগঞ্জ পুরোপুরি প্লাবিত হয়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড়ের ফলে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে। ঘূর্ণিঝড়ে মেঘনা নদীর মোহনা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও বরিশাল উপকূলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি ছিল।
তাছাড়া ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী ভয়াবহ খাদ্য সংকট ও মহামারি দেখা দিলে আরও দুই লাখ মানুষের প্রাণ সংহার হয়। ১৮৭৬ সালের ‘দ্যা গ্রেট বাকেরগঞ্জ ঘূর্ণিঝড়’ এর প্রভাব কাটিয়ে উঠতে ওই অঞ্চলের মানুষের কয়েক বছর সময় লেগে যায়।
গোর্কি (১৯৭০)
১৯৭০ সালের ভায়াবহ এ ঘূর্ণিঝড় ‘ভোলা সাইক্লোন’ নামে পরিচিত। এটিই বাংলাদেশে এ পর্যন্ত রেকর্ডকৃত ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়। এটি সিম্পসন স্কেলে ক্যাটাগরি ৩ মাত্রার ঘূর্ণিঝড় ছিল। ভয়াবহ এই ঘূর্ণিঝড়টি পৃথিবীর সর্বকালের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ংকর প্রাণঘাতী ঝড় হিসেবে ঘোষণা করেছে জাতিসংঘ।
ভোলা সাইক্লোনে কত সংখ্যক মানুষ মারা যায় তার সঠিক হিসাব পাওয়া যায় না। তবে হিস্ট্রিকমের হিসাব অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধপূর্ববর্তী সময়ে সংঘটি ওই দুর্যোগে তিন থেকে পাঁচ লাখ মানুষ মৃত্যুবরণ করে। লাখ লাখ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বাস্তুহারা হয় কোটি মানুষ। চারদিকে শুধুই ধ্বংসলীলা। উদ্ধার হয় লাশের পর লাশ। গোর্কি বা ভোলা সাইক্লোনে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় ভোলা। পরিসংখ্যান অনুযায়ী ভোলার তজুমদ্দিন উজজেলার ১,৬৭,০০০ জন অধিবাসীর মধ্যে ৭৭,০০০ জনই প্রাণ হারান। ২০ ফুটেরও বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় উপকূল। জলোচ্ছ্বাসের কারণে উপকূলীয় অঞ্চল ও দ্বীপগুলো প্লাবিত হয়। দাফনের জায়গা নেই, রাস্তার পাশে গণকবর করে চাপা দেওয়া হলো বহু লাশের।
ঘূর্ণিঝড়টি বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয় ১৯৭০ সালের ৮ নভেম্বর। প্রবল শক্তিশালী হয়ে উত্তর দিকে অগ্রসর হতে থাকে। ১১ নভেম্বর এটির গতিবেগ সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটারে (১১৫ মাইল) পৌঁছায়। ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে এই ঝড়টি আঘাত হানে। ভোলা ছাড়াও বরগুনা, খেপুপাড়া, পটুয়াখালী এলাকায় অনেক মানুষ মারা যান। গবাদিপশু কত মারা গেছে তার তো কোনো হিসাবই নেই।
বব ০১ (১৯৯১)
বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার উপকূলের মানুষের জন্য ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল ছিল এক ভয়ানক রাত। ওই দিন রাত ১২টা নাগাদ ঘন্টায় ২৪০ কিমি গতিবেগের বাতাস সাথে ২০ ফুটের জলোচ্ছ্বাস নিয়ে আসরে পড়ে উপকূলে। মুহূর্তের মধ্য উপকূলীয় জনপদ মৃতপুরীতে পরিনত হয়।
বিবিসির করা এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই ঘূর্ণিঝড়ে নিহতে সংখ্যা ছিল দেড় লাখ । এদের বেশিরভাগই নিহত হয় চট্টগ্রাম জেলার উপকূল ও উপকূলীয় দ্বীপগুলোয়। এ ছাড়া সন্দ্বীপ, মহেশখালী, হাতিয়াসহ অন্যান্য দ্বীপেও নিহতের সংখ্যা ছিল অনেক। বেশ কয়েক সপ্তাহ লেগে গিয়েছিল নিহতদের লাশ কবরস্ত করতে। প্রায় এক কোটি মানুষ তাদের সর্বস্ব হারায়।
