কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ নান্দনিক সৌর্ন্দয ভরা একমাত্র পাহাড়িদ্বীপ মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির। সাগর পৃষ্ঠ থেকে ২৮৮ ফিট উঁচুতে অবস্থিত এই মন্দিরের নান্দনিক সৌন্দর্যে দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছে।
শীতের শেষ বেলায় বসন্তের আগমনে এখানে বসে হিন্দু ধর্মালম্ভীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব শিব চতুর্দশী মেলা। এই মেলায় দেশের নানা প্রান্ত থেকে দর্শনার্থী ও পুণ্যার্থীরা ছুটে আসেন পাহাড়িদ্বীপ মহেশখালীর আদিনাথ মন্দিরে। বসন্তের আগমনে উষ্ণতার আবহে পরিবার পরিজন নিয়ে মেলায় আসেন তারা।
মেলা ঘুরে দেখা যায়, বাহারি রকমের জিনিসপত্র সাজিয়ে বসেছে দোকানদাররা। শিশুদের খেলনা, নারীদের পোশাক, ক্রোকারিজের দোকানসহ রয়েছে খাবার হোটেলও। তবে আমাদের দৃষ্টি আটকায় বাংলার আদি ঐতিহ্য মাটির তৈরি তৈজসপত্রের দোকানে। মাটির তৈরি এসব তৈজসপত্রের সাথে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের ঐতিহ্য। কিন্তু প্লাস্টিকের সহজলভ্যতার স্রোতে অনেকটা হারিয়ে গেছে মাটির তৈরি মৃৎশিল্প।
আদিনাথ মেলায় দেখা মিলে এমন একটি দোকানের। দোকানদার জানান, মৃৎশিল্প গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য কিন্তু কালের পরিক্রমায় শৌখিন জিনিসপত্রে পরিণত হয়েছে। তবে মেলায় ব্যাপক চাহিদা রয়েছে ক্রেতাদের।
আদিনাথ মেলার গুড়ের জিলাপি জগৎখ্যাত। এই মেলার জিলাপি নিয়ে রচিত হয়েছে অনেক গল্প গান কবিতা। মেলায় কারিগরের তৈরী জিলাপির আলাদা স্বাদ ও চাহিদা রয়েছে। ক্রেতাদের ব্যাপক সাড়া, দৈনিক একটনের বেশি জিলাপি বিক্রি কথা জানান বিক্রেতারা।
পরিবার পরিজন নিয়ে মেলায় ঘুরতে আসেন নানা শ্রেণির পর্যটক ও শিশুরা। মেলায় ঘুরে ভালোলাগার কথা জানান তারা।
১৩ দিন ব্যাপী মেলার কথা থাকলেও মূল মেলা ১০ দিনব্যাপী। যা আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হবে ২৮ ফেব্রুয়ারী। মেলা আয়োজন, শৃঙ্খলা এবং পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে মেলা উৎযাপন কমিটির সভাপতি মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ইয়াছিনের সার্বিক সহযোগিতায় পরিচালিত হচ্ছে বলে জানালেন মন্দির
স্রাইন কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং শিব চতুর্দশী পূজা ও আদিনাথ মেলা পরিচালনা কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি ব্রজ গোপাল ঘোষ।
এ মেলায় দেশি-বিদেশি হাজার হাজার পূর্ণার্থী ও দর্শনার্থীরা আসেন। মৈনাক পর্বতের চূঁড়ায় অবস্থিত এই মন্দিরের মূল অংশ সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ২৮৮ ফুট উঁচুতে। যা দিয়েছে নৈসর্গিক সৌন্দর্য। মন্দিরের মূল অংশে যেতে সমতল থেকে প্রায় ৬৯টি সিঁড়ি ভেঙে উঠতে হয়। এই মেলায় বিশেষ করে ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমারসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে তীর্থ যাত্রী ও নানা ধর্মের দর্শনার্থীদের আগমনে ঘটে মহা মিলন মেলা।
তাফহীমুল আনাম/