বিশ্বের সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর একটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি)। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন চাঁদপুর সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের (এইচএসসি) বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র নাফিস উল হক ওরফে সিফাত। এইচএসসি পাসের আগেই বিশ্বসেরা প্রতিষ্ঠানে স্নাতকের সুযোগ পেয়ে অবাক নাফিস নিজেও।
বাংলাদেশী পড়ুয়াদের মধ্যে নাফিস সবচেয়ে কম বয়সে এমআইটির আন্ডারগ্রাজুয়েটে (স্নাতক) পড়ার সুযোগ পেয়েছেন বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।
জানা যায়, চাঁদপুর শহরের চেয়ারম্যান ঘাটে নাফিসের বাড়ি। তার মা ও বাবা দুইজনেই শিক্ষকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত আছেন। চাঁদপুর সরকারি কলেজের দ্বাদশ বিজ্ঞান শাখার মেধাবী শিক্ষার্থী মো. নাফিস উল হক সিফাত যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের কেমব্রিজ শহরে অবস্থিত বিশ্ব খ্যাত ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে (এমআইটি) স্নাতক (সম্মান) কোর্সে পড়ার জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
তথ্য মতে, এমআইটি বিশ্বের শীর্ষ ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে অন্যতম। এটি এমন একটি প্রতিষ্ঠান যেখানে প্রকৌশল ও মৌলিক বিজ্ঞানের বিষয়গুলো সব সময় আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিংয়ে প্রথমে থাকে। এই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেন বিশ্বের নামকরা সব পণ্ডিত ও গবেষকরা। ১৮৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) সুনাম দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি সংক্রান্ত গবেষণায় এর পরিচিতি বিশ্বব্যাপী। নোবেল বিজয়ীদের মধ্যে ৭৬ জন এই প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেছেন।
এই প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়েছেন নাফিস। বিষয়টি জানার পর বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) বেলা ২টায় নাফিস কলেজ ক্যাম্পাসে পৌঁছলে কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর অসিত বরণ দাশ নাফিসকে বুকে টেনে নেন। তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছাও জানান।
এমআইটিতে নাফিসের ইচ্ছা কম্পিউটার বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করার। নাফিস এর আগে ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিয়াড ইন ইনফরমেটিক্স (আইওআই) এ বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে ব্রোঞ্জ পদক অর্জন করেন।
উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পাশের আগেই কীভাবে এই অসাধ্য সাধন সম্ভব হলো?— এমন প্রশ্নের জবাবে হেসে নাফিস বলেন, ‘কোন কিছুই আসলে অসম্ভব নয়। চেষ্টা থাকতে হবে, আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে। ওরা আসলে দেখতে চায় পড়ালেখায় একজন ছাত্র কতটা ভালো, মানুষ হিসেবে কেমন, কোন বিষয়ে আগ্রহ আছে এবং সে কীভাবে সমস্যার সমাধান করছে। আমি আসলে অলিম্পিয়াড ইন ইনফরমেটিক্স এ ব্রোঞ্জ পদক লাভ করায়, তারা আমাকে সম্মান শ্রেণিতে ভর্তির জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করে। আমি সবার দোয়া চাই। বাংলাদেশের মানুষের জন্য কিছু করতে চাই। নবীন শিক্ষার্থীদের কাছে অনুরোধ থাকবে, ভালোভাবে পড়াশোনা করতে হবে এবং এর পাশাপাশি এক্সটা কারিকুলাম একিটিভিটিসগুলোতে নিজেদেরকে যুক্ত রাখতে হবে।’