পবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ নিয়োগ বাণিজ্য, আর্থিক দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) শিক্ষক দম্পতির বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই শিক্ষক দম্পতি হলেন- কৃষি রসায়ন বিভাগের প্রফেসর মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান ও কৃষিতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নওরোজ জাহান লিপি।
তাদের ব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশনের গত বছরের ১৯ জানুয়ারির এক পত্রে আনীত অভিযোগের বিষয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তদন্ত সাপেক্ষে আইন/বিধি অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে কমিশনকে সকল দালিলিক প্রমাণসহ অবহিত করতে হবে মর্মে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন পত্র প্রেরণ করেছেন।
উক্ত অভিযোগের বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অফিস আদেশে কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. মোঃ হাবিবুর রহমানকে আহ্বায়ক করে উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. মোঃ শহীদুল ইসলাম ও পরিসংখ্যান বিভাগের প্রফেসর মোঃ ইফতেখারুল আলমকে সদস্য করে একটি ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ঘটনার কারণ উদঘাটন, দোষী চিহ্নিতকরণ, অপরাধের মাত্রা নির্ধারণ, ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে করনীয় নির্ধারণ, সুপারিশ ও সুস্পষ্ট মতামতসহ রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ কামরুল ইসলাম এর নিকট তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করতে অনুরোধ করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. মোঃ শহীদুল ইসলাম চিঠির পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, “গুরুত্বপূর্ণ এই তদন্ত দশ(১০) কার্যদিবসের মধ্যে শেষ করা দুরূহ ব্যাপার। প্রতিবেদন জমা দেওয়া সময় বৃদ্ধি চেয়ে আবেদন করেছি।”
জানা যায়, পবিপ্রবিতে মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক পদে চাকরিপ্রার্থী ছিলেন কুষ্টিয়ার দেবাশীষ মণ্ডল। ওই পদে চাকরি দিতে তার কাছে বিপুল অঙ্কের টাকা ঘুষ চাওয়া হয়েছিল। অথচ বাছাই পরীক্ষার ফলাফলে তিনি প্রথম হয়েছিলেন। দেবাশীষের কাছে অধ্যাপক মনিরুজ্জামান, নওরোজ জাহান লিপি ও শাহীন হোসেন ১০ লাখ টাকা ঘুষ চেয়েছিলেন। দেবাশীষ যেকোনো মূল্যে ওই চাকরি পেতে আগ্রহী ছিলেন। পরে সাক্ষাৎকার বোর্ড অনুষ্ঠানের আগ মুহুর্তে তার কাছে ১৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়। বাড়তি ৫ লাখ টাকা জোগাড় করতে তাকে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। দেবাশীষ ১৫ লাখ টাকা সংগ্রহ করতে না পারায় ওই চক্রটি রফিক উদ্দিন নামে আরেকজন নতুন প্রার্থীর কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা নিয়ে তাকে ওই পদে চাকরি দেন। ওই নিয়োগে দেবাশীষ মন্ডলের সিজিপিএ ছিল ৩.৮২। অথচ নিয়োগপ্রাপ্ত রফিক উদ্দিনের সিজিপিএ ৩.৬৪। এ কষ্ট সহ্য করতে না পেরে দেবাশীষ মন্ডল আত্মহত্যা করেন।