মো. আজাদ হোসেন (৪০) নিজের এক টুকরো জমিও নেই। তাই কৃষক আজাদের সম্বল অন্যের জমি। চাষ করেই তার সংসার চলে। আজাদ হোসেন এ বছর ১১ একর জমি বর্গা নিয়ে তরমুজ আবাদ করেছেন। এতে তার প্রায় ৬ লাখ টাকা খরচ হলেও লাভের আশা করছেন ১০ থেকে ১২ লাখ। লাভের টাকা থেকে মুছতে চান ভূমিহীন পরিচয়।
নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরওয়াপদা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের আল আমিন বাজার এলাকার রুহুল আমিনের ছেলে মো. আজাদ হোসেন (৪০)। আজাদ হোসেন ২০০১ সালে বিয়ে করে জীবনের তাগিতে চট্টগ্রাম চলে যান। তখন দিনে ২০০-২৫০ টাকায় দিনমজুর ছিলেন। অনেক পরিশ্রম করেও তিনি সংসার সামলে উঠতে পারছিলেন না। তাই দিনমজুরের কাজ বাদ দিয়ে কৃষিতে পুরোপুরি যুক্ত হন।
আজাদ হোসেন বলেন, প্রায় ৩৫ বছর কৃষিকাজ করি। পড়াশোনা না জানায় ভালো করতে পারি না। এবছর অনেক পরিশ্রম করে ১১ একর জমিতে তরমুজ আবাদ করেছি। আশা করি আল্লাহ চাইলে এবার ভাগ্য পরিবর্তন হবে।
আজাদ হোসেন আরও বলেন, চট্রগ্রাম-ফেনীসহ আশপাশে এই তরমুজ বিক্রি হয়। সারাদেশে তরমুজের থেকে সুবর্ণচরের তরমুজ সেরা। কম করে হলেও উত্তরবঙ্গের তরমুজ থেকে ১০ গুণ মিষ্টি। উত্তরবঙ্গের তরমুজ সাইজে বড় হলেও মিষ্টি কম। পাইকার ব্যবসায়ী সবাই আমাদের তরমুজ চেনে। যারা চেনে তারাই কেনে। তরমুজ চাষে অনেক পরিশ্রম। সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত জমিতে সময় দিতে হয়। গত বছর কিছু টাকা ছিল, গরু-ছাগল বিক্রি করেছি এবং ধার দেনা করে ১১ একর জমিতে তরমুজ আবাদ করেছি। আমার ৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আশা করি ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারব।
সুবর্ণচর উপজেলার কৃষি কর্মকতা মো. হারুন অর রশিদ বলেন, সুবর্ণচরে অন্যতম তরমুজ চাষি হলেন আজাদ। তিনি ভূমিহীন কৃষক। তরমুজ আবাদ করে কৃষক আজাদ জমির মালিক হওয়ার আশা করছেন।
জানা যায়, সুবর্ণচরে এবছর ৪ হাজার ২৯০ হেক্টর জমিতে তরমুজ আবাদ হয়েছে।গত বছরের ন্যায় এবারও কৃষকের মুখে হাসি ফুটবে। কৃষক নায্যমূল্য পাবেন এবং স্বাবলম্বী হবেন।