ইব্রাহীম মাহমুদঃ বুধবার ২৫শে জানুয়ারী বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে ঐতিহ্যবাহী বাহাদুর শাহ পার্ক ও পার্কের ঐতিহ্য সংরক্ষণ সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাক্তার মোঃ আব্দুল মান্নান এর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উত্থাপন করেন সদস্য সচিব জনাব আখতারুজ্জামান খান।
তিনি বলেন – পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী বাহাদুর শাহ পার্ক ১৮৫৭ সালের তোর ব্রিটিশ বিরোধী প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদদের স্মৃতি বিজারিত বাহাদুর শাহ পার্কের অভ্যন্তরে রেস্তোরা চালু করে চুলার মাধ্যমে আগুন জ্বালিয়ে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করেছে। ১০ই নভেম্বর ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পরিশোধের নেতৃবৃন্দদের সাথে বৈঠক করে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বাহাদুর শাহ পার্কে চুলা জ্বলবে না, স্থাপিত রেস্তোরার কাজ বন্ধ করে পার্কের পরিত্যক্ত জায়গায় রেস্তোরাঁটি হস্তান্তর করার আশ্বাস দেন। কিন্তু ইতিমধ্যে ইজারাদার ঘোষিত মেয়রের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে পার্কের অভ্যন্তরে শহীদ বেদীর সামনে চুলা জ্বালিয়ে রান্না বান্না করে পরিবেশ ক্ষতি করছে যাক কোন ভাবি কাম্য নয় আবার নতুন করে শেষ নবাবের ছেলের স্মৃতিস্তমদের পাশে বাণিজ্যিক স্থাপন পুনরায় নির্মাণ করেন।
অত্র এলাকার জনসাধারণের শরীরচর্চা, হাঁটাহাঁটি ব্যায়াম,বাচ্চাদের খেলাধুলা, বসার স্থান সহ পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। অবিলম্বে নতুন নির্মানাধীন রেস্তোরা সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, পার্কের পার্শ্ববর্তী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজ সহ ১৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রী ১৪ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবকদের অবসর বিনোদন, অক্সিজেন গ্রহণ সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড ও শরীরচর্চার একমাত্র স্থান।
তিনি আরও জানান, গত ৩রা নভেম্বর ২০২২ ঢাকা জেলা প্রশাসক, ৫ ই নভেম্বর ২০২২ ঢাকা ৬ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য, ৮ই নভেম্বর ২০২২, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন মেয়র মহোদয় ও প্রধান সম্পদ কর্মকর্তার কাছে গণস্বাক্ষরের ফটোকপিসহ স্মারকলিপি পেশ করা হয়। মেয়র মহোদয়ের আশ্বাসে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ইঞ্জিনিয়ারসহ কর্মকর্তাগণ স্থানটি পরিদর্শন করার পর বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হবে। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনক হলে সত্য যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ জনগণের দাবিকে উপেক্ষা করে অযৌক্তিক, অবিবেচনা প্রসূত, ঐতিহ্য ধ্বংসকারী সিদ্ধান্তে অনড় থেকে ইজারা দেওয়ার মাধ্যমে রেস্তোরাঁ চালু করার সুযোগ দিয়েছেন। যা আমাদের জন্য হতাশাজনক, প্রজ্বলিত চুলার অগ্নিশিখায় পার্কের গাছের ক্রমান্বয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে, পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গত ২২শে নভেম্বর ও ০৬ই ডিসেম্বর ২০২২ মেয়র মহোদয়ের সাথে সাক্ষাতের সৃষ্টি করেও সাড়া পাওয়া যায় নেই।
এমন পরিস্থিতিতে আমরা এ ঐতিহ্যবাহী পার্কের সার্বিক পরিস্থিতি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে সবিনয়ে পার্কটির শহীদ স্থাপনাটি রক্ষা করার লক্ষ্যে মর্যাদাহানিকর এবং ইজারাদার বাতিলের জোর দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার, হাজী মোহাম্মদ মুজাহিদ, মেরুজ জামান খান মিরু,সদস্য শাহ আলম ভূঁইয়া কাজী খসরু,
সন্ধ্যাকালীন ভ্রমণকারী সংগ্রাম পরিষদের উপদেষ্টা এডভোকেট ইলিয়াস, এ কে রিয়াজউদ্দিন, কাজী জামিল, মকবুল হোসেন শরীফ ইসলাম, আতিকুল ইসলাম সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।