The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
রবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪

ছেলেকে পড়াতে ভ্যান বিক্রি করলেন বাবা, নতুন কিনে দিলেন ডিসি

মেধাবী ছেলেকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে জীবিকার একমাত্র অবলম্বন ভ্যান বিক্রি করে দিয়েছিলেন বাবা হামিদুল ইসলাম। ভ্যান বিক্রি করা টাকায় ছেলেকে বই কিনে দেন তিনি। কিন্তু ছেলে মেহেদী হাসান বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) ভর্তির সুযোগ পেলেও অর্থের অভাবে থেমে যাচ্ছিল তার স্বপ্ন। তাই তার বাবা সহযোগিতার জন্য দ্বারস্থ হয়েছিলেন জেলা প্রশাসকের কাছে।

বিষয়টি জানার পর বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে তাৎক্ষনিক পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম ছেলেটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আর্থিক সাহায্যসহ তার বাবা হামিদুল ইসলামকে নতুন ভ্যান কিনে দিয়েছেন। ডিসির কাছ থেকে নতুন ভ্যান পেয়ে আনন্দে কেঁদে ফেলেন হামিদুল।

জেলা সদরের ধাক্কামারা ইউনিয়নের কমলাপুর এলাকার বাসিন্দা ভ্যানচালক হামিদুল ইসলাম। মাত্র ২ শতক জমির ওপর তাদের বসতঘর। সেখানে স্ত্রী, এক মেয়ে ও ছেলে মেহেদীকে নিয়ে চলছে তাদের অভাবের সংসার। একমাত্র ছেলে মেহেদী হাসান ছোট থেকেই মেধাবী। উচ্চ মাধ্যমিকে ভালো ফলাফলের পর তাকে কোচিং করাতে টাকার প্রয়োজন হয়। হামিদুল ছেলের কোচিং ও বই কেনার খরচ জোগাতে বিক্রি করে দেন নিজের ভ্যানটি। সেই টাকায় মেহেদী বই কেনা ও কোচিংয়ের খরচ দেন তিনি। পরে ভাড়ায় একটি ভ্যান থেকে চলত তার সংসার। তাই সংসার ও ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে চরম দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন তিনি।

শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, আমি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে পড়ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেলেও টাকার অভাবে ভর্তি আটকে যাচ্ছিল। তাই এক বন্ধুর পরামর্শে জেলা প্রশাসনের কাছে আর্থিক সহযোগিতা চেয়ে আবেদন করলে আমাকে ডিসি স্যার তাৎক্ষণিক ১০ হাজার টাকা দেন। আমি জেনেছি, আমার মতো অসংখ্য হতদরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য টাকা দিয়েছেন তিনি। স্যার অত্যন্ত মানবিক। আজ আবার বাবাকে নতুন ভ্যান কিনে দিয়েছেন। ডিসি স্যারের এমন উপকার আজীবন মনে রাখব।

জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, প্রতি বুধবার সাধারণ মানুষের জন্য গণশুনানির দিন নির্ধারিত করে রেখেছে জেলা প্রশাসন। তাই গণশুনানির দিনে ভ্যানচালক হামিদুলের মতো অনেকেই অনেক ধরণের সমস্যা নিয়ে আসেন। এদের মধ্যে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীরা আসেন। কেউ বিশ্ববিদ্যালয়, কেউ মেডিকেল কলেজে ভর্তিসহ বই কেনার আর্থিক সাহায্যের জন্য। আমার চেষ্টা থাকে এসব মেধাবী শিক্ষার্থীর উচ্চশিক্ষা এবং দুঃস্থদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.