ইবি প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু করা হয়েছে। প্রথমদিনের ক্লাসে এসে উচ্ছসিত নবীন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। ২ নভেম্বর (শনিবার) সকাল ৯ টা থেকে বিভিন্ন বিভাগের আয়োজনে শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেয়া হয়। এদিন সকাল থেকেই শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ বিভাগের সামনে এসে জমায়েত হয়। গতকাল শুক্রবার থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় হল ও মেসে শিক্ষার্থীরা ওঠেন।
ক্লাস শুরুর প্রথম দিন সকাল থেকেই নতুনদের আগমনে মুখর ছিল ক্যাম্পাস। বিভাগগুলো ফুল দিয়ে নবীনদের বরণ করে নেয়। এ বছর শিক্ষার্থী ভর্তির লক্ষ্যে এখন পর্যন্ত চারটি মেধাতালিকা প্রকাশ করেছে প্রশাসন। চূড়ান্ত ভর্তির পর তিন ইউনিটে এখনো ১০৩টি আসন খালি রয়েছে। এর মধ্যে ‘এ’ ইউনিটে ২৫টি, ‘বি’ ইউনিটে ৪৫টি এবং ‘সি’ ইউনিটে ৩৩টি আসন খালি রয়েছে।
প্রথম ক্লাস করতে আসা কয়েকজন নবীন শিক্ষার্থীর সাথে কথা হয় রাইজিং ক্যাম্পাসের। শিক্ষার্থীদের চোখে মুখে ছিলো আনন্দের ছাপ। সেই সাথে ক্যাম্পাসে সম্পূর্ণ র্যাগিং করার সিদ্ধান্তকে স্বাগতম জানায় তারা।
আল ফিকহ বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, আজ প্রথম দিন ক্যাম্পাসে এসেই আমি বিভাগের শিক্ষক ও বড়ভাইদের কাছ থেকে অনেক সহযোগিতা পেয়েছি। বিভাগের প্রথম ক্লাস আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। আমি চাই ভবিষ্যতেও যেনো এই ধারা বজায় থাকে।
বায়োমেডিকেল বিভাগের এক নবীন শিক্ষার্থী বলেন, র্যাগিং মূলত সিনিয়রদের ভালোবাসা তবে তা যখন নেতিবাচক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয় তখন সেটা হয়ে যায় নিষিদ্ধ পণ্য। আমরা চাই সিনিয়র ভাইরা আমাদের পাশে থেকে ভালোবাসুক ভালোবাসার মাধ্যমে শাসন করুক। নিষিদ্ধ উপায়ে না।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, ‘ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে কেন্দ্রীয়ভাবে নবীনদের বরণ করে নেওয়া হবে। নবীনদের র্যাগিং করা হলে প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নেবে। কোনোভাবেই নবীনদের হয়রানি করা যাবে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় নবীন বরণে উপাচার্য প্রফেসর ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ নবাগত শিক্ষার্থীদের প্রাণঢালা অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় অনেক বড় জায়গা। এখানে প্রবেশ করলেই একজন শিক্ষার্থী হয়ে যায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ের, তার যোগাযোগ স্থাপিত হয় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। তিনি আরও বলেন, এখানে সকল সময়কে মূল্যবান কাজে ব্যয় করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় নষ্ট এবং ভালো হওয়ার জায়গা। তোমরা ভালো সঙ্গ গ্রহণ করবে। লালনের গানের লাইন উদ্ধৃত করে ভাইস চ্যান্সেলর বলেন, সময় গেলে সাধন হবে না। সিদ্ধি লাভ হবে না।
তিনি উপদেশ দেন, ক্লাস লেকচার তোমরা পুরোটাই নোট করবে। সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দিতে হবে পড়াশোনায়। কেউ ক্লাস ফাঁকি দিবে না। সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের জন্য শিক্ষার পাশাপাশি সাহিত্য-সংস্কৃতি-ক্রীড়ায় অংশগ্রহণের জন্য আমি তোমাদেরকে অনুপ্রাণিত করতে চাই। পড়া, পড়া এবং পড়া, এই দিয়ে শেষ করবে বিশ্ববিদ্যালয় জীবন। তোমাদের সামনে এখন অবারিত সুযোগের হাতছানি। সেই অবারিত সুযোগ ধরতে হলে পড়তে হবে।
উল্লেখ্য, গুচ্ছভুক্ত ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা গত ২৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয়। পরে ‘বি’ ইউনিটে ৪ মে ও ‘সি’ ইউনিটে ১১ মে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।