বন্দরে নোঙর করা বিভিন্ন ছোট-বড় জাহাজ, লঞ্চ ও অন্যান্য জলযান নিখোঁজ ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ধারণা করা হয়, এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সেসময় প্রায় ১.৫ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়।
সিডর (২০০৭)
২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ভয়াবহ এক ঘূর্ণিঝড় ‘সিডর’ আঘাত হানে দেশের উপকূলীয় এলাকায়। ভয়াবহতার দিক দিয়ে এটিও কম ছিলো না। ঘূর্ণিঝড় সিডরে উপকূলিয় ৩০টি জেলা ব্যপক ক্ষয় ক্ষতির সম্মুখিন হয়। ৯ নভেম্বর আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের কাছে উৎপত্তি হয়ে ১৫ নভেম্বর এটি দেশের উপকূলীয় এলকায় আছড়ে পড়ে। এসময় বাতাসের গতিববেগ ছিল ২২০ থেকে ২৫০ কিলোমিটার, যা দমকা হাওয়া আকারে আরও বৃদ্ধি পেয়েছিল। তার সঙ্গে ছিল ২০ থেকে ২৫ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাস।
রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির হিসাব মতে, ঝড়ে দশ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়। গবাদিপশু মারা যায় প্রায় বিশ লাখ। এ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, জমির ফসল, বাড়ি, সড়ক এবং বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেদিনের পর নিখোঁজ রয়েছে এখনো অনেক মানুষ।
আইলা (২০০৯)
সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট, পটুয়াখালী, খুলনা, ভোলা, বরগুনা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, হাতিয়ার উপকূলীয় জনপদের মানুষের কাছে এই দিনটি এক প্রলয়ংকারী ও ভয়ংকর দিন। ২০০৯ সালের ২৫মে সংঘটিত ঘূর্ণিঝড় আইলার তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় দক্ষিণাঞ্চলের বিস্তীর্ণ জনপদ। ঘূর্ণিঝড় আইলার নামকরণ করেন মালদ্বীপের আবহাওয়াবিদরা। ‘আইলা’ শব্দের অর্থ ডলফিন বা শুশুকজাতীয় জলচর প্রাণী।
২৫ মে সংঘটিত আইলার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার। আইলায় লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় এ অঞ্চলের হাজার হাজার বসতভিটা, আবাদি জমি। এই ঝড়ে প্রাণ যায় দুইশোরও বেশি মানুষের। এছাড়া ভারতেও প্রাণহানি ঘটে এই ঝড়ে। সেখানে প্রাণ হারায় ১৪৯ জন।
বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার লাখো মানুষ গৃহহীন হয় । আইলার প্রভাবে নিঝুম দ্বীপ এলাকার সব পুকুরের পানি লবণাক্ত হয়ে পড়ে। প্রায় ২,০০,০০০ একর কৃষিজমি লোনাপানিতে তলিয়ে যায়। কাজ হারায় ৭৩,০০০ কৃষক ও দিনমজুর।
প্রবল ঝড়ে অঞ্চলজুড়ে গাছ উপড়ে পড়ায় রাস্তাঘাট অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। ৭৬ কিলোমিটার বাঁধ পুরোপুরি এবং ৩৬২ কিলোমিটার বাঁধ আংশিকভাবে ধসে পড়ে। পর পর দুই মৌসুম কৃষিকাজ না হওয়ায় প্রায় ৮,০০,০০০ টন খাদ্যঘাটতি সৃষ্টি হয় আইলার প্রভাবে।
রুয়ানু (২০১৬)
২০১৬ সালে ২১ মে প্রায় ১০০ কিলোমিটার বেগে বাংলাদেশের উপকূলে এবং ভারতে আংশিক আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় রুয়ানু। মালদ্বীপ এ ঘূর্ণিঝড়ের নাম প্রস্তাব করেছিল। ‘রুয়ানু’ শব্দটিও মালদ্বীপের। এর অর্থ হচ্ছে নারিকেলের ছোবড়ার তৈরি দড়ি।
চট্টগ্রাম, ভোলা ও পটুয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, কক্সবাজার, চাঁদপুর, ঝালকাঠি, বরিশালসহ উপকূলীয় জেলাগুলোতে ঝড়ে ২৪ জন নিহত হয়। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা দাঁড়ায় লক্ষাধিকে। আর পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এমন পরিবারের সংখ্যা প্রায় ২৯ হাজার। জলোচ্ছ্বাসে অধিকাংশ উপকূলীয় জেলার বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ার ফলে মানুষের ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, মাছের ঘের ইত্যাদি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সুপার সাইক্লোন আমফান (২০২০)
