হাইস্কুলের গন্ডি পার করেন ১৬ বছর বয়সে। তার পরেই থেমে যায় তার পড়ালেখার বাসনা। কারণ তার পরিবার ছিলো অতি দরিদ্র। তাঁকে উচ্চশিক্ষা দেওয়ানোর মত আর্থিক সক্ষমতা পরিবারের ছিলনা। ইচ্ছা থাকলেও পড়াটা আর সম্ভব হয়ে ওঠেনি।
এদিকে পরিবার থেকে তাঁর বিয়ের ব্যবস্থা করা হয়। বিবাহিত জীবন, সংসার, সন্তান একে একে জীবনের বিভিন্ন স্তরে জড়িয়ে পড়তে থাকেন তিনি।
পরিস্থিতি তাঁকে ভুলিয়ে দেয় যে তাঁর আরও পড়ার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু সত্যিই কি ভুলতে পেরেছিলেন পড়া-লেখা করার সেই কথা? নাকি মনের গোপন কোণায় কোথাও আজীবন তাঁর আরও পড়াশোনার ইচ্ছাটা লুকিয়ে বাসা বেঁধেছিল নিজের মত করে। হয়তো তাই হবে!
আর তাইতো পরিবারের সব দায়িত্ব পালন করে যখন তাঁর সন্তানরাও নিজেদের পায়ে দাঁড়িয়ে গেলেন, সন্তানরা নিজের জীবনে এগোতে শুরু করলেন ঠিক তখনই সংসার জীবন থেকে ঝাড়া হাত পা জোয়ান ডোনোভ্যান আবিস্কার করলেন বয়স ৮০ পার করলেও তাঁর পড়াশোনার ইচ্ছাটা এখনও দিব্যি জীবিত রয়েছে।
ডোনোভ্যান পড়াশোনা শুরু করলেন আবারো। প্রথমে তিনি স্নাতক পরীক্ষা পাশ করলেন ৪ বছর পড়াশোনা করে। স্নাতক হওয়ার পর এবার তিনি স্থির করলেন থেমে যাবেন কেন? আরও পড়াশোনা করলেই তো হয়।
আমেরিকার ফ্লোরিডার বাসিন্দা ডোনোভ্যান দক্ষিণ নিউ হ্যাম্পশায়ার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার ডিগ্রি করার জন্য উঠেপড়ে দিন-রাত একাকার করে পড়তে লাগলেন। সৃজনশীল লেখা বা ক্রিয়েটিভ রাইটিং নিয়ে পড়াশোনা করলেন। তারপর এল সেই কাঙ্খিত দিন।
৮৯ বছর বয়সে স্বপ্ন পূরণ হলো ডোনোভ্যানের। একটি অনুষ্ঠানে মাস্টার ডিগ্রি প্রাপকদের হাতে তুলে দেওয়া হয় সার্টিফিকেট। সমাবর্তনের বিশেষ পোশাকে সেখানে হাজির বৃদ্ধা ডোনোভ্যান হাতে তুলে নিলেন তাঁর ১৬ বছর বয়সে হারিয়ে যাওয়া স্বপ্নকে।
সবাইকে তাক লাগিয়ে ৮৯ বছর বয়সে মাস্টার ডিগ্রির অধিকারী হলেন জোয়ান ডোনোভ্যান।