অসুস্থ মায়ের চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতেই বাধ্য হয়ে চুরি করতে হয়েছে তাকে। চুরির অভিযোগে পুলিশের হাতে আটকও হন কিশোর নুর মোহাম্মদ নিশান (১৭)। অসুস্থ মায়ের চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে চুরি করতে হয়েছে শুনে মন গলে যায় অভিযোগকারীর। অভিযোগকারী থানার ওসিকে অভিযুক্ত নিশানকে ক্ষমা করে দেওয়ার অনুরোধ করেন। তবে ওসি কিশোরকে ছেড়ে দিতে রাজি হলেও প্রদান করেন একটি শর্ত। তার জন্য চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে হবে খোদ অভিযোগকারীকে। মুহূর্তেই রাজি হয়ে যান অভিযোগকারীও। অবশেষে মুক্তি ও চাকারি দুটিই মিলে নিশানের।
রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতের এ ঘটনা চট্টগ্রাম নগরের খুলশী থানায়।
জানা যায়, সপ্তাহ খানি আগে খুলশী গার্ডেন ভিউ হাউজিং সোসাইটি এলাকায় কামরুল হাসান ফরহাদের একটি প্রতিষ্ঠানে চুরির ঘটনা ঘটে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, এক কিশোরকে সিসিটিভির যন্ত্রাংশ চুরি করতে। এরপর রোববার দিবাগত রাত ১০টার দিকে কিশোর নিশানকে জমির হাউজিং থেকে আটক করে পুলিশ। এরপর তাকে থানায় ওসির কক্ষে আনা হয়।
আটকের পরপরই নিশান অকপটে স্বীকার করেন সেই চুরির ঘটনা। এ সময় কিশোর নিশান জানায়, সাত বছর আগে তার বাবা মারা যান। তাদের গ্রামের বাড়ি রাঙ্গামাটির রাজস্থলী উপজেলার ছাগলখাইয়া গ্রামে। মা এবং এক বড় বোনের সঙ্গে সে থাকেন খুলশী থানা এলাকার শতাব্দী কলোনীর এক কক্ষবিশিষ্ট একটি ভাড়া বাসায়। তার মা বিভিন্ন বাসাবাড়িতে কাজ করেন। এছাড়া সে যখন যে কাজ পায়, সেটি করেই তার মাকে সাহায্য করেন। তার মায়ের পেটে দুইটি টিউমার রয়েছে এবং তিনি আলসারসহ ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত। চিকিৎসার টাকা যোগাড় করতেই তারা হিমসিম খাচ্ছেন।
ঘটনার আগে টাকার জন্য মা তাকে বকাবকি করেন। কোথাও কাজ না পেয়ে সে সিসিটিভির যন্ত্রাংশ চুরি করতে আসেন।
এ বিষয়ে অভিযোগকারী কামরুল হাসান ফরহাদ বলেন, সপ্তাহখানেক আগে আমার প্রতিষ্ঠানে চুরির ঘটনা ঘটে। ওই কিশোরকে আটকের পর জানা যায় তার মায়ের চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে গিয়েই চুরি করেছেন তিনি। এরপর আমি ওসিকে তাকে ছেড়ে দিতে অনুরোধ করি। কিন্তু ওসি জানায় আমি যদি কিশোরের চাকরির ব্যবস্থা করে দেই তাহলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। তখন আমি তাকে আমার প্রতিষ্ঠান ক্লাউড ওয়ানে একটি চাকরি দেবো বলে জানাই। এরপর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।