সুপার সাইক্লোন আম্পান একটি ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়, যা বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী ভারতের পূর্বাংশে এবং বাংলাদেশে আঘাত হানে। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল, ভারতের ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ ঘূর্ণিঝড়ের ঝুঁকির মধ্যে ছিল। এ শতাব্দীতে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া এটিই প্রথম সুপার ঘূর্ণিঝড়। ‘আম্পান’ কথার অর্থ আকাশ। এটি একটি থাই শব্দ।
উপকূলীয় এলাকায় পানির স্তর বৃদ্ধি পেয়ে ঝড়ের আগেই ক্ষয়ক্ষতির প্রভাব শুরু হয়। বাংলাদেশের মূলত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাগুলোতেই আম্পানের আঘাত তীব্র ছিল। বাঁধগুলির ভাঙ্গার ফলে পটুয়াখালী জেলার অন্তর্গত গলাচিপা, কলাপাড়া, এবং রাঙ্গাবালী সহ ১০টি গ্রাম ডুবে যায়। নোয়াখালী জেলার একটি দ্বীপে ঝড়ের তীব্রতায় কমপক্ষে ৫০০ টি ঘর নষ্ট হয়। মারা যায় ১৬ জন মানুষ।
এছাড়া, বিভিন্ন এলাকায় বাঁধ, রাস্তা, ব্রিজ-কালভার্টসহ অবকাঠামোর পাশাপাশি ঘরবাড়ি, কৃষি এবং চিংড়ি ঘেরসহ মাছের ব্যাপক ক্ষতি হয়। মৌসুমী ফল আম এবং উত্তরের অন্য জেলাগুলোয় ধান এবং সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে প্রায় সাড়ে এগারোশ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির কথা জানা যায়।
ঘূর্ণিঝড়ের আগে কী করবেন?
>>>> যথাসম্ভব নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করতে হবে। অযথা আতঙ্কিত হওয়া চলবে না।
>>>> পরিস্থিতি বুঝে মাথা ঠান্ডা রেখে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।
>>>> দুর্যোগের সময় কোন এলাকার লোক কোন আশ্রয়কেন্দ্রে যাবে, গবাদিপশু কোথায় থাকবে, তা আগে ঠিক করে রাখুন।
>>>> গুজবে কান দেবেন না। গুজব রটাবেন না। লোকের মুখের কথা না শুনে শুধু সরকারি বার্তায় বিশ্বাস রাখুন।
>>>> জরুরি প্রাথমিক চিকিৎসাসামগ্রী হাতের নাগালে রাখুন।
>>>> ঝড়ে গাছ পড়ে গিয়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হতে পারে। তাই নিজের মোবাইল ফোন আগেই সম্পূর্ণ চার্জ দিয়ে রাখুন। বিপদের সময় যে কোনো মুহূর্তে মোবাইলের দরকার হতে পারে।
>>>> নির্ভরশীল ও ছোটদের বাড়ির ভিতর নিরাপদ স্থানে রেখে দিন।
>>>> আশ্রয় নেওয়ার জন্য নির্ধারিত বাড়ির আশপাশে গাছের ডালপালা আসন্ন ঝড়ের আগেই কেটে রাখুন, যাতে ঝড়ে গাছগুলো ভেঙে বা উপড়ে না যায়।
ঘূর্ণিঝড়ের সময় করণীয়
>>>> ঝড় শুরু হলে পরিস্থিতি বুঝে বাড়ির বিদ্যুৎসংযোগ বন্ধ করে দিন।
>>>> ঘরের দরজা-জানলা ভালো করে বন্ধ রাখুন। ফোটানো বা ক্লোরিন দেওয়া জল পান করুন।
>>>> ঝড়ের সময় যদি রাস্তায় থাকেন, তা হলে যত দ্রুত সম্ভব কোনো সুরক্ষিত স্থানে আশ্রয় নিন। গাছ বা বিদ্যুতের খুঁটির নীচে দাঁড়াবেন না।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশে বেড়েছে দুর্যোগ মোকাবিলার সক্ষমতা। আগে যে পরিমাণ প্রাণহানির ঘটনা ঘটত এখন তা কমে এসেছে অনেক। ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে, এমটাই জানানো হয়েছে সরকারের তরফে।