মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমানার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিভাগের শিক্ষক ও জেনোসাইড সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদকে দ্রুত অপসারণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
রোববার (২ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল ও সাধারণ সম্পাদক আল মামুনের নেতৃত্বে এ স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
এতে বলা হয়, অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদের লেখা ‘হিস্টোরাইজিং ১৯৭১ জেনোসাইড : স্টেট ভার্সেস পারসন’ নামে বইয়ের ৪০ পৃষ্ঠায় লিখেছেন তিনি ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শোনার জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নিজে হাজির হয়ে বঙ্গবন্ধুকে ‘জয় পাকিস্তান’ বলতে শুনেছেন। উক্ত বইয়ে অধ্যাপক ইমতিয়াজ বোঝাতে চেয়েছেন বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা চাননি। তার উল্লেখিত পুস্তকে এমন কথাও লিখেছেন যার অর্থ দাঁড়ায় এই যে ১৯৭১-এ বাংলাদেশে যা ঘটেছে তা ১৯৪৮ সালের ‘জেনোসাইড কনভেনশনে’র আওতায় পড়ে না। জেনোসাইড কনভেনশনের সংজ্ঞাভুক্ত হতে হলে নাকি একটি মানবগোষ্ঠী কর্তৃক অন্য এক মানবগোষ্ঠীকে আক্রমণ করতে হয়।
‘অধ্যাপক ইমতিয়াজ আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি চরম অবমাননা করে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘একটি মৌলিক প্রশ্ন হলো, আসলেই কি ৩০ লাখ লোকের মৃত্যু হয়েছিল, নাকি মৃতের সংখ্যা কম ছিল? তার এমন দুঃসাহসিক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ লেখনীর বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।’
অপসারণের দাবি জানিয়ে স্মারকলিপিতে বলা হয়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননা ও মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করার অপরাধে অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদকে অনতিবিলম্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অপসারণ করতে হবে।
আল্টিমেটাম দিয়ে এতে বলা হয়, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ এক বিন্দু ছাড় দেবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট আহ্বান, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অপসারণ করার উদ্যোগ গ্রহণ না করলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশব্যাপী কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।