মহাকাশে ব্যবহার উপযোগী নতুন প্রজন্মের ব্যাটারি প্রযুক্তি গবেষণায় নাসার সাড়ে সাত লাখ ডলারের অনুদান পেয়েছেন আইইউবির প্রাক্তন শিক্ষার্থী মো. ওয়াহিদুল হাসান ও তার দল। নতুন এ প্রযুক্তিতে ভুট্টার ডাঁটার অবশিষ্টাংশ ব্যবহার করে ব্যাটারির অভ্যন্তরীণ রসায়নে পরিবর্তন ঘটিয়ে জনপ্রিয় লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির তুলনায় বৈদ্যুতিক চার্জ ধারণ ক্ষমতা দ্বিগুণ বাড়াতে প্রাথমিক সাফল্য পেয়েছেন তারা।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার এসটাবলিশড প্রোগ্রাম টু স্টিমুলেট কম্পিটিটিভ রিসার্চ (ইপিএসসিওআর) কর্মসূচির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ডাকোটা মাইনস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা দলটিকে এ অনুদান দেওয়া হয়।
ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের (আইইউবি) ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি শেষে ওয়াহিদ ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ডাকোটা মাইনস বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। সেখানে তিনি সলিড স্টেট লিথিয়াম-সালফার ব্যাটারি এবং ইলেক্ট্রোকেমিক্যাল এনার্জি স্টোরেজ বিষয়ে পিএইচডি করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে তিনি পিএইচডি গবেষণার পাশাপাশি সেখানে তিনি গবেষণা সহকারী হিসেবে কর্মরত আছেন।
২০২১ সালে গবাদিপশুর মূত্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের একটি প্রকল্পের জন্য এলসিভিয়ার ফাউন্ডেশনের ‘কেমিস্ট্রি ফর ক্লাইমেট অ্যাকশন চ্যালেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড’ জিতেছিলেন ওয়াহিদ।
নাসার ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, সাউথ ড্যাকোটা স্কুল অব মাইনস বিশ্ববিদ্যালয়কে অনুদানটি দেওয়া হয়েছে নতুন ধরণের লিথিয়াম-সালফার ব্যাটারি প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা করার জন্য, যা লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির চেয়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন। এ প্রযুক্তি নাসার পাওয়ার রকেট এবং অন্যান্য মহাকাশযানে চড়ে চাঁদে বা মঙ্গল গ্রহে ভ্রমণ বা অবস্থানের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে।
ওয়াহিদ বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি মাথায় রেখে পরিবেশ-বান্ধব বৈদ্যুতিক যানবাহনের ব্যবহার বাড়ানোর দিকে বিশেষ মনোযোগ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। আমরা যে প্রযুক্তিটি নিয়ে কাজ করছি, সেটি একদমই নতুন। এখনো প্রচুর পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাকি রয়েছে। তবে সব পরীক্ষা শেষে চূড়ান্ত সাফল্য যদি অর্জন করা যায়, তাহলে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে জ্বালানী সাশ্রয়ে বিশেষ করে পরিবহন খাতে এ প্রযুক্তি ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারবে।
এছাড়া নবায়নযোগ্য জ্বালানী এবং ব্যাটারির বৈদ্যুতিক চার্জ ধারণক্ষমতা বাড়ানোর ওপর উন্নততর গবেষণার ইচ্ছা আছে ওয়াহিদের। ভবিষ্যতে বাংলাদেশে একটি আধুনি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করতে চান ওয়াহিদ যেখানে নতুন নতুন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করবেন তরুণ প্রযুক্তিবিদ ও বিজ্ঞানীরা।