টিআরসি রিপোর্টঃ পার্বত্যাঞ্চলের দূর্গম জনপথ লংগদু। সেখানেই বেড়ে উঠা এক অদম্য শিক্ষার্থীর নাম পারভীন আক্তার। এই দূর্গম অঞ্চল থেকে পারভিনই প্রথম মেয়ে যে সরকারি মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে।
মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নওগাঁ মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পেয়েছে পারভীন আক্তার। সারাদেশে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় ১০৪৮৩তম স্থান অর্জন করেন।
রাঙামাটির লংগদু উপজেলার ভাসান্যাদম ইউনিয়নের চাইল্যাতলী এলাকার মো. সাহেব আলীর ছোট মেয়ে পারভীন আক্তার। আট ভাই-বোনের মধ্যে পারভীন সবার ছোট বোন। তার পরে ছোট এক ভাই রয়েছে। অর্থাভাবে পারভীনের বড় তিন বোনের পড়ালেখা বেশিদুর এগোয়নি। তার সংসার জীবনে ব্যস্ত। পারভীনের পরবর্তী বড় তিনবোনের একজন রাঙামাটি সরকারি কলেজে মাস্টার্স করছেন, অন্য দুইজন অনার্স পড়ছেন। ছোট ভাই শহরের একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করছেন।
এলাকায় ছোট্ট টিনের ঘর ছাড়া তাদের আর তেমন কিছু নেই। তবুও মনকে কখনো ছোট করেনি, শত বাঁধাবিপত্তি, আর্থিক অনটন ও গ্রাম্য কুসংস্কার ডিঙিয়ে আপন ঠিকানায় ছুটে চলেছেন তিনি।
পারভীনের বাবা মো. সাহেব আলী জানান, সামন্য ব্যাটালিয়েন চাকরি করে সংসার ও সন্তানদের পড়ালেখার খরচ চালানো কষ্টসাধ্য। তবুও সন্তানদের উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে চেষ্টা করছেন। নানান প্রতিকূলতার মধ্যেও আমার ছোট মেয়ে সরকারি মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে এটাই আমাদের বড় পাওয়া।
স্কুল শিক্ষক আল মামুন ইবনে মিজান বলেন, পারভীন খুবই মেধাবী একজন শিক্ষার্থী। সে নিজের মেধা ও প্রজ্ঞায় মেডিকেলে পড়ার চান্স পেয়েছে। সে বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষার্থীর মধ্যে শান্তশিষ্ট ও শিক্ষকদের অনুগত ছাত্রী ছিলেন।
তিনি আরো বলেন, পারভীন এই দূর্গম অঞ্চল থেকে প্রথম মেয়ে যে সরকারি মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। আশা করি ওর এই দৃষ্টান্ত অনুকরণ করে সামনে আরও অনেকে ভালো অবস্থান করে নিবে। পারভীন রাবেতা মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাস করেছে। সে মেডিকেলে পরীক্ষা দিয়ে মেধার অন্যন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
পারভীন আক্তার বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমার স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। এই ইচ্ছা শক্তিই আমাকে এ সফলতা এনে দিয়েছে। শিক্ষা জীবন জুড়েই বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার মধ্যে দিয়ে লেখাপড়া চালিয়েছি। নিজ প্রচেষ্টায় সব বাঁধা জয় করে এখন মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পেয়েছি।
কোর্স সফলভাবে সম্পন্ন করে নিজ অঞ্চলে গরীব দুঃখি মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে চান তিনি।