মোস্তাক মোর্শেদ, ইবিঃ মোটে দুইদিন হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় জীবন, যা হতে পারতো দুইমাস কিংবা তারো অধিক। গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা, বারবার মেধাতালিকা দিয়েও শিক্ষার্থী না পাওয়া, পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয় পেলেও জোটেনা সাবজেক্ট ইত্যাদি বিষয়গুলো নিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) নবীন শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে একরাশ ক্ষোভ। যেখানে গুচ্ছের বাইরে থাকা বিশ্ববিদ্যালয় গুলো আরো প্রায় দুইমাস আগে থেকে তাদের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করতে পারলেও তা করতে পারেনি গুচ্ছের অধীনে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। যার রেশ শিক্ষার্থীদের বাইরেও ইতিমধ্যে পড়তে শুরু করেছে শিক্ষকদের মাঝেও। পরবর্তী বছর গুলোতে গুচ্ছে না থাকার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে জবি ও ইবি শিক্ষক সমিতি। তবে ইবি শিক্ষক সমিতির ক্ষেত্রে এবারই প্রথম নয় এরকম সিদ্ধান্ত এর আগের বছর জানালেও শর্তসাপেক্ষে গুচ্ছে অংশগ্রহণে সেইবার রাজি হলেও কোনো শর্তই পূরণ হয়নি বলে ১১ ফেব্রুয়ারীর কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় আবারো একই ঘোষণা দেয় তারা।
গুচ্ছ বহির্ভূত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বাদ দিলে সামনে আসে আরো কঠিন বাস্তবতা। বেশ কয়েকটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম সেমিস্টার শেষ বা শেষের পথে। একই সাথে এইচ.এস.সি শেষ করলেও উচ্চ শিক্ষায় এসে এরকম বৈষম্যমূলক আচরণ মেনে নিতে নারাজ নবীন কিংবা পুরাতন উভয় শিক্ষার্থীরা। সেক্ষেত্রে কি দায়ী থাকবে গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়ার অব্যবস্থাপনা।
ইবিতে এই বছর ভর্তি হওয়া ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, স্বাভাবিক ভাবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শুরু হওয়ার কথা ২০২২ সালে। বৈশ্বিক মহামারীর কারণে আমরা যতটুকু পিছিয়েছিলাম গুচ্ছ প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে তার সাথে আরো প্রায় ৬ মাস যুক্ত হয়েছে। আমরা খরচ ও সময় বাচাতে গুচ্ছ প্রক্রিয়াকে শুরুতে সমর্থন করলেও এটি মোটেও কোনো শিক্ষার্থী বান্ধব ভর্তি প্রক্রিয়া নয়। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশন হলে আমাদের সার্টিফিকেট উত্তোলন নিয়ে প্রায় প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়েই ঝামেলার সম্মুক্ষীণ হতে হয়েছে তা কখনোই আশা করিনি। যদিও আলাদা খরচ বহন করতে হয়নি তবে হয়রানি দূর্ভোগ কমেনি।
গুচ্ছ প্রক্রিয়ার পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা জানায়, এতো দীর্ঘ সময় নিয়ে ভর্তি করার ফলে শেষ সময়ে এসে আর শিক্ষার্থী পায়না ভালো অবস্থানে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। অনেক কম মার্ক পেয়েও এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া যাচ্ছে। যা কিনা আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মানকে নিম্নের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তুলনামূলক কম প্রায়োরিটি পাওয়া বিভাগগুলো খুবই নিম্নমানের শিক্ষার্থী পাচ্ছে যারা কিনা একক ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা হলে হয়ত চান্সই পেতোনা।
গুচ্ছে অংশ না করা নিয়ে ইবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার জানান, গুচ্ছের এই অব্যবস্থাপনা ও মান নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন তুলে আসছিলো শিক্ষার্থীরা। এই জিনিসগুলোকেই আমলে নিয়ে গুচ্ছের বাইরে গিয়ে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা নেয়ার পক্ষে মত দিয়েছে শিক্ষকরা। শীঘ্রই তা ভিসিকে জানানো হবে এবং একাডেমিক কমিটির মিটিং এ আলোচনা হবে।