জাবি প্রতিনিধিঃ চাকুরী স্থায়ীকরণের দাবিতে উপাচার্য বরাবর আবেদন জানিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) দৈনিক মজুরী ভিত্তিক কর্মচারীরা৷
এর আগে গত ৬ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনে একশত বিশ জন কর্মচারীর স্বাক্ষর সম্বলিত আবেদনপত্র উপাচার্য বরাবর জমা দেন তারা৷
লিখিত আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়, বিগত সময়ে ২০২০ সালের পর থেকে ২০২২ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছেন তারা। সেসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. রাশেদা আখতার তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চাকুরী স্থায়ীকরণের আশ্বাস দেন। কিন্তু অনেক দিন পেরিয়ে গেলেও তারা কোন আশানুরূপ অগ্রগতি দেখতে পাননি বলে আবেদনপত্রে হতাশা প্রকাশ করেছেন তারা৷
এর প্রেক্ষিতে, এবছরের ২ জানুয়ারি আমরণ অনশন করেন কর্মচারীরা। অনশন চলাকালে তাদের আগামী ৬ মাসের মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিভিন্ন হল ও অফিসসমূহে নিয়োগ এবং বেতন বৃদ্ধিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদানের মৌখিক আশ্বাস দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন৷ পরবর্তীতে তারা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আবেদন জমা দেন। এরই প্রেক্ষিতে যোগ্যতা ও দক্ষতা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন কর্মচারীরা৷
ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের পিয়ন সোহেল রানা বলেন, অনশনের পর ৬ মাসের মধ্যে চাকরী স্থায়ীকরণের আশ্বাস দিয়েছে৷ প্রশাসন থেকে অভিজ্ঞতার সাপেক্ষে পর্যায়ক্রমে দেয়ার কথা বলেছে৷ আমাদের গার্ড, পিয়নদের একেকজনের ৪/৫ বছরের অভিজ্ঞতা আছে৷ আমি ২০১৯ সালে এই গবেষণা কেন্দ্রে পিয়ন হিসেবে জয়েন করেছি৷ এখন সমস্যা হচ্ছে কেউ আমাদের দায়িত্ব নিতে চায় না৷ আমার মত যাদের সার্টিফিকেট অনুসারে বয়স, যোগ্যতা আছে তাদের দ্রুত দিতে হবে।
জাহানারা ইমাম হলের কর্মচারী নাসরিন বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়ার এখনো কোন ফলাফল আসেনি। আমাদের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি, অনেকে সাপ্তাহিক ছুটি পায় না এসব এখনো নিশ্চিত হয়নি৷ জানুয়ারির ৩ তারিখ অনশনের পর আমাদের দেখা করার কথা ছিল। কিন্তু এরপর আমাদের সাথে কেউ দেখা করেনি। এখন আমাদের মধ্য থেকে যদি এক-তৃতীয়াংশও যদি নেয় সেটাও আমাদের জন্য অনেক৷
বেগম সুফিয়া কামাল হলের গার্ড শামসুল আলম বলেন, এখানে নিরাপত্তা বিভাগে দুইটি পদ ফাঁকা আছে। যোগ্যতার ক্ষেত্রে বলেছে আনসার সদস্য লাগবে। আমার এক্ষেত্রে আনসারের ট্রেনিং আছে, ৬ বছরের গার্ডের চাকরির অভিজ্ঞতা আছে৷ এখন আমাদের ছয় মাসের সময় দেয়া হয়েছে। যদি এ সময়ের মধ্যে আমাদের নিয়োগ না দেয় তাহলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।
নিয়োগবোর্ডের সদস্য অধ্যাপক ড. আলমগীর কবির বলেন, নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতা একটা বড় বিষয়। এখানে অনেক ক্ষেত্রে আমাদের ইলেকট্রিশিয়ান, প্লাম্বার মিস্ত্রী প্রয়োজন। কিন্তু দেখা গেছে নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে তাদের প্রয়োজনীয় যোগ্যতা বা অভিজ্ঞতা নেই। তারপরও আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি তাদের অগ্রাধিকার দেয়ার জন্য।
তবে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারি নিয়োগবোর্ডের প্রধান রাশেদা আখতারের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরুল আলম বলেন, এ নিয়োগ বোর্ডের দায়িত্বে আছেন ট্রেজারার মহোদয়। আমি আলাদা করে কারো ব্যাপারেই সুপারিশ করছি না। কর্মচারীদের আবেদনপত্র পাওয়ামাত্রই আমি ট্রেজারার মহোদয়কে পাঠিয়ে দিয়েছি৷ কর্মচারীদের যোগ্যতা অনুযায়ী তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।