আমার মেয়ে এবারের বৃত্তি পরীক্ষায় উপজেলায় ট্যালেন্টপুলে (মেধাতালিকা) বৃত্তি পায়। কিন্তু সংশোধিত ফলাফলে সাধারণ গ্রেডেও তার নাম নেই। আমার মেয়েটা শুধু কান্না করছে। কচি মনে মেয়েটা মারাত্মক আঘাত পেয়েছে। এখন আর সে পড়াশোনা করতে চাচ্ছে না। প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের এ ধরনের খামখেয়ালিপনা মেনে নেওয়া যায় না।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলা সদরের আঙ্গারপাড়া এলাকার বাসিন্দা রুহিদাস মালো। তিনি উপজেলা সদরের সিঙ্গাইর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া পুণ্যলতা মালোর বাবা। রহিদাস বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের নরসিংদী শাখায় আঞ্চলিক নিরীক্ষক পদে কর্মরত। প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার সংশোধিত ফলাফলে ক্ষুব্ধ এই অভিভাবক আজ বিকেল চারটার দিকে মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবে আসেন। এ সময় তিনি সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রও সঙ্গে নিয়ে আসেন।
কাগজপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, পঞ্চম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষায় ছয়টি বিষয়ে পুণ্যলতা মালো গড়ে ৯৮ ভাগ নম্বর পেয়েছে। প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় প্রথম যে ফলাফল ঘোষণা করা হয়, তাতে সিঙ্গাইর উপজেলায় সে মেধাতালিকায় প্রথম হয়। তবে সংশোধিত ফলাফলে মেধা ও সাধারণ গ্রেড তালিকাতেও তার রোল নম্বর নেই। এর অর্থ পুণ্যলতা বৃত্তি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছে।
উপজেলায় শুধু পুণ্যলতাই নয়, প্রথম প্রকাশ করা মেধাতালিকায় যে ৫৪ পরীক্ষার্থী বৃত্তি পেয়েছিল, সংশোধিত ফলাফলে তাদের মধ্যে ২৩ জনের রোল নম্বর সংশোধিত তালিকায় নেই।
প্রথম ঘোষিত ফলাফলে যেসব শিক্ষার্থী বৃত্তি পেয়েছিল, সংশোধিত তালিকা নিয়ে তাদের ও তাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।
পুণ্যলতা মালোর বাবা রুহিদাস মালো ক্ষোভের সঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, ‘বৃত্তি পরীক্ষার ফলাফল পাওয়ার পর দেখা যায়, উপজেলায় আমার মেয়ে ট্যালেন্টপুলে প্রথম স্থান অর্জন করেছে। আনন্দে প্রতিবেশী-স্বজনদের মিষ্টি খাওয়াইছি। পরে সংশোধিত ফলাফলে দেখা গেল, সাধারণ কোটাতেও আমার মেয়ে বৃত্তি পায় নাই। এর পর থেকে আমার মেয়ে কোনো কিছু খাচ্ছে না, শুধুই কান্নাকাটি করছে। সে আর পড়াশোনা করবে না, স্কুলেও যাবে না বলে আমাদের বলছে।’
রুহিদাস মালো অভিযোগ করে বলেন, ‘শিশুদের এই পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ এ ধরনের খামখেয়ালিপনা-অবহেলা করেছে। আমি মেয়ের ফলাফল নিয়ে আইনের আশ্রয় নেব বলে ভাবছি।’