The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪

বিবিএ-এমবিএ শেষ করে মাছের ব্যবসা, মাসে ইনকাম করেন লাখ টাকা

মাহফুজুলের (৩১) বাড়ি নীলফামারীর সৈয়দপুরে। সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি-এইচএসসি শেষ করে তিনি ঢাকায় আসেন। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে অ্যাকাউন্টিংয়ে বিবিএ করেন তিনি। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি থেকে মার্কেটিংয়ে করেন এমবিএ।

ভিড়বাট্টা ঠেলে বাজারে গিয়ে মাছ কেনা, ঘরে এনে কাটা-ধোয়া—নগরজীবনের এই ঝক্কি দেখে ব্যবসার ধারণাটি আমার মাথায় আসে। ধারণাটি বাস্তবে রূপ দিতে ২০১৬ সালে ‘ফিশ মার্ট’ নামের অনলাইনভিত্তিক ব্যবসায়িক উদ্যোগ শুরু করেন বলে জানান মাহফুজুল।

তিনি বলেন মাছ সংগ্রহ-বিক্রির কিছুই আমি জানতাম না। বিষয়টি বোঝার জন্য প্রথমে আমি ঢাকার বাইরে যাই। যেখানে যেখানে ভালো-তাজা মাছ পাওয়া যায়, তা ঘুরে দেখি। ব্যবসা বোঝার চেষ্টা করি। হাতখরচ বাঁচিয়ে টাকা জমাই। ফেসবুকে পেজ খুলে শুরুতে আস্ত মাছ বিক্রি করি। পরে কেটে-ধুয়ে বিক্রি করি। মূলত তখনই আমার ব্যবসায় গতি আসে।’

চাহিদা বাড়ায় ২০১৭ সালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে এক কক্ষের একটি অফিস নেন মাহফুজুল। করোনা মহামারি তাঁর জন্য ‘সাপে বর’ হয়ে আসে। তিনি বলেন, ‘দেশে করোনা হানা দিলে লকডাউন দেওয়া হয়। সবকিছু বন্ধ হয়ে যায়। তখন আমার কাছ থেকে মাছ নেওয়ার জন্য ফেসবুক পেজে অনেক অর্ডার আসতে থাকে। আমার আয় বেড়ে যায়।’

ব্যবসাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে ২০২১ সালে ‘ট্রেড লাইসেন্স’ নেন মাহফুজুল। রাজধানীর আদাবর এলাকায় চার কক্ষের একটি ফ্লোর ভাড়া নেন তিনি। পূর্ণ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের আদলে তিনি অফিস সাজান। মাছ কাটার জন্য দেশের বাইরে থেকে যন্ত্র কিনে আনেন। কর্মী নিয়োগ দেন। এই অফিস আনুষ্ঠানিকভাবে চালুর সময় তিনি তাঁর মা- বাবাকে ব্যবসার কথা জানান। তাঁরা বিষয়টি ভালোভাবেই নেন।

তবে ব্যবসার শুরুর দিকে বন্ধুবান্ধব কিছুটা নেতিবাচক মনোভাব দেখিয়ে ছিলেন বলে জানান মাহফুজুল। তাঁর ভাষ্যে, ‘বন্ধুরা বলাবলি করছিল, পড়ালেখা করে মাছের ব্যবসা কেন!’

মাহফুজুলের প্রতিষ্ঠানে এখন সব মিলিয়ে ২৭ কর্মী আছেন। ঢাকার অদূরের মৈনটঘাট, চাঁদপুর, ভৈরব, বরিশালসহ বিভিন্ন স্থান থেকে তাজা মাছ সংগ্রহ করেন তিনি। এই মাছ কেটে-ধুয়ে পুরোপুরি রান্নার উপযোগী করে তা ক্রেতাদের ঘরে পৌঁছে দেন তাঁর কর্মীরা। মাছের পাশাপাশি মাংসও বিক্রি করেন মাহফুজুল। ফেসবুক পেজ ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ক্রয়াদেশ গ্রহণ করে তাঁর প্রতিষ্ঠান।

মাহফুজুল বলেন, ‘এখন দিনে কম করে হলেও ৮০ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করি। সব খরচ বাদ দিয়ে মাসে দেড় লাখ টাকা মুনাফা হয়। চাকরি করলে মাসে এ টাকা আয় করা সম্ভব হতো না। চাকরির পেছনে না ছুটে ব্যবসা করে ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছি বলে মনে করি।’

ছয় থেকে সাত মাস ধরে ঢাকার বাইরে কিছু এলাকায় মাছ সরবরাহ করছেন মাহফুজুল। দেশের সব কটি বিভাগীয় শহরে প্রতিষ্ঠানের শাখা খোলার পরিকল্পনা আছে তাঁর। [প্রথম আলো]

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.